আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াতের নিবন্ধন: রায় বৃহস্পতিবার

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে এই দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জোরালো হয়ে ওঠার মধ্যেই আদালতের এই রায় আসছে। জামায়াত আগামী নির্বাচন করতে পারবে কি না, তা এই রায়ের ওপরই নির্ভর করছে।
এই সংক্রান্ত রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের বেঞ্চ গত ১২ জুন রিটটি রায়ের জন্য ‘অপেক্ষমাণ’ রাখেন।
সুপ্রিম কোর্টের বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় মামলাটি রায়ের জন্য রাখা হয়েছে।
সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী জামায়াতে ইসলামী ২০০৮ সালে ৩৮টি দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয়।

শুধু ইসিতে নিবন্ধিত দলগুলোই নির্বাচনে অংশ নিতে পারে।
তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন ওই নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাই কোর্ট একটি রুল জারি করে।
একটি রাজনৈতিক দল হিসাবে নির্বাচন কমিশনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি(১)(বি)(২) ও ৯০(সি) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে।
জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মো. মুজাহিদ এবং নির্বাচন কমিশন সচিবকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলে বিচারপতি এম বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের বেঞ্চ।
পরে রুলটি বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে যায়।

সেখানে আংশিক শুনানির মধ্যেই ওই বেঞ্চের এখতিয়ার পরিবর্তন হয়ে যায়।
এরপর বৃহত্তর বেঞ্চে রিটের শুনানি শেষ হয় গত ১২ জুন।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী তানিয়া আমীর ওইদিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা শুরু থেকে বলে আসছি, জামায়াতের গঠনতন্ত্র দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই দল নিবন্ধন পাওয়ারই যোগ্য ছিলো না।
“এই দলের নিবন্ধন দেয়া মরা শিশুর জন্ম দেয়ার মতো।

জন্ম যেহেতু হয়ে গেছে, এখন একে কবর দিয়ে দেয়া উচিত। ”
অন্যদিকে জামায়াত নেতাদের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক যুক্তি দেখান, অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। তাই রিট আবেদনটি চলতে পারে না।
“দেশের আরো অনেক রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্রে একই ধরনের বিধান থাকলেও ওইসব দলের বিরুদ্ধে কোনো রিট আবেদন করা হয়নি। ”
জামায়াতের গঠনতন্ত্রে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু নেই বলেও দাবি করেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রাজ্জাক।


তিনি দাবি করেন, রিট আবেদনকারীদের দল তরিকত ফেডারেশন, জাকের পার্টির গঠনতন্ত্রও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
“যে অভিযোগে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করতে বলা হচ্ছে, সেই অভিযোগে আরো অনেক দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। ”
তানিয়া আমীর এর আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “২০০৯ সালে রুল জারি হলেও এখন পর্যন্ত বিবাদীর কারো জবাব আমরা হাতে পাইনি। তবে রুল শুনানি পর্যায়ে জামায়াতের পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ওকালতনামা দাখিল করেছিলেন। ”
রিট আবেদনে বলা হয়, চার কারণে জামায়াত রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধন পেতে পারে না।


প্রথমত, জামায়াত নীতিগতভাবে জনগণকে সব ক্ষমতার উৎস বলে মনে করে না। সেইসঙ্গে আইন প্রণয়নে জনপ্রতিনিধিদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাকেও স্বীকার করে না।
দ্বিতীয়ত, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসারে কোনো সাম্প্রদায়িক দল নিবন্ধন পেতে পারে না। অথচ কাজে কর্মে ও বিশ্বাসে জামায়াত একটি সাম্প্রদায়িক দল।
তৃতীয়ত, নিবন্ধন পাওয়া রাজনৈতিক দল ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গের কোনো বৈষম্য করতে পারবে না।

কিন্তু জামায়াতের শীর্ষপদে কখনো কোনো নারী বা অমুসলিম যেতে পারবে না।
চতুর্থত, কোনো দলের বিদেশে কোনো শাখা থাকতে পারবে না। অথচ জামায়াত বিদেশের একটি সংগঠনের শাখা। তারা স্বীকারই করে তাদের জন্ম ভারতে। বিশ্বজুড়ে তাদের শাখা রয়েছে।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.