আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হারিয়ে যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা, কাল গেলেন কাজি নূরুজ্জামান, আর মাত্র কিছুদিন, কেউ আর থাকবে না

ভিন্য চোখে অন্য আলো

খুব আবেগ নিয়ে লিখাটা লিখছি। কারন আমার বাবাও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি চলে যাবেন আজ না হয় কাল। মানুষেকে যে ওই নিষ্ঠুর সত্যের মুখ মুখি হতেই হয় এক দিন না একদিন। আমার বাবা চলে গেলে যে শুন্যতা আমি পাবো তা অন্য কেউ অনুভব করবে না।

এখন তা ভাবতে গেলে শরিরে কাটা দেয়। ভিতর নড়েচরে ওঠে। ঢেউ উঠতে চায় বুকে। বাধ ভাঙ্গা কান্নার রোল আসতে চায় জোয়ারের মত। দেশ স্বাধীন হয়েছে চল্লিশ বছর।

স্বাধীন করে বাবা যেদিন বাড়ি ফিরে ছিলেন সেদিন তিনি তরুন। আর দেশ শিশু। শিশু এখনো শিশু থাকলেও বাবার শরিরে হাড়ে জোড় কমে গেছে। এখন উঠতে বসতে কষ্ট হয়। সেই তারুন্য আর নেই।

শুধু চোখে বুঝে সেই দিন গুলো দেখা আমাদের কাছে সেই দুরন্তপনার গল্প বলা ছাড়া কিছু করার নেই। দেশে একাধিক সরকার একাধিক বার মুক্তিযোদ্ধা তালিকা তৈরি করেছে। তাও কেউ সঠিক তালিকা দিতে পারেনি। এর মধ্য আছে হাজার হাজার অপ্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। একাধিক বার চেষ্টা করেও সঠিক তালিকা করেত ব্যর্থ সব সরকার, এমন কি নিশ্চিত করে বলতে পারি কেউ কোন দিন সঠিক তালিকা দিতে পারবে না।

কারন আমার জানা এবং দেখা মতে এমন কিছু ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আছেন যাদের বিরুদ্ধে একদিক বার রিপোর্ট হওয়া এবং তদন্ত হওয়ার পরও মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ সম্ভব হয়নি। এদের একাধিক ছেলে মেয়ের চাকরি হয়েছে এই তালিকার মাধ্যমে। আমি সামান্য একটা থানা এলাকায় এমন দেখেছি তো পুরো দেশের অবস্থা তাহলে ভয়াবহ। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বলছি -কোন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মেয়ের মুক্তিযোদ্ধার কোঠায় চাকরি হওয়া উচিত না এবং মনে করিনা। কারন এতে মেধাবীদের বঞ্চিত করা হয়।

একজন মুক্তিযোদ্ধা তার অবদানের জন্য দেশের সর্বময় সন্মান পেতে পারেন কিন্তু তার সন্তান পেতে পারেনা। আমি মনে করি একজন মুক্তি যোদ্ধাকে কোটি কোটি টাকা সন্মানি দিলেও কারো আপত্তি থাকার কথা নয় কিন্তু সন্তান কেন পাবে? খারাপ মানুষের সন্তান যেমন ভাল হতে পারে তেমনি ভাল মানুষের ঘরে তেমনি খারাপ মানুষ হতে পাআরে। কেউ কি আমাকে নিশ্চয়তা দিতে পারেন যে কোন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দুর্নিতিবাজ বা সন্ত্রান হয় নাই? জানি পারবেন না। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে মুত্তিযোদ্ধা বার্ধক্যের কারনে। তাদের তালিকায় বেঁচে থাকার সংখ্যা কমে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।

আর মাত্র কিছু দিন, তারপর আর খুজে পাওয়া যাবে না একজনও মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু তারা যে সপ্ন নিয়ে,আশা নিয়ে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে দিয়েছিলেন সেই সপ্ন কি পুরোন হয়েছে? যা চেয়ে ছিলেন তার কত টুকু পুরন হয়েছে? অনেকটাই ব্যর্থ। সুখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের সপ্ন ছিল তাদের,সপ্ন ছিল থাকবে না বৈসম্য, থাকবে না বিভেদ। কিন্তু আমি মনে করিনা তা পুরন হয়েছে। তারা পৃথিবী ছেরে চলে যাচ্ছেন বার্ধক্যের কারনে।

তাদের সপ্ন অপুর্নই রয়ে গেল। কিন্তু এখনো যে কয়জন বেঁচে আছেন তাদের সঠিক সন্মান করার এখনো সুজক আছে। যে দিন একজনও বেঁচে থাকবে না স্বাধীনা দিবসের পতাকা উড়ানর মত একজন মুক্তিযোদ্ধও সে দিন আমাদের আফসোস হবে। কিন্তু এখনই যদি আমরা তাদের সঠিক সন্মান দেই তবে আর তেমন আফসোস থাকবে না -যে তাদের জন্য এ জাতি কিছু দিতে পারেনি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.