আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছোট গল্পঃ ঝি ঝি পোকার সংলাপ



বুকের ভিতর ক্ষয়াটে রোগ। তিলে তিলে শুকিয়ে যাওয়া বহতা নদীর মতো ক্রদনহীন চোখ। যার ভাষা পড়তে আমি ভুলে গেছি। বহুকাল আগে অনেকখুঁজে পেতে একটা নীল পদ্ম তার হাতে গুজে দিয়েছিলাম। তারপর...।

তারও অনেক পরে ক্যালেন্ডারেরর পাতা উল্টাতে উল্টাতে এই গুমোট সন্ধ্যায় একশ ওয়াট বাল্বের আলোর নিচে আসবাবহীন এই ছো্ট্ট খুপরি ঘরে আমি ধরা পড়ে গেলাম। কী নির্বাক চাহনি। তীক্ষ তার দৃষ্টি। মুখ ফশকে বলে ফেললাম, 'পানি! এক গ্লাস পানি হবে?' তারপর শুধু ঝি ঝি পোকাদের সংলাপ। অস্থির সময়।

ভেসে বেড়ানো কিছু ছন্নছাড়া স্মৃতি। সে কাঁদছে। তার চোখে শ্রাবণের অশ্রুধারা। আমি কীই বা করতে পারি? মেয়ে মানুষ, আগে থেকে সাবধান হবে না। সামনে আমার মাস্টার্স পরীক্ষা।

একটা চাকরী। তারপর না হয় বিয়ে। কিন্তু এখন? অসম্ভব। বাসায় বলিই কিভাবে? বিয়ের আগেই... উপস। বোকা মেয়ে, ফার্টিলিটি পিরিয়ডে সে কেন সচেতন হলো না? এই বোকা মেয়ের সাথে সম্পর্ক করায় আমার ভুল হয়েছে।

আর কোন ভুল নয়। মেয়ে তুমি তোমার নিজের পথ দেখো। সে চলে যায়। একবারও পিছনে ফিরে তাকায় না। আমি ভুলে যেতে বসেছিলাম একটা ছোট্ট ভুল।

কিন্তু আজ...। এতদিন বাদে ঝি ঝি পোকাদের সংলাপের মাঝে বড্ড নগ্নভাবে ভুলে যাওয়া দিনটা ফিরে আসে। সেই দেখা যদি হবেই তবে আজ এখানে কেন? এই গুমোট সন্ধ্যায় একশ ওয়াট বাল্বের আলোর নিচে এই খুপরি ঘরে ক্ষুধিতের পণ্য হয়ে। আমি এক ঝটকায় বন্ধ দরজার সিটকিনি খুলে ফেলি। ঘোলাটে আকশের নিচে দাড়িয়ে বুকভরে নিঃশ্বাস নিই।

হারামজাদা.... বাচ্চা দালাল। এই তোর কচি মাল! বাইরে তখন আচমকা নামা ঝুম বর্ষা। বৃষ্টির জলে চশমাটা ঝাপসা। ঝাপসা চোখে দূরে দাড়িয়ে থাকা নিয়ন বাতির ল্যাম্পপোস্টগুলোকে ভৌতিক মনে হয়। কালের সাক্ষী, আমার পাপের সাক্ষী হয়ে ওরা দাড়িয়ে।

(গল্প)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।