আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুধু লিপষ্টিক, নেইল পলিস আর শাড়ি পরিধান করলে কেবল মাত্র একজন নারীই হওয়া যায়; কিন্তু হতে হবে যে মানুষ !!!

আমি আঁধারে তামাসায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূন্যতা থেকে শূন্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে। “আমার নড়ক চেনা হয়নি সেখানে তবে আমার স্বর্গভূমিতে বসবাস” তবে কি মেয়েরা মানুষ নয় ? হ্যাঁ এর জবাবে সবাই বলবেন কেন ! মেয়েরাওত মানুষ। কিন্তু এমন দর্শনের সাথে আমার দ্বিমত রয়েছে তাই বোলে আমার কোন দুঃখ বোধ নেই, কারন এর জন্য দায়ী মেয়েরা নিজেরাই। হয়ত এই কথার কারনে মেয়েরা আমার চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে ছাড়বেন। আজকে খুব ঘটা করে আমরা নারী দিবস পালন করছি।

কেন নিজেদের মানুষ হিসেবে ভাবতে কি খুব আত্মসন্মানে লাগে বোধ করি ? পৃথিবীতে মানুষ দিবস পালন করা হয় এমন ধরনের উদাহরন পাওয়া যায় না কিন্তু পালিত হয় নারী দিবস। তাহলে তারা অবশ্যই ভিন্ন প্রজাতির কিছু একটা হবে হয়ত; আর নাহলে এমন দিবস পালনের কোন যৌক্তিকতা আছে বোলে আমি মনে করিনা, কারন সবাই মানুষ। পালন করলে করতে হবে রয়েল বেঙ্গল টাইগার দিবস অথবা চিত্রা হরিন দিবস কেননা এগুলো ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে অথবা খুব বেশী দিবস পালনের ইচ্ছা থাকলে পালন করা যেতে পারে ডাইনোসর দিবস কারন এই প্রাণীটি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। নারীর কেন কিভাবে সৃষ্টি আমি সেই আদম-হাওয়া উপাখ্যানের গল্প এখানে বলব না। কিন্তু নারীরা খুব সমঅধিকার চেয়ে আন্দোলন করে অথচ যখন দেখি তাদের জন্য আলাদা ভাবে বাসে, ট্রেনে সিট বরাদ্দ করা হয় প্রতিবন্ধীদের সাথে যুক্ত করে অথবা আলাদা দোতালা বাস দেয়া হয়; আবার বাসে সেই নির্দিষ্ট কমলা রং করা আসনে একজন পুরুষকে বসতে দেখলে প্রতিবাদ করা হয়; আমি আপনাদের কাছে জানতে চাই আপনারা নারীরা কি তাহলে প্রতিবন্ধীদের সমগোত্রীয় কিনা ? নারী এই শব্দটি দিয়ে কি একটি ভিন্ন প্রজাতির কিছু বোঝান হয় কিনা সেটা আমার বুঝতে খুব কষ্ট হয়।

কিংবা মানুষ বলতে আসলে আমরা কি বুঝি; পুরুষ ও নারী উভয়কেই নাকি শুধু পুরুষ ? আর পুরুষ ভিন্ন বাকীদের বলতে হবে মেয়ে মানুষ সেই ব্যাপারেও আমার খুব দ্বিধাবোধ রয়েছে। নারী শব্দটি ব্যাবহার করে আমরা খুব সম্ভবত তাদের দুর্বল করে দিয়ে দাবীয়ে রাখতে চেষ্টা করি অথবা তারা নিজেরাই নারী হয়ে থাকতে বেশী সাচ্ছন্দ বোধ করেন; কারন আমরা পুরুষ, আমাদের একটা শিশ্ন আছে; আর সেটার জোড় থাকুক অথবা নাই থাকুক আমাদের নিজেদের আধিপত্ত বজায় রাখতে হবে অথবা নারীরা সেই আধিপত্তের অভয় আশ্রমে থেকে সমঅধিকারের নামে আসলে নিরাপত্তা খুঁজে পায়। আবার আমরা পুরুষরাই এই নারীদের ঠেলে দিচ্ছি যৌন পেশায় জীবিকা নির্ধারণ করতে আর সেই জীবিকা নির্বাহের স্থানটাকেই বলছি আবার নিষিদ্ধ পল্লী। যেখানে যেয়ে আমাদের কামনা বাসনার একটা পরিতৃপ্তি পাওয়া যায়। বাহরে চমৎকার ঠিক পরক্ষনেই আবার ঘৃণায় নাক ছিটকাই যখন প্রশ্ন ওঠে এইসব অবহেলিত মানুষের অধিকারের ব্যাপারে; বলি এরাত সমাজের ঘৃণিত কাজ করে ওদের আবার ঘরে ঠাই দেব কেন !!! কিন্তু যখন মনের অসৎ বাসনা মিটাতে হয় তখন কোথায় থাকে আমাদের ভদ্র লোকেদের মুখোশ খানা।

