আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৩৩ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর কি হবে? ১৯৯৬-এর দায়ী ব্যক্তিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে



এ. বি. সিদ্দিক : আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। তাবে যথারীতি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন সুবিধাভোগী সুযোগ সন্ধানীরা। অপরদিকে প্রায় ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী আর্থিক ক্ষতির মধ্যে থেকেই গেলো। ১৯৯৬ সালেও যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তারা পায়নি বিচার ও ক্ষতিপূরণ। প্রশ্ন হচ্ছে এসব ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী কি বিচার পাবেন না? গতকাল শনিবার প্রকাশিত একটি বেসরকারি বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হবে।

তদন্তকারী প্রধান কর্মকর্তা বলেছেন, শেয়ারবাজার একটি বিশাল ক্ষেত্র। সেখানে রয়েছেন ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী। সামগ্রিক তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন। তারপরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তদন্ত শেষ করার বিষয়ে কাজ করা হয়েছে। তদন্ত কাজে বাজার কারসাজির দুর্বল স্থানগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

তদন্ত রিপোর্টে নির্দিষ্ট করে কাউকে দায়ী করা হচ্ছে না। কারসাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে কোন সুপারিশ করা হচ্ছে না। তবে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট ৪৮টি সুপরিশ থাকছে। সুপারিশগুলোর মধ্যে থাকছে এসইসি'র সংস্কার আইন ও বিধিমালার সংস্কার কোম্পানি আইন সংশোধন, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের গঠনতন্ত্র সংশোধন, মূলধন সংশোধনের নামে প্লেসমেন্ট বাণিজ্য, অস্বাভাবিক প্রিমিয়াম, নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তি এবং বিশেষ মহলের সুবিধা সৃষ্টির জন্য আইন ও বিধি-বিধান সংশোধন করা। সেই সাথে সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের জবাবদিহিতা ও শক্তিশালী করার সুপরিশ করা হচ্ছে।

গত ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু হয় শেয়াবাজার বিপর্যয় আর কেলেঙ্কারি। ২০ জানুয়ারি ৫ মিনিটে সূচক কমে দাঁড়ায় ৬০০ পয়েন্টে। এমন বিপর্যয় বাংলাদেশের ইতিহাসে ছিল প্রথম। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে আসেন। পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়।

জানুয়ারি মাস থেকে যে বিপর্যয় দেখা দেয় তা চলছেই। এখন পর্যন্ত বাজার স্থিতিশীল হয়নি। শেয়ারবাজার নিয়ে নানা কেলেঙ্কারির কথা উঠে আসছে। সংবাদপত্রে প্রতিনিয়ত এ সম্পর্কিত খবর প্রকাশ পাচ্ছে। কয়েকটি সংবাদ শিরোনাম এমন ২১/১২/১০ আমার দেশ ‘‘শেয়ারবাজারে ধসের নেপথ্যে সিন্ডিকেটের কারসাজি : ২৫ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ’’ ২০/১২/১০ যুগান্তর ‘‘শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস : ৯৬-এর কেলেঙ্কারিকেও হার মানিয়েছে’’ একই দিনে যায়যায় দিনের রিপোট ‘‘শেয়ারবাজারে ধস : ১৯৯৬ সালের ভয়াবহ রেকর্ডও অতিক্রম।

একদিকে মার্কেট থেকে ১৯ হাজার কোটি টাকা উধাও’’ ১৯/১২/১০ কলের কণ্ঠ ‘‘ডিএসইতে এক সপ্তাহে লেনদেন করেছে ৭৪৮ কোটি টাকা’’ ১১/১২/১০ সংবাদ ‘‘দরপতনের ফাঁদে পুঁজি বাজার : হাজার কোটি টাকা লুটে নিল সিন্ডিকেট’’ ৯/১২/১০ ইনকিলাব ‘‘শেয়ারবাজারে ব্যাপক ধস : কয়েক'শ কোটি টাকা গায়েব’’ ২৩/২/১১ একই পত্রিকা দুই বছরে পুঁজিবাজার থেকে সাড়ে ৪৩ হাজার কোটি টাকা উত্তোলন’’। বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মহল বিশেষ। আর রাস্তায় বসতে হয়েছে প্রায় ৩৩ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। সরকারের দায়িত্বশীলরা ইতোপূর্বে যা বলেছেন, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা সন্তোষ হতে পারছেন না। ‘‘কেউ বলেছেন শেয়ারবাজার বুঝি না’’।

আবার কেউ বলেছেন, ‘‘আমাদের ভুল আছে’’। আর এই ভুলের মাসুল দিচ্ছেন লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। ১৯৯৬ সালে হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে রাস্তায় বসে। তখনও কারো বিচার হয়নি। তখন অভিযোগ উঠে যে ‘‘শেয়ারবাজারের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মাড়োয়ারিরা’’।

তাহলে ১৯৯৬ সালের দায়িত্ব ব্যক্তিরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।