আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডারউইনের জাহাজ

http://farm5.staticflickr.com/4084/5106907209_d4c9a50a8b_z.jpg
বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের নাম নিশ্চয়ই তোমরা শুনেছো। পণ্ডিতরা যার নাম দিয়েছেন প্রাণবৈচিত্র্যের বিজ্ঞানী। তিনিই প্রথম খুঁজে বের করেন সময়ের ফেরে একেকটি প্রাণী বদলে গিয়ে কিভাবে অন্য প্রাণী হয়ে যায়। আর এই বিচিত্র প্রাণের খোঁজ করতে গিয়ে অনেক দেশও ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। তেমনি এক সকালে সান ক্রিস্টোবালে ঘুরতে বের হন ডারউইন।

বেশ তাঁতানো রোদ। চড়চড় করছে সমুদ্রের বিশাল বালুচর। কিন্তু সামনে গিয়েই হঠাৎ থমকে গেলেন তিনি। চোখও কিছুতে সরতে চাইছে না। মনে হল ছোটখাটো দু'টি জাহাজ আয়েশী মেজাজ নিয়ে এগিয়ে আসছে তার দিকে।

কিন্তু জাহাজ তো আর মানুষের মতো হাঁটতে পারে না! ব্যাপারটিকে কোনভাবেই মেলাতে পারলেন না তিনি। পরে অবশ্য জাহাজ দু'টির হাঁটার ভঙ্গিমাই বাতলে দিল, এরা কেবলই দশাসই দুটো প্রাণী। আর তা হল জাহাজের মতোই দেখতে বিশালাকার দু'টি কচ্ছপ। এক একটা এমনই দেখতে, যে কেউ এদের দেখলে ভয়ে সিটকে যাবে নিশ্চিত! তবে ডারউইন তো আর ভয় পাওয়ার লোক নন! ঠিকই পিছু নিলেন তিনি। অথচ ভ্রুক্ষেপই নেই যেন ক্যাকটাস খেকো কচ্ছপটির।

ব্যস্ত সমস্ত হয়ে সেই কখন থেকে ক্যাকটাসের একেকটি ডাল চিবিয়েই যাচ্ছে। অন্যটি তো ডারউইনকে দেখার সঙ্গে সঙ্গেই ফুঁসে উঠল আর হিসহিস করে ঝেড়ে দিল রাজ্যের যত রাগ। ভাবখানা এমন যে কোনভাবে বাগে পেলেই হলো আর রক্ষে নেই। ডারউইনও নাছোড়বান্দা, পিঠে চড়ে বসে রীতিমতন হার মানিয়ে ছাড়ল দানোটিকে। অমনি দানোটিও নিশ্চল-পাথর বনে গেল, একটিবারের জন্যও আর রাগ করল না।

কি আর করা, লম্বা এক কাঠি দিয়ে মোটা খোলের নিচে জোরসে এক গুতো দিয়ে বসলেন তিনি। অমনি সত্যিকারের দানব হয়ে উঠল যেন ও। বেয়ারা ষাঁড়ের মতো এমনই পড়ি মরি করে ছুট দিল যে তখনিই পারলে মাঝ-সমুদ্রে ছেড়ে দিয়ে আসে ডারউইনকে! এমন দেহাতি শরীরের কোন প্রাণী মানুষ নিয়ে এভাবে ছুটতে পারে তা ভাবতেই পারেননি ডারউইন। আর এই শরীর নিয়ে এরা নাকি দিব্যি ১০০-১৫০ বছর পর্যন্তও বেঁচে থাকতে পারে। তেমনি এক মাদাগাসকারের কচ্ছপকে আজ থেকে ২৫০ বছর আগে অথর্্যাৎ ১৭৭০ সালে টোঙ্গার রাণীকে সওগাত দেয়া হয়।

যে কিনা মারা যায় ১৯৬৬ সালে। তবে কি জানো এদের বাচ্চা পাড়ার সময় আসে বেশ দেরিতে। অর্থাৎ ২০-৩০ বছর বয়সেই বাচ্চা দিতে পারে একেকটি কচ্ছপ। ঘাস, লতাপাতা আর গুল্ম ছাড়া তেমন কিছুই খায় না এরা। তবে এদের শত্রুও নেহাৎ কম নয়।

বুনো প্রাণী, গাধা আর ছাগলই হল এসব দানোদের বড় শত্রু। এদিকে বুনো কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর ও শুকরদের খপ্পরে এদের ডিম আর ছানা পড়লে তো আর কথাই নেই, অমনি নিকেষ করে ছেড়ে দেয়। এর বাইরে জলদস্যু আর তিমি শিকারীদের নেকনজর তো আছেই। কোনভাবেই জালে আটকা পড়লেই হল, মাসের পর মাস জাহাজে বন্দি জীবন কাটিয়ে দিতে হয় ওদের। পরে কোন একসময় শিকারীদেরই খাদ্য হয়ে ওঠে এরা।

আর এভাবে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে এই দানোরা। এখন কেবল গালাপাগোসেই টিকে আছে প্রায় ১৫০০০ হাজার কচ্ছপ, যার মধ্যে শুধু ভলকান এলসেডোতেই আছে ৩০০০ হাজার। শাপলা বড়ুয়া Daily Samakal (Click This Link)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।