আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বুকের কথা , মনের ভিতর । এবার বলি সবার তরে . . .



কান্নার শব্দে সন্ধ্যার আকাশ । মেঘের উচ্ছাস । তবে বৃষ্টিহীন । আধো অন্ধকারে কাবু হওয়া গোধূলি । কারো ঘরে ফিরা , কারো ছুটে চলা ।

ল্যামপোষ্টের আলো নেই পথটিতে । হন্ত দ্ন্ত হয়ে ছুটে চলছি । পেটে দুপুরের দানা , পানি পরেনি । ক্ষিধায় চু চু করা পেট এখন প্রায় শান্ত । ভিতরে মরে গেছে খাওয়ার তৃষ্না ।

একবার ভেবেছিলাম খাব কিছু । মানি বেগের দিকে চোখ পরতেই ক্ষিধাটা উবে যায় । একটু সামনে হাটতেই কান্নার মিহি সুর ভেসে আসে । সামনে চলতে গিয়ে ফিরে দাড়াই । কাছে যেতে কান্নার আওয়াজ স্পষ্ট হয় ।

আল্লারে আমি কি খামু … কি নিয়া বাচমু গ … আমার মারে খাওয়ামু কি … আমি খামু কি . . . আমার সব শেষগো ভাই … ও আল্লা আমি কি নিয়া বাচমো গ আল্লারে . . . । হি- হি করে কাদছে সে । ততক্ষনে অনেক মানুষ জমে গেছে । কি হয়েছে ভই কি ? এক জন আরেক জনকে সুধায় । স্বয়ং লোকটির বরতে খানিক পরে জানা যায় , সারাদিন ধরে কলা বেচে যে টাকা রোজগার করেছে সে সন্ধ্যার পর পকেটে হাত দিয়ে দেখে পকেট খালি ।

তারপর এ পথ ধরে কয়েকবার চক্কর মেরেছে , তবে টাকা মেলেনি । চোখে মুখে পথ না দেখে এখানে বসে কাদতে শুরু করে । সাতশো টাকা পুজির সবটাই খোয়া গেল আজ । শনির দশায় ভেবা চেকা রহিম । কিশোর গন্জ থেকে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ঢাকা এসেছিল ।

আজ পুজি হারিয়ে নির্বাক । থাকে গেন্ডারিয়া রেল স্টেশন বস্তিতে । এখানে ভারা গুনতে হয় মাসে পাচশ টাকা । মা সহ ছয় জনের সংসার । এলাকায় পেডেল চেপে পেটে ভাত পরেনা ।

তাই ঢাকায় চলে আসা । ঢাকার ভাগ্য দেবতা আজ খালি হাতে শাপ করল তাকে । রহিমের কান্না বৃষ্টিতে ভিজে যায় পথিকের মন । রুক্ষতার সুচাগ্রে দানা বাধে মানবতার জল । . . . টাকা হারাই ফেলছ এখন কাইদা কি হইব হে ।

কানলেতো আর টাকা ফিরা পাইবানা । যাও সামনে যাও , দেহ কেউ কিছো দেয় কি না বলে ১০০ টাকার একটা নোট ধরিয়ে দেয় ভদ্রলোক । পাচ টাকা দশ টাকা করে দেয় কয়জন । খারি মাথায় নিয়ে সামনে হাটে আর কাদে রহিম মিয়া । এবার নিজ পকেটে হাত দেই ।

লুকিয়ে থাকা কানা করি ধরিয়ে দেই তার হাতে । ততক্ষনে গলি পেরিয়ে মেইন রোডে চলে এসেছে সে । গরিবের দু:খ আমরা না বুঝলে আর কে বুঝব . . . ঐ গড়ির মালিকরাতো আর ফিরা চাইবনা । কেউ পারলে কিছু দেও বলে , পন্চাশ টাকা রহিম মিয়রি পকেটে গুজে দেয় এক রিক্সাওয়ালা । আমি দাড়িয়ে থাকি ।

কান্নার আওয়াজটা অস্পষ্ট হয়ে আসে । ধীরে ধীরৈ লীন হওয়ার পথে । এখন ও আবছায়া দেখা যায় রহিম মিয়াকে । হয়তো পথে কান্না শুনে আরও কেউ গুজে দেবে ৫০ টাকা । কেউবা অভিনয় বলে লাথ্থি ছুরবে ।

কারো চোখ সিক্ত হলেও হতে পারে । আহা কোন কিছুইতো ফিরিয়ে দেবেনা তার ৭০০ টাকা । এক দেরশো টাকা দিয়ে কি আর ব্যাবসাটা হবে ? সরোজ মেহেদী

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।