আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাৎসীদের রমনী ও সহধর্মীনিরা


ইতিহাসে মানব সভ্যতার বিকাশে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের ভুমিকা কম নয় । অথচ অজ্ঞাত কারণে মানব সভ্যতার উন্নয়নে নারীদের বিশেষ অবদানের কথা অনেক সময় লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে যায়। যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারীরা স্মরণীয় ঘটনায় সরাসরি জড়িত না হলেও ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে কালের আবর্তে ঠাঁই নেয়। আমরা অনেকেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা ইতিহাসের পাতা থেকে জেনেছি বা পত্র-পত্রিকায় পড়েছি, সে সময়ের ঘটনাবলী নিয়ে তৈরী চলচ্চিত্র দেখেছি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা বলতে গেলে উল্লেখযোগ্য যে বিষয়টি চলে আসে সেটি হচ্ছে জার্মানির এডলফ হিটলারের কথা অর্থাৎ হিটলারের নাৎসীবাহিনীর কথা।

আমরা হিটলার, গোয়েবেলস ন্যায় উর্ধতন নাৎসী নেতাদের সমন্ধে বিস্তারিত অবগত হলেও তাদের সহধর্মীনিদের বিষয়ে কমই জানি। অথচ তৃতীয় রাইখের সেই সময় নাৎসীদের প্রেমিকা ও সহধর্মিনীদের যে বিশেষ ভুমিকা ছিল তা কিন্তু পর্দার আড়ালে রয়ে গেছে। আজ তাহলে চলুন পর্দার আড়ালে থাকা সে সকল রমনীদের সমন্ধে সংক্ষেপে কিছু জানি। ইভা ব্রাউনঃ এভা ব্রাউন ছিলেন এক অসামান্য নারী যিনি নাৎসীদের মাঝে নিজেকে বিশ্বস্ত প্রমান করতে সমর্থ হয়েছিলেন। ইতিহাসবিদগণ তাকে কতকটা সাধারণ ও তুচ্ছ নারী হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করলেও একজন নিরভিমান ও বিনয়ী নারীর মর্যদায় তাকে আসীন করেছে।

এভা তার জীবনের ১২টি বছর হিটলারের সান্নিধ্যে থেকে তাকে আমরণ ভালোবেসে গিয়েছেন। হিটলারের গাড়ি চালকের ভাষ্যমতে এভা ছিলেন তখনকার জার্মানির মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে অসুখী নারী। তিনি সবসময় সবার কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখতেন এবং বেশিরভাগ সময় বাড়ির পেছনের সিড়ি ব্যবহার করতেন। হিটলার প্রেমিকা হিসাবে এভাকে স্বীকার করে নিলেও বিবাহ বন্ধনে তার অসম্মতি ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, যে আদর্শ ও ব্রত নিয়ে তিনি নাৎসীবহিনীর প্রধান ও ফুয়ারের পদে আছেন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে তার সেই আদর্শের বিচ্যুতি ঘটবে।

