আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিরা কি কয়লা থেকে হয় ? না

অদ্ভুত পৃথিবী
আমর সবাই কমবেশি Blood diamonds মুভি টি দেখেছি। হিরার জন্য কত যুদ্ধ ই না হয় । কিন্তু এই হিরে কি ভাবে সৃষ্টি হয় তা কি আমরা জানি ? আমরা অনেকেই বিশ্বাস করি যে হিরা কয়লা থাকে সৃষ্টি হয় কিন্তু না!!! হিরা কয়লা থাকে সৃষ্টি হয় না । একটি প্রমাণ ই যথেষ্ট এ ধারনাকে ভুল প্রমান করতে ,সেটি হল হিরার বয়স। বেশভাগ হিরার বয়স নির্ণয় করা হয়েছে তিনশত নব্বই কোটি বছর বা এর বেশি কিন্তু পৃথিবিতে গাছের জন্ম হয় উনপঞ্চশ কোটি বছর আগে ।

আর কয়লা সৃষ্টি হয় ৩৫ কোটি বছর আগে(কার্বনিফেরাস সময়ে)। তাহলে কলার বয়স বেশি হবে না কম ,অবশ্যই কম হবে । তাহলে হিরা কি ভাবে কয়লা থেকে সৃষ্টি হয়? সর্বশেষ হিরার বয়স নির্নয় করা হয় সাড়ে চারশত কোটি বছর অষ্ট্রেলিয়াতে ২০০৮ এ, এর বয়স পৃথিবির বয়সের সমান । এতো গেল বয়স নিয়ে ,এবার আসুন দেখি কয়লা কোথায় পাওয়া যায় এবং হিরা কোথায় পাওয়া যায় । কয়লা পাওয়া যায় সমতল ভুমিতে আর হিরা পাওয়া যায় উলম্ব ভুমিতে ।

হিরা যে ভাবে সৃষ্টি হয়ঃ[/sb পৃথিবির মেন্টেলেঃ পৃথিবির বেশিভাগ ভুতত্ত্ববিদ মনে করেন যে, বানিজ্যিক হিরা সৃষ্টি হয় পৃথিবির ভিতরে এবং পরে তা ভল্কানিক পাইপের মাধ্যমে আগ্নেয় উদ্গিরনের ফলে পৃথিবির উপরে উঠে আসে। এর ফলে তৈরি হয় কিম্বারলাইট,লেম্পরাইট পাইপ যার বেশি ভাগ ই দক্ষিন আফ্রিকায় অবস্থিত । পরে এগুলো ক্ষয় হয়ে নদীর তলাদেশে অথবা সাগর তীরে জমা হয়। হিরা তৈরি হওয়ার জন্য প্রচুর তাপের প্রয়োজন হয় যেটি পৃথিবির উপরিভাগে পাওয়া সম্ভব না । হিরা প্রায় ২০০০ ফারেনহাইট বা ১০৫০ ডিগ্রি সেঃ এ সৃষ্টি হয় যা প্রায় উপরিভাগ হতে ৯০ কি.মি. গভীরে পাওয়া যায় ।

এই তামাত্রায় হিরা স্ট্যবিলিটি পায় ,এই স্ট্যবিলিটি পৃথিবির সব জায়গায় পাওয়া যায় না । শুধু মাত্র কন্টিনেণ্টাল প্লেটের নিচে স্ট্যবিলিটি জোন পাওয়া সম্ভব যার কারনে হিরা মহাদেশ গুলোতে পাওয়া যায় । প্রায় ৯০-১০০ কিমি গভীরের ম্যাগমাতে প্রথম হিরা গঠন কারি পরামানু গুলি সৃষ্টি হয় তার পর এগুলো উপরে উঠতে থাকে এবং হিরা তৈরি হতে থাকে অবশেষে কিম্বারলাইট পাইপে জমা হয়। এবার আসি কয়লা তৈরি হওয়ার কাহিনিতে, কয়লা সাধারণত তৈরি হয় ১৫০ ডিগ্রি সেঃ তাপ মাত্র অথাবা এর চেয়ে কম ,এবং ২.৩-৪ কি,মি গভীরে। কয়লা কে বলা হয় পালালিক শিলা আর হিরা পাওয়া যায় আগ্নেয় শিলাতে ।

কয়লা সৃষ্টি হয় ডায়াজেনেসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ,আর হিরা সৃষ্টি হয় ক্রিষ্টালাইজেশনের মাধ্যমে । সাবডাকশন জোনেঃ সাবডাকশন জোন হল সেই জায়গা যেখান ওসেনিক প্লেট কন্টিনেণ্টাল প্লেটের নিচে ঢুকে পরে। কিছুদিন আগে জাপানে সংঘটিত ভুমিকম্প এই সাবডাকশন জোনের কারনে হয়েছিল । এখানে প্রায় ৮০ কিমি নিচে ওসেনিক প্লেট মেন্টেলে প্রচুর তাপ এবং চাপ সৃষ্টি করে এবং মেন্টেল কে গলিয়ে ম্যগমা সৃষ্টি করে । এখেনেও হিরা সৃষ্টি হয় যা পরে প্লেটের সংঘর্ষের কারনে উপরে উঠে আসে ।

এখান থেকে প্রাপ্ত হিরার পরিমান খুব কম যা বানিজ্যিক ভাবে লাভজনক নয় গ্রহানুর কারনে পৃথিবিতে হাজার হাজার বার গ্রহানু পতিত হয়েছিল, এই গ্রহানু ব্যাস ছিল প্রায় ১০ কিলোমিটার ,এগুলোর গতি ছিল ১৫-২০ কিমি/সেকেন্ড। গ্রহাণূ গুলো যখন পৃথিবিতে আঘাত হানতো তখন প্রচুর তাপ এবং চাপ সৃষ্টি হত। এই গ্রহানু গুলো এতই তাপ সৃষ্টি করতো যে তাপ মাত্রা সূর্যের তাপমাত্রাকে ছাড়িয়ে যেত । এক একটি গ্রহানুর ধ্বংস করার ক্ষমতা ছিল লক্ষ লক্ষ পারমাণবিক বোমার সমান। গ্রহানু আঘাতে কারনে সৃষ্ট তাপ হিরা সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট ছিল বলে হিরা সৃষ্টি হয়েছিল।

গ্রহানু যেসব জায়গায় পরতো সেখনে অর্ধচন্দ্রাকৃতির গর্ত সৃষ্টি হয়েছিল, যার প্রমাণ এখনও আছে এগুলোকে ইংলিশে “ক্রেটার” বলে । এই ক্রেটার গুলোর আশেপাশে হিরা এখনও পাওয়া যায় কিন্ত এর পরিমান খুবই কম। যদি এই ক্রেটার গুলোর আশেপাশে কোন কয়লা খনি থেকে থাকে তাহলেও এই কয়লা হিরায় রুপান্তরিত হয় কিন্তু এর পরিমান খুব কম যা বানিজ্যিক ভাবে লাভজনাক নয়। রেফারেন্সঃ বই Erlich, E.I.; Dan Hausel, W. (2002). Diamond Deposits. Society for Mining, Metallurgy, and Exploration হিরা কিভাবে হয় ,কেন হয় ,কোথায় হয় জানতে চাইলে এখানে যান কিল্ক করুন
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।