আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন : প্রধান বিচারপতি ও আইনমন্ত্রীর বাহাস

নাজমুল ইসলাম মকবুল

প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন : প্রধান বিচারপতি ও আইনমন্ত্রীর বাহাস বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, বিচারকদের ক্ষমতা ও মামলা নিষ্পত্তিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের মধ্যে বাহাস হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য ও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। গতকাল সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের জন্য নতুন আবাসিক ভবনের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার জন্য বিচারকদের দায়ী করে আইনমন্ত্রী বলেন, বিচারকদের কারণেই আদালতগুলোতে মামলাজট তৈরি হচ্ছে। বিচারকরা নিয়মিত অফিস করেন না।

জেলা পর্যায়ে বিচারকরা বৃহস্পতিবার হলেই হাঁসফাঁস করেন ঢাকায় যাওয়ার জন্য। আবার রোববার ১২টার পরে এসে এজলাসে বসেন। তিনি বলেন, বিচার কাজে অংশ না নিয়েই উচ্চ আদালতের বিচারপতিরা আদালত পরিদর্শনের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়ান। আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বলেন, বিচারকদের হাত-পা বেঁধে বলা হয় সাঁতার কাটার জন্য। আইনমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, আগে আপনাদের ঘর সামলান।

আপনার দায়িত্ব আপনি পালন করুন। বিচারকরা তাদের দায়িত্ব ঠিকই পালন করবেন। এসি গাড়িতে চড়ে ও এসি রুমে অফিস করে অনেক কথাই বলা যায়। বাস্তব হচ্ছে তার সম্পূর্ণ বিপরীত। জজকোর্টে ৪ জন বিচারক একটি কক্ষে পালাক্রমে বিচার কাজ পরিচালনা করেন।

৪ জন বিচারক একটি টয়লেট ব্যবহার করেন। ৪ জনে মিলে একটি গাড়িতে করে অফিসে আসা যাওয়া করেন। এর মধ্যে থাকে না বিদ্যুত্। ত্রাহি অবস্থার মধ্যে বিচারকদের বিচার কাজ পরিচালনা করতে হয়। এগুলো তো দেখার কেউ নেই।

অনুষ্ঠানে বিচারপতিদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার কারণে বিচারপ্রার্থীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিচার বিভাগ এখন নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক হয়েছে। এ বিষয়ে আমার প্রশ্ন হলো এই বিভাজনের ফলে এবং এই স্বাধীনতার ফলে দেশের ৬৪ জেলায় বিচারকদের তদারকি কে করছে? সময় মতো এজলাসে বসছেন কিনা, কী পরিমাণ মামলা তারা নিষমত্তি করছেন—এ বিষয়ে সুপ্রিমকোর্ট কোনো পরিসংখ্যান নির্ণয় করছে কি? তিনি বলেন, সুপ্রিমকোর্ট থেকে বিচারপতিরা পরিদর্শনে যান, খানা-দানার ব্যবস্থা হয়, সুযোগ-সুবিধা থাকে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এ বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ নিরসনের জন্য আজ পর্যন্ত আপনারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে আমার জানা নেই। আইনমন্ত্রীর এ বক্তব্যের জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হচ্ছে হাত-পা বেঁধে সাঁতরানোর মতো।

বিচার বিভাগেরও হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটতে বলা হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, এরকম স্বাধীন আমরা হয়েছি। কাজেই মাননীয় আইনমন্ত্রী আপনার ঘর আগে সামাল দেন। আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করেন। বিচারকরা অবশ্যই তাদের দায়িত্ব পালন করছেন এবং করবেন।

তিনি আরও বলেন, বার বার আমি বলেছি, আমাদের জনবল কম। বিচারকদের সংখ্যা বাড়াতে হবে, অন্তত ডবল করতে হবে। এছাড়া কোনো উপায় নেই আর। তা না হলে কোনো দিন এই মামলাজট সমাধান করা সম্ভব হবে না। দায়িত্ব গ্রহণের ৮ মাসে সুপ্রিমকোর্টে মামলাজট ৩ লাখ ৫৫ হাজার থেকে ২ লাখ ৯১ হাজারে নামিয়ে এনেছেন কথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক বলেন, আমরা যে ভালো কাজটা করলাম, আইনমন্ত্রী তো একবারও এ বিষয়টি উল্লেখ করেননি।

বিচারিক অবকাঠামোর সঙ্কট ও অব্যবস্থাপনার জন্য বিচারক ও বিচারপ্রার্থীরা দুর্গতির মধ্যে রয়েছেন। সুত্র: আমার দেশ Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.