অবশেষে হিটলার তার সকল ধ্যান ধারণা বিসর্জন দিয়ে ১৯৪৫ সালে ৫৬ বছর বয়সে ৩৩ বছর বয়স্কা ইভা ব্রাউনের সাথে পরিনয়সূত্রে আবদ্ধ হন এবং বিবাহর মাত্র দুইদিন পর হিটলার এবং ইভা ব্রাউন উভয়েই আত্মহত্যা (অন্তর্ধান) করেন। মাগডা গোয়েবেলসঃ তৃতীয় রাইখের ফাস্ট লেডি খেতাবে পরিচিত ছিলেন নাৎসীবাহিনীর প্রধান স্পীকার জোসেফ গোয়েবেলস এর সহধর্মিনী এই মাগডা গোয়েবেলস। মাগডা তার প্রথম বিবাহ বিচ্ছেদের পর ১৯৩০ সালে নাৎসীবাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তা জোসেফ গোয়েবেলস এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং এই ঘরে তাদের ৬টি সন্তান জন্মগ্রহণ করে। নাৎসী আরিয়ান পরিবারে যে সকল আদর্শ ও গুনাবলী থাকা অবশ্যক তার সবই ছিল এই মাগডা-গোয়েবেলস পরিবারে। আর সেই বিবেচনায় হিটলার "তৃতীয় রাইখের শ্রেষ্ঠা মা " খেতাবে ভুষিত করেছিলেন মাগডা গোয়েবেলসকে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসীবাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত জেনে মাগডা তার ছোট ছোট ৬ সন্তান নিয়ে আত্মহত্যার সির্ধান্ত নেন। নিস্পাপ ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে কেন আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন এটা জানতে চাইলে বলেন, ঘৃনা ও লজ্জা নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যু শ্রেয়। যুদ্ধ শেষে এই জার্মানির মাটিতে আমাদের সন্তানদের কোনো ঠাঁই থাকবে না। সন্তানদের অস্পস্ট ও অন্ধকারচ্ছন্ন ভবিষৎএর কথা ভেবেই মাগডা গোয়েবেলস ১৯৪৫ সালের ১ মে একে একে ৬ কচি সন্তাদের মুখে মরণ ঘুমের ঔষধ তুলে দেন এবং দুদিন সন্তানদের মৃতদেহের সামনে বসে অঝোরে কেঁদে স্বামীসহ আত্মহত্যা করেন। লেনি রেইফেনস্টালঃ জার্মানির নাৎসীদের আমলে এই নারী ছিলেন একজন উদীয়মান চিত্রপরিচালিকা ও অভিনেত্রী।

তার সাংস্কৃতিক জীবন নৃত্যকলা দিয়ে শুরু হলেও কিছুদিন পর আঘাত জনিত কারণে নৃত্যর্চচা ত্যাগ করতে হয়েছিল। পরবর্তিতে তিনি চিত্রনাট্য অঙ্গনে মনোনিবেশ করেন। ১৯৩২ সালে নাৎসীদের এক সমাবেশে হিটলারের সাথে তার পরিচিত হবার সুযোগ হয় । হিটলার লেনি রেইফেনস্টালএর মেধা ও ছবি নির্মানের ক্ষেত্রে তার পারদর্শীতার কথা শুনে তার দল নাৎসী ও নুরেমবার্গ এর জেপেলিং ক্যাম্প নিয়ে ছবি বানাতে লেনি রেইফেনস্টালকে অনুরোধ করেন । লেনি রেইফেনস্টাল তার ছবির কাজ শেষ করে হিটলারকে আমন্ত্রণ জানান এবং হিটলার ছবি দেখে প্রচন্ড অভিভূত হয়ে পড়েন।

এরপর তিনি ট্রাম্ফ অব দ্যা উইল এর ন্যায় নাৎসীদের পক্ষে কয়েকটি রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা মূলক ছবি নির্মান করে নাৎসীদের আস্থাভাজন হন এবং একপর্যায়ে রেইফেনস্টাল হিটলার ও গোয়েবেলস এর একান্ত কাছের মানুষ ও বান্ধবী হিসেবে নাৎসীদের দরবারে নিজের স্থান সুদৃঢ় করে নেন। যুদ্ধশেষে ফ্রান্স সরকার তার বিরুদ্ধে নাৎসীদের সহযোগিতা করার জন্য বিচারিক অভিযোগ গঠন করে। তাছাড়া হিটলারের প্রেমিকা হিসাবেও তাকে অভিযুক্ত করা হয়। রেইফেনস্টাল তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। অবশেষে দীর্ঘদিন বিচার কার্য্য চলার পর ১৯৪৮ সালে তাকে অভিযোগ থেকে রেহাই দেয়া হয় কিন্তু তার সমস্ত সম্পত্তি ফ্রান্স সরকারের অনুকূলে বাজায়্প্ত করা হয় ।