আবার অনেক মেয়েদের দেখেছি তারা নিজেরাও ঘৃণায় যেন দম বন্ধ হয়ে বমি করে দেয়; আমি তাদের বলি আরে ওরা অনেক ভাল আছে তোমাদের মতন ন্যাকাদের কাছ থেকে যারা ভদ্রতার আড়ালে নিজের অসৎ কর্ম চরিতার্থ করতে যাও একাকী নির্জনে নিরালায়। আর এইসবের পেছনে দায়ী আমরা পুরুষ যারা নারীকে পন্য হিসেবে গড়ে তুলেছি। নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় নিজেদের বাহাদুরি টিকিয়ে রাখতে নারীদের দিয়েছি পায়ের নীচে ঠাই; যেখানেই নাকি তাদের বেহেস্ত। অথচ তাদের স্থান স্বয়ং আল্লাহ দিয়েছেন সবার উপরে স্থান। আবার আমি দেখেছি পৃথিবীর সকল ধর্মে নারীকে কখনো দেবী আবার কোথাও দেয়া হয়েছে অনেক উঁচুতে স্থান তবে আমরা কেন অথবা নারীরা কেন নিজেদের অধিকার নিয়ে এত ব্যাস্ত।

আমাদের কোন অধিকার নাই তাদের অধিকার কেড়ে নেয়ার। আমি সমাজের বেশীর ভাগ ঘরের কথাই জানি যেখানে স্ত্রীদেরকে জোড় পূর্বক চাপিয়ে দেয়া হয় স্বামীদের ইচ্ছা অনিচ্ছাগুলোকে অথচ ভেবে দেখা হয় না একজন স্ত্রী কি চায়। কেন ভাই স্ত্রীর কথাকে গুরুত্ত দিলেকি আমরা স্ত্রৈণ হয়ে যাব বলে ? নাহয় তাই হলাম সেখানেও কিন্তু সুখ আছে এক ধরনের। যখন আমি অবিবাহিত ছিলাম আমার খুব আড্ডা দেয়ার নেশা ছিল আর যার কারনে প্রায় প্রতিদিন অনেক রাত করে বাসায় ফিরতে হত। কিন্তু আজো সেইসব স্মৃতি মনে হলে চোখে পানি চলে আসে, আমার মা প্রচণ্ড ক্ষুধা নিয়েও আমার জন্য অপেক্ষায় বারান্দায় দাড়িয়ে থাকতেন কখন আমি আসব আর কখন আমাকে ভাত খাওয়ানোর পর মা ভাত খাবেন।

মাঝে মাঝে বকা ঝকা করতেন কিন্তু পরে আবার ডেকে ঠিকই ভাত খাওয়াতেন। কখনো ধোঁয়া কাপড় অথবা খাবার নিয়ে আমাকে ভাবতে হয়নি। এখন আমি বিবাহিত পুরুষ কিন্তু আজো ঠিক একই ভাবে আমাকে আমার খাবার অথবা ধোঁয়া কাপড় নিয়ে ভাবতে হয়না। অথবা আজ যখন দেখি আমার বাড়ি ফেরার পথের দিকে বারান্দায় দাড়িয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে আমার স্ত্রী প্রচণ্ড ক্ষুধা নিয়ে তখন সত্যি আমি ভাবতে বাধ্য হই যে আমরা পুরুষরা একজন নারী ছাড়া যে কতটা অসহায় জীবনের চলার পথে! খুব হতাশ হই যখন দেখি পৃথিবীতে খুব ঘটা করে চলে সুন্দরী প্রতিযোগিতা কিংবা পুরুষের জাঙ্গিয়ার, লুঙ্গির অথবা পায়ের মোজার বিজ্ঞাপনগুলোতে উপস্থাপন করান হয় মেয়েদের নগ্নতাকে প্রশ্রয় দিয়ে। আমি বলছিনা যে নারীকে হতে হবে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত কিংবা মাদার তেরেসা অথবা নারীকে পৌছাতে হবে মঙ্গল গ্রহে অথবা এভারেস্ট শৃঙ্গের চূড়ায়।

