আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হরতালের জয় জয়কার, আর আমাদের জীবনের ঘোর অমানিশা:

"বাংলা আমার জন্মভূমি, বাংলা আমার প্রাণ; হবনা পিছপা, রাখতে আমার বাংলা মায়ের মান । " সব আমলেই সরকার এটা স্বীকার করে যে, হরতাল দেশের অগ্রগতিতে অন্যতম বাধাস্বরূপ। অর্থনীতি, সমাজ জীবন, শিক্ষার ক্ষেত্রে তথা সকল ক্ষেত্রেই হরতালের বিরূপ প্রভাব পডে। সরকার যদি এটাই বোঝে, তাহলে হরতাল চিরস্থায়ীভাবে বন্ধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয় না কেন? হরতাল সবসময়ই বিরোধী দলের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ এবং সরকারীদলের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয় কেন? তা সে আ্ওয়ামিলীগ আর বি.এন.পি ই হোক না কেন। এই দুই দলইতো ঘুরে ফিরে সরকারী ও বিরোধী দল হচ্ছে।

তাহলে তারা কেন জনগণের সমস্যা বুঝতে পারছে না। এই হরতাল ও সহিংসতায় কত নিরীহ মানুষ মারা গেল। সংখ্যায় তা একজনই হোক অথবা পঞ্চাশজনই হোক। আমাদের কাছে হয়তোবা তার একজন, কিন্তু কোন পরিবারের জন্য তারা তো কারো বাবা, স্বামী, ভাই, কারো নারী চেড়া ধন, বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। এই একজনের শূণ্যতাতেই কোন পরিবারের জন্য হয়তোবা নেমে আসতে পারে ঘোর অমানিশার অন্ধকার।

এই জ্বালা্ও পোড়াও হরতালের রাজনীতির কবলে পড়ে কেউ হারাতে পারে তার সারা জীবনের কষ্টে গড়া জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। তাহলে কেন এ ধ্বংসাত্নক রাজনীতি বার বার প্রতিবার ঘুরে ফিরে আসছে, আর এর বলির পাঠা হচ্ছি আমরা খেটে খাওয়া মানুষজন। কতজন রাজনীতিবিদের পরিবার পরিজন আসে এই হরতাল সফল করতে? যখন আমরা সাধারণ মানুষ হরতালে জীবন হাতে নিয়ে যাচ্ছি কর্মস্থলে, পথে বোমার আঘাতে আহত হচ্ছি, হয়তোবা আহত হযে সারা জীবন শরীরে স্প্লীন্টার নিয়ে যাতনা ভোগ করছি, তখন দেখা যাবে রাজনীতিবিদদের বৌ-বাচ্চা প্রতিটা বোমার আওয়াজ শুনে অথবা টেলিভিশনে পথচারীদের অসহায় দিকভ্রান্তের মত ছোটাছুটি দেখে হাত তালি দিয়ে সোল্লাসে চিৎকার করে উঠছে হরতাল সফল হয়েছে বলে। আমাদের ভাই-বোনরা পারছে না তাদের পরীক্ষা দিতে, এটা পুরো জাতির জন্যই দুর্ভাগ্য যে, রাজনৈতিক দলগুলো এর অপকারিতা ‍বুঝতে পারছেনা অথবা বুঝার চেষ্টা করছে না। একদিন পেছানো মানে জীবন থেকে একটা দিন অপব্যায় হওয়া, আর কর্ম জীবনে একদিন পরে প্রবেশ করা, যা কারোই কাম্য নয়।

আর তাদের চিন্তা-ই থাকবে কেন আর তাদের সন্তানের জন্য ইংলিশ মিডিয়ামে রাতেও পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকে। আর তাদের সন্তান দুই চার পাঁচ বছর পরে পাশ করলে কোন সমস্যা নেই, কারণ তারা একবার ক্ষমতায় গিয়ে যতটুকু কামায়, তা দিয়ে তাদের কয়েকটা প্রজন্ম বসে খেতে পারবে। আর আমাদের সন্তান যত তাড়াতাড়ি পাশ করে সংসারের হাল ধরতে পারবে ততোই মঙ্গল, হয়তো বৃদ্ধ বাবা আর পেরে উঠছে না, বার বার নুয়ে পড়ছে সংসারের ঘানি একা টানতে গিয়ে। এসব সমস্যার দায়ভার কে নেবে!! কে দিবে এর ক্ষতিপূরণ? আর সবকিছুর কি ক্ষতিপূরণ দেয়া সম্ভব? যে মা তার সন্তানকে হারিয়ে শোকে বিহব্বল হয়ে পড়ে আছে, যে সন্তান তার বাবার পথপানে চেয়ে আছে, কত টাকায় এদের ক্ষতি পোষাবে? হায় পোড়া কপাল আমাদের। কারো কাছে আর কিছু চা্ওয়ার নেই।

কারণ আমাদের জন্য সব সময় অপেক্ষা করছে জলন্ত চুলা অথবা তপ্ত ঊনুন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.