এ্যমি গোরিংঃ ১৮৯৩ সালে জার্মানির হামবুর্গ শহরে জন্মগ্রহণ করেন এ্যমি গোরিং। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ বিক্রেতা ও নাট্যশিল্পী। তাছাড়া তার লোভী ও উচ্চাভিলাষী চরিত্রের কারণে তখনকার জার্মান সমাজে বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন এ্যমি গোরিং। ১৯১৬ সালে জার্মানির চলচ্চিত্র অঙ্গনের এক নায়কের সাথে তিনি পরিণয় সুত্রে আবদ্ধ হন কিন্তু কিছুদিন পর তাদের সেই বিবাহের বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর ১৯৩৫ সালে এ্যমি গোরিং দ্বিতীয়বারের মত পরিণয় সুত্রে আবদ্ধ হন জার্মানির নাৎসীবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ, হেরম্যান গোরিং এর সাথে।

এ্যমি গোরিং ছিলেন তদানীন্তন জার্মানির ক্ষমতাধর ও ধনকুবের হেরম্যান গোরিং এর দ্বিতীয় স্ত্রী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার বহু আগ থেকেই এ্যমি গোরিং হোস্টেজ অর্থাৎ সেবিকা হিসেবে হিটলারের সাথে নানা সমাবেশ ও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। হিটলারের সাথে ঘনিষ্ঠতা ও একাধিকবার হিটলারের সাথে মঞ্চ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করায় এক পর্যায়ে এসে তিনি নিজেকে তৃতীয় রাইখের ফাস্ট লেডি হিসেবে ভাবতে শুরু করেন, ফলে দ্বন্দ্ব ও বিদ্বেষ শুরু হয়ে যায় হিটলারের প্রেমিকা ইভা ব্রাউন এর সাথে। এক সময় এ্যমি গোরিং প্রকাশ্যে ইভা ব্রাউনকে হেয়জ্ঞান ও হেলাফেলা করতে থাকেন। পরিস্থিতি যখন চরমে উঠে তখন বাধ্য হয়ে হিটলার হেরম্যান গোরিং ডেকে এনে ইভা ব্রাউন সাথে সন্মানজনক ব্যবহার করতে এ্যমি গোরিংকে নির্দেশ দেন।

যুদ্ধশেষ হবার পর আদালত তার স্বামীকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করে এবং নাৎসীদের সহযোগিতা করার অভিযোগে তাকে ১ বছরের কারাদন্ড সহ তার ৩০ শতাংশ সম্পত্তি বাজায়প্ত করা হয় । এ ছাড়া ৫ বছরের জন্য তার সকল প্রকার সাংস্কৃতিকমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়। কারাগার থেকে মুক্তি পাবার পরও তাকে দুর্বিসহ জীবনের মোকাবেলা করতে হয়। যে নারী তার জীবনের অধিকাংশ সময় বিত্ত ও প্রাচুর্য্যের মধ্যে কাটিয়েছিলেন, যার আলমারিতে হরেক রকমের দামী বস্ত্রে সজ্জিত থাকত , একটি ক্লান্তি লগ্নে এসে তার ভাগ্যে পরিধানের জন্য কেবলমাত্র দুই খানা বস্ত্র জুটেছিল। তিনি তার একমাত্র কন্যাকে নিয়ে যে দুই কক্ষ বিশিষ্ট কুটিরে দিন অতিবাহিত করতেন সেখানে না ছিল সরবরাহকৃত পানি, না ছিল বিদ্যুত।

গ্রেল্ট ব্রাউনঃ গ্রেল্ট ব্রাউন ছিলেন সম্পর্কে হিটলারের শ্যালিকা ও নাৎসী দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ও এস এস বাহিনীর জেনারেল হ্যারম্যান ফেগেলেইন এর স্ত্রী। যুদ্ধে গ্রেল্ট ব্রাউন বেঁচে গেলেও তাকে স্বামী হারাতে হয়। ১৯৪৫ সালের ২৯ এপ্রিল দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে হিটলারের আদেশে তাকে হত্যা করা হয়। লিডা ব্যারোভাঃ চেক সুন্দরী ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী লিডা ব্যারোভাকে সে সময়ে সুন্দরী ও রূপসীদের মধ্যে অন্যতমা রূপসী হিসাবে বিবেচনা করা হত। এক সময় লিডা ব্যারোভা নাৎসীদলের প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রী এবং হিটলারের ঘনিষ্ট বন্ধু জোসেফ গোয়েবেলসএর প্রতিবেশী হিসেবে বসবাস করার কালে তার নজরে পড়েন।

