আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবারো উত্তপ্ত কানসাট, গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে আন্দোলন



দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট। বহুল আলোচিত কানসাট বিদ্যুৎ আন্দোলনের নেতা গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে গড়ে উঠছে আরো একটি আন্দোলন। তবে বিদ্যুতের জন্য নয়, এবার তিনি আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন কানসাটকে ইউনিয়ন থেকে পৌরসভায় উন্নীতের প্রতিবাদে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কানসাটের মানুষ আন্দোলন থেকে সরবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন গোলাম রব্বানী। অন্যদিকে গোলাম রব্বানীর বিরোধীতা করে পৌরসভায় উন্নীত করার পক্ষে মাঠে তৎপর রয়েছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠন স্বেচ্ছাসেবলীগ নেতার নেতৃত্বাধীন ‘পৌরসভা বাস্তবায়ন কমিটি’।

এনিয়ে কানসাটের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তাপ। গত ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে গড়ে উঠে আন্দোলন। প্রায় সাড়ে তিনমাসের ওই আন্দোলনে প্রাণ হারান ১৭ আন্দোলনকারী। তবে শেষ পর্যন্ত অপ্রতিরোধ্য আন্দোলনকারীদের কাছে আত্মসমর্পন করে সরকার। তাদের সব দাবি মেনে নিয়ে চুক্তি করে।

গত ২৭ এপ্রিল আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে কানসাট বিশ্বনাথপুরের একটি আমবগানে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এই জনসভা থেকেই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন গোলাম রব্বানী। জনসভায় এক পর্যায়ে উপস্থিত কানসাটবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি আন্দোলন পক্ষে বিপক্ষে হাত তুলে মতামত জানাতে বলেন। এসময় উপস্থিত সকলেই হাত তুালে আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন জানান। গোলাম রব্বানী সেখানে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের বলেন, কানসাটের অধিকাংশ জনগনই পৌরসভার উন্নীত না করার পক্ষে।

তারাই স্বতস্ফূর্র্ত হয়ে আমাকে এ নিয়ে তৎপর হওয়ার জন্য অনুরোধ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার আমার এ নিয়ে প্রথম মিটিং করি। সেখানে প্রায় দেড় হাজার লোকের সমাগম ঘটে। সেখানে উপস্থিত সকলেই পৌরসভা করার বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। তাদের অনুরোধেই আমি জনসভা আহ্বান করেছি।

তিনি আরো বলেন, পৌরসভার উন্নীত করা হলে জনগণের সুবিধার চেয়ে অসুবিধায় বেশি হবে। উন্নয়নের চেয়ে অযথা বাড়তি পৌরকর দিতে হবে। নানা নিয়ম কানুনের বেড়াজালে পড়তে হবে। এতে দুর্ভোগ ও দুর্নীতি বাড়বে। তিনি বলেন, কানসাটের মানুষ তার সঙ্গে ছিল এবং এ আন্দোলনের তার সঙ্গে থাকবে।

তাই তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। এরপর গত ২ এপ্রিল কানসাট এলাকার ১৪ হাজার ২০৯ জনের স্বারসহ একটি আপত্তিপত্র দেন জেলা প্রশাসকের কাছে। এদিকে সংগ্রাম পরিষদের আন্দোলন-কর্মসূচির আঁচ করতে পেরে তড়িঘড়ি করে গড়ে তোলা হয়েছে ‘পৗরসভা বাস্তবায়ন কমিটি’। মুলত এ কমিটিতে রয়েছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। শিবগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি এমদাদুল হক ও আওয়ামীলীগ নেতা সুলতান আলীর নেতৃত্বাধীন এ কমিটির মোট সদস্য হচ্ছেন ২৭ জন।

এ কমিটিও এরইমধ্যে এলাকায় তৎপরতা শুরু করেছে পৌরসভায় উন্নীতকরণের পক্ষে। কমিটির সদস্যরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পৌরসভার পক্ষে জনমত গড়ে তুলছেন। গতকাল বুধবার কানসাটে পৌরসভায় উন্নীতের পক্ষে জনসভায় ডেকেছিল এ কমিটি। তবে আগেরদিন মঙ্গলবার বিকালে তা হঠাৎকরেই প্রত্যাহার করা হয়। সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি এড়াতেই এটা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন পৌরসভা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক এমদাদুল হক।

তিনি বলেছেন, গোলাম রব্বানী অযথা বিরোধীতা করছেন। তার এই বিরোধীতা কানসাটবাসীকে পৌরসভার অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করবে। কানসাটবাসী যাতে আরো উন্নত জীবন-যাপন করতে পারে তা নিশ্চিত করতেই তৎপরতা শুরু করেছি। তিনি স্বীকার করেন পৌরসভা বাস্তবায়ন কমিটিতে যারা রয়েছেন তাদের অধিকাংশই আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তবে পৌরসভা বাস্তবায়নের পক্ষে তারা রাজনৈতিক মতাদর্শের উর্দ্ধে থেকে জনগনের পক্ষে কাজ করতে চান।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ জেড এম শারজিল হাসান জানান, নির্বাচন কমিশনের কানসাট ইউনিয়ন পরিষদের তফশীল ঘোষণা না করার চিঠি আসার পর থেকে পরস্পর বিরোধী তৎপরতা শুরু হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত যাতে অপ্রীতিকর কিছু না ঘটে এজন্য উপজেলা প্রশাসনও তৎপর রয়েছে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।