পৃথিবীতে বেশীর ভাগ পুরুষ আছেন যারা শুধু মাত্র জীবন যাপন করে যাচ্ছেন বেঁচে থাকার তাগিদে অথবা অনেকে আছেন যারা কোন প্রকারই কোন কাজের নন কিন্তু তারা কিন্তু মানুষ হিসেবে স্বীকৃত তাদের জন্য ভিন্ন ভাবে কোন দিবস পালিত হয় না। তবে কেন পালিত হবে নারী দিবস। আমি বলছিনা জাগো হে ভগিনী জাগো; কারন নারীরা জেগেই আছে শুধু প্রয়োজন এই নারী শব্দটি থেকে বের হয়ে তাদের মানুষ হিসেবে স্বীকৃত হতে হবে কারন মেয়েরাও যে মানুষ। -------------------------------------------------------------------- আমি মানুষ। ।

-------------------------------------------------------------------- বেঁচে থাকার এক নিদারুন করুনা জেগেছে আমার ভেতর; আমি একজন সম্পুরনা, আমি একজন নারী। আমার চোখের ভাষায় পৃথিবী মায়াময়, আমি শূন্যতাকে আঁধারে হারাতে চাই বোলে; আমি শূন্য হতেছি আমারই আঁধারে। যেখানে প্রণয়ের মায়াতিথি, যেখানে প্রোথিত আমার হিয়ার রূপরেখা, সেখানে আমি মানুষ ভিন্ন দেবী কিংবা কায়া। প্রণয় সুতায় বাঁধতে আসিনি, এসেছি ভালোবাসতে। উদোম করে দেখলে আমায়, আমি শুধুই মোহ; পথের পথে হাটতে গেলে পাবে আলোর দিশা।

বেলাভূমির সেই সাঁঝের মায়ার কথা আজো মনে পরে, মনে পরে সেই উস্রিংখল যুবকের কথা, আমি তবে হেনেছি কি অসাধারন হায়া ! আমাকে আমার মতন থাকতে দাও আমি আজ নারী নয় তবে মানুষ হয়েই বাঁচতে চাই। বিমূর্ত কোন স্বত্বা নয়, নয় কোন জীবন বোধের খোঁজে, আমার আমি মানুষ রূপেই পেতে চাই মাটির গন্ধের মতন প্রান ভরে। এসেছি আমি প্রানের মায়ায় তৃপ্ত হতে নয়, তোমাদের শূন্যতা আমাকে বড় বেশী কাঁদায়। হলুদ, নীল, গোলাপি, বেগুনী শাড়িতে কি অপরূপ সেজেছি দেখো, তোমাকে দেখাব বোলে হে প্রিয়তম; এভাবে প্রণয় সুতায় বেধনা আমায়। আমি ভালোবাসা পেতে চাই স্নিগ্ধ সজীবতায়।

অরক্ষিতের হিংস্র বনে আমাকে আর রেখনা, অযাচিতের সঙ্গোপনে; আমাকে ওরা ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবে, হায়নার ছোবল হেনে। আমি তবু মানুষ জেনো, জীবনের সংঘারামে। আমি হিমালয় হতে ঝিনুক কুড়ানো কোন দেবী নই জেনো, আমি কোন পতঙ্গ কিংবা হাওয়া নই যে, আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে সমুদ্রের গহীনের মত। ভোর হতে আর কত বাকি হে আমার প্রণয় তিথি ? একবার আমাকে কাণ্ডাড়ী করেছিলে, তারপর বারবার আমার নগ্নতায় ভীষণ- কি মিদারুন হেসেছ; আমি তবু আশা হত হতে পারিনি, ঝরে পরা পথের শিউলির মত। আমার দোটানার ঘরে যখন শূন্য হতেছি, তোমার আদরে, একটু নাহয় চুমুই দিলে, বিষের যন্ত্রণা আমাকে জেনো একটুকু কাতর করেনি, আমিত ভালোবাসতেই এসেছি; তোমার শূন্য পৃথিবী মহান আলোকিত করে।

