আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এফসিটিসির আলোকে ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন উন্নয়ন প্রয়োজন- বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তারা

তামাক ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার একটি বিরাট সমস্যা। উন্নত বিশ্বে তথা ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় তামাকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা, ধূমপানের তিকর দিক সর্বোপরি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ায় তামাক কোম্পানীগুলো নতুন বাজার সৃষ্টির জন্য তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে। আর তাই উন্নয়নশীল দেশগুলোই ভবিষ্যতে এ সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হবে সবচেয়ে বেশী। বর্তমানে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগের কারণে বিশ্বে ৪০ লাখেরও বেশী লোক মৃত্যুবরণ করে। যদি বর্তমান অবস্থা চলতে থাকে ২০৩০ সাল নাগাদ তামাকের কারণে বছরে ১ কোটি লোক মারা যাবে যার মধ্যে ৭০ ল আমাদের মত দরিদ্রতম দেশগুলোতে।

তামাকের বিপণন, চোরাচালান, অবাদ বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা অধিকাংশ দেশেই প্রায় একই রকম। আর এ সকল সমস্যাগুলো এককভাবে কোন দেশের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তাই বিশ্বব্যাপী তামাকের ভয়বহতা বিবেচনা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে তামাক নিয়ন্ত্রণের ল্েয কার্যকর পদপে গ্রহনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা । যার ফলশ্রুতিতে ২০০৩ সালে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি), যা বিশ্বে তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি প্রণীত হয়। এফসিটিসি তে বাংলাদেশ ১ম স্বাক্ষরকারী দেশ।

এর প্রেক্ষিতে ২০০৫ সালে বাংলাদেশে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ প্রণীত হয়। ৩১ মে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়ের তাৎপর্য তুলে ধরে ময়মনসিংহে জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন, সিরাক-বাংলাদেশ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, ব্র্যাক, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, বসন্ত রেণু সংস্থা, ওয়ার্ল্ড ভিশন, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, শৈবাল, উশিকার যৌথভাবে আয়োজিত বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও আলোচনা সভায় আইনটির বিভিন্ন দূর্বলতা চিহ্নিত করে এফসিটিসির আলোকে এর উন্নয়নের দাবি জানান বক্তারা। সকাল ৯.৩০ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী শহরের টাউন হল মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদণি করে। র‌্যালীর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসনের এনডিসি শরীফ মোহাম্মদ ফয়জুল আলম এবং জেলা সিনিয়র স্বাস্থ্য শিা কর্মকর্তা মোঃ বজলুর রহমান। এরপর এইচএসটিটিআই মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দিবসের প্রতিপাদ্য ও তাৎপর্য তুলে ধরেন বক্তারা।

বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের নেতা ও সিরাক-বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এস.এম.সৈকত এর সঞ্চালনায় এবং জেলা সিনিয়র স্বাস্থ্য শিা কর্মকর্তা মোঃ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক প্রশিণ ইনস্টিটিউট (এইচ এস টি টি আই) এর পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল খান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জুনিয়র স্বাস্থ্য শিা কর্মকর্তা সৈয়দ জাবেদ হোসেন, বসন্ত রেণু সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ইন্দ্রজিৎ কুমার নন্দী। মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য দেন ব্র্যাক এর প্রোগ্রাম অর্গানাইজার মমতাজ বেগম, ওয়ার্ল্ড ভিশন এর মনিকা মজুমদার, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক নবযোগ কান্তি ঘোষ, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক এস এইচ এম ওয়াহিদুল হক, তৃণমূল এর জাহাঙ্গির হোসেন, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ মসজিদের ইমাম মোঃ ইলিয়াছ ও উশিকার সভাপতি মোঃ আঃ কদ্দুছ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এইচএসটিটিআই এর পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল খান বলেন- তামাক সেবনের প্রত্য ও পরো কারনে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের এবং তাদের গর্ভের সন্তানের তি হয়। তিনি সকল শিা প্রতিষ্ঠানে ধূমপান ও তামাক সেবন নিষিদ্ধকরণ এবং ২০০৫ সালে প্রণীত আইনটিতে বিদ্যমান দূর্বলতাসমূহ এফসিটিসি-র আলোকে দূর করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা সিনিয়র স্বাস্থ্য শিা কর্মকর্তা মোঃ বজলুর রহমান বলেন, পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান বন্ধের মাধ্যমে অধূমপায়ীর অধিকার রায় সরকার বদ্ধপরিকর এবং এ বিষয়ে জেলা টাস্কফোর্স কমিটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক কার্য্যক্রম গ্রহন করেছে। তিনি তামাকের উপর উচ্চ হারে কর আরোপ করে দরিদ্র জনগণকে তামাকের ভয়াবহতা থেকে দূরে রাখার জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতি অনুরোধ জানান। আলোচনা সভার শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজনে তামাক বিরোধী সংগীত পরিবেশন করেন কন্ঠশিল্পী ইন্দ্রজিৎ কুমার নন্দী। অনুষ্ঠানে সিরাক-বাংলাদেশ, ব্র্যাক, ওয়ার্ল্ড ভিশন, বসন্ত রেণু সংস্থা, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক-কর্মী সহ জেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার জনগণ অংশগ্রহন করেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।