গোয়েবেলস সুন্দরী লিডার রূপ ও লাবন্য দেখে সংসার ভুলে তার প্রেমে মজে যান, সুযোগ বুঝে লিডাও স্বার্থ উদ্বার করার অভিপ্রায়ে তার প্রেমের ফাঁদ বিস্তার করে। এক সময় গোয়েবেলস আর লিডার গোপন প্রেমের কথা জানাজানি হয়ে গেলে গোয়েবেলস এর স্ত্রী মাগডা সংসার বাঁচাতে হিটলারের সরনাপন্ন হন। হিটলার তাদের পরকীয়া সম্পর্ক নষ্ট করতে গোয়েবেলসকে চাপ দিলে তিনি তার মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে জাপানের রাষ্ট্রদূত হয়ে লিডাকে সাথে নিয়ে জার্মানি ত্যাগ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। কিন্তু হিটলার তার এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় গোয়েবেলস ১৫ অক্টোবর ১৯৩৮ সালে আত্মহত্যা করার একটি ব্যর্থ চেষ্টা চালান । যুদ্ধ সমাপ্ত হলে লিডা ব্যারোভা মিত্র বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন।

পরবর্তিতে বিচারের উদেশ্যে তাকে মিউনিখ কারগার থেকে চেকোশ্লাভাকিয়ায় স্থানান্তরিত করা হয়। বিচারে নাৎসীদের সহচর ও সহযোগী প্রমান হলে তাকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু সে যাত্রায় স্থানীয় কমুনিস্ট স্বরাস্ট্র মন্ত্রীর ভাগ্নের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক থাকায় তার তদবিরে মুক্তি পেয়ে নতুন জীবন লাভ করেন । মারগারেট বোডঃ মারগারেট বোড ছিলেন নাৎসীদের এলিট ফোর্স এস এস বাহিনীর অধিনায়ক হেইনরীখ হিম্মলের এর স্ত্রী। মারগারেট বোড ১৯২৮ সালে হেইনরীখ হিম্মলের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কিন্তু ১৯৪০ সালে তাদের বিবাহের বিচ্ছেদ ঘটে ।

গেরটুডঃ নাৎসীদের মনোনীত পোলান্ডের গভর্নর আলবার্ট ফস্টারের স্ত্রী ছিলেন এই গেরটুড। নাৎসীবাহিনীর পতনের পর ফস্টার পালিয়ে গেলেও পরবর্তীতে ব্রিটিশ বাহিনীর হাতে ধরা পরার পর তাকে বিচারের জন্য পোল্যান্ড কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়। পোল্যান্ড কর্তৃপক্ষ ১৯৫২ সালে আলবার্ট ফস্টারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে । গেরটুড দুই বছর পর অর্থাৎ ১৯৫৪ সালে তার স্বামীর মৃত্যুর বিষয়টি অবগত হন। ইনগে লেঃ চিত্রনায়িকা ইনগে লে ছিলেন নাৎসীদলের প্রথম সারির একজন প্রভাবশালী নেতা রবার্ট লে এর স্ত্রী।

দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি ছাড়াও জার্মান সমাজে প্রতারক ও লম্পট হিসাবে আলাদা পরিচয় ছিল এই রবার্ট লের। তিনি বিয়ের পূর্বে নেশার ঘোরে তার স্ত্রীকে গর্ভবতী করেছিলেন। অনেকের মতে ইনগে লে এর সাথে হিটলারে স্বর্গীয় প্রেম ছিল আবার অনেকেই মনে করতেন তিনি ছিলেন স্রেফ প্রেমিকা । ১৯৪২ সালে দুই সন্তানের জননী ইনগে লে আত্মহত্যা করেন এবং নাৎসীদের পতনের পর ২৫ অক্টোবর ১৯৪৫ সালে একই ভাবে রবার্ট লে কারাগারে আত্মহত্যা করেন।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.