আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হোম দৃষ্টিকোণ দেশকে সঠিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে দেশকে সঠিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে



লেখক: মাহবুব-উল-আলম খান | রবি, ১৫ মে ২০১১, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮ জাতি আজ এক ক্রান্তিকালে; ধর্ম ব্যবসায়ীরা, ফতোয়াবাজরা মাঠে নেমেছে। পেছনে জামায়াত-বিএনপির ইঙ্গিত তো আছেই। বিডিআর হত্যা ষড়যন্ত্র দিয়ে এই অশুভ তত্পরতার শুরু। একের পর এক নাটকের রিহার্সেল হচ্ছে। বিরোধী দলের এখন এক নম্বর ও প্রধান এজেন্ডাই হচ্ছে সরকারকে ফেলে দেয়া, সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার বানচাল করা।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া সুষ্ঠু গতিতে এগোচ্ছে বলে মনে হয় না। এই কাজটি শুরু করার আগে সব ধরনের আটঘাট বেঁধেই নামা প্রয়োজন ছিল। যা হোক, কাজটি সুষ্ঠুভাবে যাতে সম্পন্ন হয় এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। বিরোধীদলীয় নেত্রী সপরিবারে ওমরাহ হজ্জ ও চিকিত্সা শেষে দেশে ফিরেছেন বেশ ক’দিন আগে। এসেই নতুন নতুন কর্মসূচি দিচ্ছেন।

এখন আবার আমেরিকা পাড়ি জমায়েছেন। সেখানেও নানাবিধ কর্মকাণ্ডের জন্য গেছেন মনে হচ্ছে। সরকার এক মুহূর্তও স্থির থাকতে পারবে না। সরকারের সব কর্মকাণ্ড কেমন অসমন্বিতভাবে চলছে। বিরোধী দলের এখন একমাত্র এজেন্ডা হলো কীভাবে কত তাড়াতাড়ি সরকারকে ফেলে দেয়া যায়।

তাদের নানাবিধ নেতা-নেত্রীর কথাবার্তায় তাই পরিষ্কার। দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য তাদের কোনো এজেন্ডা হাতে আছে কি না বোঝা যাচ্ছে না। ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত গ্রাম-গঞ্জে শত অত্যাচার, অবিচার, অন্যায়, অনিয়ম, হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের কোনো বিচার শুরু হতে দেখা যাচ্ছে না। অপরাধের বিচার না হলে, অপরাধীর শাস্তি না হলে আইনের শাসন কায়েম হবে না। গত ০৪/০৪/২০১১ইং মৌলানা ফজলুল হক আমিনী হরতাল পালন করলেন।

এতে বিএনপি-জামায়াতের সমর্থন ছিল। মির্জা ফখরুল বলেন, আমিনীর হরতালেই সরকার কাহিল। তারা সবাই অর্থাত্ বিএনপি-জামায়াত চারদল, মৌলবাদী, জঙ্গিরা সবাই মিলে হরতাল দিলে সরকারের অবস্থা কী হবে? আমিনীর বাহিনী হরতালে কেরাত, লাথি, লাঠি ও নানাবিধ অস্ত্রের যে প্রদর্শনী দেখালেন মনে হচ্ছে তারা বিশেষ একটি এজেন্ডা, কারো ইঙ্গিতে সারাদেশে অরাজকতা সৃষ্টির কুউদ্দেশে মাঠে নেমেছেন। প্রস্তাবিত নারীনীতিতে যেখানে কোরআন-সুন্নাহর বিরুদ্ধে কিছু নেই, তারপরও হরতাল ডাকা শয়তানের কাজ ছাড়া আর কিছু নয়। দেশের নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে এসব হঠকারিতা মোকাবিলা করা ফরজ কাজ।

বিএনপি, অন্যান্য দলের সব বোনের আকুল আহ্বান, মৌলবাদীদের এই দেশ ধ্বংসকারী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ান। ক্ষমতার জন্য আপনাদের নেতা-নেত্রীকে উপযুক্ত পরামর্শ দিন। আমাদের দুর্ভাগ্য রক্ত দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতার ৪০ বছর বয়সের ৩০ বছরই শাসন করেছে সামরিক শাসকরা। এরা পাকিস্তানি ধ্যান-ধারণা লালন-পালন করেছে। অনিয়ম, অন্যায়, হত্যা, লুণ্ঠন ও দুঃশাসনকে এরা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে।

স্বাধীনতার তিন বছরের মাথায় জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে যে অশুভ, পশ্চাদমুখী ধারা শুরু হয়েছে জাতিকে মূল সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনা কঠিন হয়ে পড়েছে। ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮-এর নির্বাচনে বিজয়ী মহাজোটের সামনে এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ। প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়ের কাজকে সুষ্ঠু গতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। অভিজ্ঞ ও দক্ষ রাজনীতিবিদদের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত করতে হবে। ৫ বছরের অর্ধেক সময় পেরিয়ে গেছে।

মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন একান্ত অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। রাজনীতিতে, প্রশাসনে গুণগত পরিবর্তন সময়ের দাবি। দক্ষ ও কমিটেড আমলা ছাড়া দিনবদলের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। খালেদা জিয়া বলেন, তিনি সব খবর রাখেন। আমলাদের প্ররোচিত করার চেষ্টা করছেন।

অতএব, সাধু সাবধান। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত কর্মস্থলে নিয়োজিত কর্মকর্তাগণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারলে কাজের সুষ্ঠু গতি ব্যাহত হবে, বাধাগ্রস্ত হবে। তাই দক্ষ ও কমিটেড আমলাদের উপযুক্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে সরকারপ্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সরকারকে এসব চিন্তা করতে হবে।

সরকারের মহতি প্রচেষ্টাগুলো যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, বিলম্বিত না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। কৃষিতে, শিক্ষায়, শিল্পে, তথ্যপ্রযুক্তিতে, নারী অধিকার উন্নয়নে, খাদ্যে, বিদ্যুতায়নে, যোগাযোগে যে গতিধারা, অন্যান্য ক্ষেত্রে তেমন গতিধারা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনতে হবে। নির্বাচনী অঙ্গীকার যথা সময়ে শেষ করা অপরিহার্য। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়িত করতে হবে।

মানুষের কল্যাণে গৃহীত কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। বিরোধী দল সরকার পতনের ডাক দিয়েছে। মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি করে, অরাজকতার মাধ্যমে দেশে অচলাবস্থা সৃষ্টি করতে চায়। এদেশের মানুষ ২০০১-২০০৬-এর অন্ধকার যুগে আর ফিরে যেতে চায় না। মানুষ চায় উন্নয়ন ও কল্যাণ।

সরকার দিনবদলের স্বপ্ন দেখেছে। কিন্তু দিনবদলের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কারিগর কোথায়? ২০০১-২০০৬-এর কারিগর দিয়ে মহাজোট সরকারের স্বপ্ন বাস্তবায়ন অবাস্তব কল্পনা। ঘাপটি মেরে থাকা কুশীলবরা ধীরস্থির মস্তিষ্কে সব স্যাবোটেজ করছে ও করবে। সরকারের নীতি-নির্ধারকদের নজরে কি এসব আছে? না থাকলে সাবধান হোন। নির্বাচনী অঙ্গীকার দ্রুত বাস্তবায়ন করে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।

জাতির জনকের অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করে এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে ফোটাতে হবে অনাবিল হাসি। লাইনচ্যুত এ জাতিকে ফিরিয়ে আনতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায়। আমাদের সব প্রয়াস মানুষের কল্যাণে, উন্নয়নে ও একটি আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।