আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাকা কন্যা ফারজিন কাদের চৌধুরীর প্রতিক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া অথবা চোরের মায়ের (পড়ুন মেয়ের) বড় গলা...!!!

আমি নির্বাক হয়ে গেলে তোমার পতন অনিবার্য !
সাকা কন্যা ফারজিন কাদের চৌধুরীর একটি প্রতিক্রিয়া ছাপা হয়েছে। গত মঙ্গলবারের (২৬ এপ্রিল) প্রথম আলো পত্রিকায়। তিনি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্বজিৎ চৌধুরীর একটি লেখার। লেখাটির শিরোনাম ছিল ‘দেবতুল্য দাদা ও পাহাড়চুড়োর বাড়িটি’ শিরোনামে। চৌধুরী পরিবারের চতুর্থ প্রজন্ম ফারজিন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় তার জন্ম হয়নি। দেখলে তিনি এভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতেন না। চতুর্থ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্বকারী ফারজিন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার আগে হয়তো বিবেকের দংশনে কিছুটা হলেও দংশিত হতেন। প্রতিক্রিয়ায় তার দাবি, তার দাদা ফজলুল কাদের চৌধুরীর ওপরে আসলে যুদ্ধপরাধের দায়ভার চাপানো হচ্ছে। ওই সময়ে তিনি (ফকাচৌ) মুসলিম লীগের সভাপতি থাকায় যুদ্ধাপরাধের দায়ট গিয়ে তার উপর পড়েছে।

কী সুন্দর কথা! একই সঙ্গে নাকি তার বাবার (সাকাচৌ) যুদ্ধাপরাধের দায়ভার চাপানো হচ্ছে। ফারজিন তার প্রতিক্রিয়ায় কয়েকটি উদাহরণও দিয়েছেন। অবশ্য ওই উদাহরণেও তার দাদা ফকা যে মুক্তিযুদ্ধের সময় নিরীহ বাঙালীকে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দিতেন তা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। ফারজিন যেহেতু একটি প্রতিক্রিয়া লিখে প্রথম আলো পত্রিকায় পাঠিয়েছেন। ধরে নেয়া যায় উনি বই পত্র পড়েন।

বলা যেতে পারে তার পাঠভ্যাস রয়েছে। তিনি কি একটি বারের জন্যও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংক্রান্ত কোনো বইয়ের দিকে হাত বাড়াননি। নাকি তার সেকালের সাী আত্মীয় স্বজন ও ওয়াকিবহাল মহল থেকে পাওয়া তথ্যের উপর ভর করেই আছেন। চৌধুরী পরিবারের চুতর্থ প্রজন্ম এতটা বোকা, তা অবশ্য ভাবা যায় না। ফারজিনকে বলছি, ৭১-এ আপনার দাদা ও বাবা যত কুকর্ম করেছে তা প্রকৃতপে বলে বা লিখে শেষ করা যাবে না।

এটা প্রতিটি সচেতন মানুষই জানেন। যুদ্ধের পরই আপনার বাবা ও দাদার বিরুদ্ধে রাউজান থানায় ছয়টি যুদ্ধাপরাধের মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ফকা-সাকার একটি ঘটনার কথা না উল্লেখ করলেই নয়। ‘১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাসদস্যদের নিয়ে সাকা চৌধুরী রাউজানের কুণ্ডেশ্বরী যান। পাকসেনারা কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, কুণ্ডেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্য নূতন চন্দ্র সিংহের সঙ্গে কথা বলে প্রথমে চলে আসেন।

তখন সাকা চৌধুরী পাকসেনাদের বলেন যে, তার বাবার আদেশ আছে মালাউন নূতন চন্দ্র সিংহ ও তার ছেলেমেয়েদের মেরে ফেলার জন্য। এরপর নূতন চন্দ্র সিংহকে কুণ্ডেশ্বরী মন্দিরের সামনে প্রার্থনারত অবস্থা থেকে সাকা চৌধুরী টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসেন। প্রথমে ট্যাংকের গোলার আঘাতে বিদ্যামন্দির গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর পাকবাহিনীর মেজর নূতন চন্দ্র সিংহকে গুলি করেন। নূতন চন্দ্র সিংহ মাটিতে পড়ে গেলে সাকা চৌধুরী তার রিভলবার দিয়ে আরো তিনটি গুলি করেন নূতন চন্দ্র সিংহকে।

’ সূত্র ঃ একাত্তরের ঘাতক ও দালালেরা কে কোথায়। এমন অসংখ্য ইতিহাসে ফকা-সাকাদের যুদ্ধাপরাধের কথা লেখা রয়েছে। তাদের ‘গুডস হিলের’ বাড়িটি টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করার কথা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ রয়েছে। অথচ ফারজিন এসব ইহিহাস, মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্রের দিকে নজর না দিয়ে তার কথিত ‘নিকটাত্মীয় ও ওয়াকিবহাল মহলের’ কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শুনছেন। যারা ফকা-সাকাকে ধোয়া তুলশীপাতা হিসেবে উপস্থাপন করেন।

ফারজিন, আপনি চৌধুরী পরিবারের চতুর্থ প্রজনম্বের প্রতিনিধি। দাদা-বাবার যুদ্ধাপরাধের দায়ভার আপনাদের উপর পরুক তা আমরা চাই না। মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনার জন্ম হয়নি। আপনার উপর দায়ভার পড়তে পারে না, যদি না আপনি আপনার দাদা-বাবার যুদ্ধাপরাধের বিষয়গুলি স্বীকার না করেন, যদি না এখনো প্রবাহিত রক্তের কারণে এই দেশকে আপনাদের ভালো না লাগে, তাহলে এখনই সময় কড়জোরে ক্ষমা প্রার্থনা করুন এই জাতির কাছে। দাদা নেই, বাবার অন্তত বিচারটা হোক।

আশাকরি জাতি আপনাদের চতুর্থ প্রজন্মের উপর কোনো ক্ষোভ রাখবে না । আমি প্রতিশ্র“তি দিতে পারি তরুণ প্রজন্ম আপনাদের ক্ষমা করে দেবে। বি. দ্র. লেখায় ব্যবহৃত কার্টুনগুলো শিশির স্যারের আঁকা এবং এগুলো প্রথম আলা পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। স্যার বা প্রথম আলো কর্তৃপরে অনুমতি ছাড়া ব্লগে প্রকাশ করের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত এই লেখাটি বুধবার রাত থেকে শতাধিকবার চেষ্টা করেও প্রথম পাতায় নিতে পারছিলাম না। এক পর্যায়ে আমার নিজস্ব পাতায় আসে।

পুনরায় চেষ্টা কের প্রথম পাতায় দিলাম। পুনরাবৃত্তির জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।