আবার অবরূপ ধ্বংসলীলা হতে পারি তোমার বিহনে, তোমার যাতনে, কারনে বেদনার রূপ হয়ে; বিধাতার নীরব দহন জ্বালায়, ভস্মীভূত আমি এক নারী ঠিক নই, আমি মানুষ। ছবি যেন মনের কথাই বলে তাই শুধু শুধু কেন কথা বাড়িয়ে বলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলা কালীন সময়ের একটা ঘটনা বলেই শেষ করছি। তখন সমস্ত পোল্যান্ড জুড়ে চলছিলো জার্মানিদের ধ্বংসলীলা আর ইহুদী পেলেই চলছিলো নীধন অথবা তাদের ধরে এনে পাশবিক নির্যাতন চালান হত বন্দী শিবিরগুলোতে। এমনই এক পোল্যান্ডে বসবাসরত সে সময়ের একজন নারী নাম সোফি জার্মান নাগরিক ধর্মে ইহুদী ছিলেন। তার স্বামীকে প্রান দিতে হয়েছিলো জার্মানদের হাতে।

তার স্বামীর মৃত্যুর পর একটি মেয়ে ও একটি ছেলেকে নিয়ে সোফিকে পোল্যান্ড ত্যাগ করে জার্মান আসার কথা ভাবতে হচ্ছিল। কিন্তু যখন তিনি ট্রেনে উঠার জন্য গেলেন তার দুই সন্তানকে নিয়ে নজরে পরে গেলেন এক জার্মান সেনাদলের এক সেনাপ্রধানের চোখে। সেই সেনাপ্রধান সোফির অসাধারন রূপে মুগ্ধ হলেন। আসলে ঠিক মুগ্ধ নয় এটাকে বলাযেতে পারে কামুক চাহিদা পুরনের একটা তাগিদ। সেই সেনা অফিসার সোফির কাছে তার পরিচয় জানতে চাইলে সোফি বলে যে সে জার্মান নাগরিক, পোল্যান্ডে এসেছিলেন কাজের জন্য এবং সে খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারী।

তাতে করে অফিসারের মনে কিছুটা সদয় ভাবের উদয় হলেও তার কামের বাসনা বিলুপ্ত হলনা। তাই সে বলল তোমাকে দুটি উপায় দিচ্ছি যাতে করে তুমি মুক্তি পেতে পার এবং জার্মান যেতে পার এই ট্রেনে করে। তার একটি হল হয় তোমাকে তোমার দুই সন্তানের মধ্যে একটিকে দিয়ে দিতে হবে বন্দী শিবিরের জন্য অথবা তোমাকে তোমার দুই সন্তান এখানে রেখে আমার সাথে যেতে হবে আমরা তোমার দুই সন্তানকে জার্মান পৌঁছে দিব। কিন্তু মায়ের মমতা এই শর্ত কিছুতেই মেনে নিতে পারলনা। সে শুধু আর্তনাদ আর চিৎকার করে উঠল ।

সারা আকাস বাতাস কেঁদে উঠল সোফির কান্নার সাথে এক হয়ে। কাঁদছে তার দুটি সন্তান। শেষ পর্যায়ে সন্তানের মায়ায় সোফিকে চলে যেতে হল অভুক্ত হায়নার সাথে রাতের অভিসারের খাদ্য হতে তার দুই সন্তানের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে যে অন্তত তার সন্তান দুটি হয়ত বেঁচে যাবে। অঝরে কাঁদছিল বাচ্চা দুটো। শেষ পর্যন্ত বাচ্চা দুটোর কি পরিনতি হয়েছিলো সেটা সোফির জানা হলনা, শুধু তাকে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেল অভুক্ত হায়নার দল।

এই হল নারী রূপ ! এই হল মনুষ্য রূপ !! আর এই হল মানুষ !!!  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.