সেন্ট লরেন্স উপসাগরের ওপর জেগে থাকা ছোট্ট দ্বীপ প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ড। কানাডার সবচেয়ে ছোট প্রদেশ। প্রাদেশিক রাজধানীর নাম শারলট টাউন। পূর্ব ও পশ্চিমে ঐতিহাসিক হিলসবরো নদী এবং নর্থ (ইয়র্ক) নদী গভীর মমতায় ঘিরে রেখেছে শারলট টাউনকে। তারপর মিলেমিশে গড়িয়ে পড়েছে নর্থাম্বারল্যান্ড পোতাশ্রয়ে।
এর ওপরে ১২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ কনফেডারেশন সেতু। মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এই দ্বীপটি সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। আমার আবাস শারলট টাউনের ব্রাইটন এলাকায়। বাড়ি থেকে বেরোলেই বোর্ডওয়াক, সাইক্লিং আর হাঁটার ট্রেইল। জলের ধার ঘেঁষে কাঠের পাটাতন পেতে হাঁটার রাস্তা এক পাশ উঠে গেছে ভিক্টোরিয়া পার্কে আর নাক বরাবর হাঁটতে থাকলে পৌঁছানো যায় শহরের প্রাণকেন্দ্রে।
বোর্ডওয়াকের অদূরেই শারলট টাউন হারবার। সদ্য ভেড়ানো ক্রুজ-শিপের মাস্তুল দেখা যায় অনায়াসে। গ্রীষ্মকালে শহরজুড়ে পর্যটকদের ভিড়। চারপাশে উৎ সবের আমেজ। শারলট টাউন ঐতিহাসিক শহর।
এই শহরেই ১৮৬৪ সালে ঐতিহাসিক শারলট টাউন কনফারেন্সে কানাডীয় কনফেডারেশন ধারণার জন্ম। তাই শারলট টাউনকে কনফেডারেশনের জন্মভূমি বলা হয়। বোর্ডওয়াকের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত ২ দশমিক ৬ কিলোমিটার। পাশে তির তির করে বয়ে যাওয়া নর্থ নদী। বড় বড় পাথরের চাঁই নদীকে শহর থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রেখেছে।
এখানে আমার একটি অলিখিত মালিকানার পাথর আছে। সকালে হাঁটা শেষে সেদিনও আমি আমার প্রিয় পাথরটির ওপরে বসে আকাশ আর জলের রঙের খেলা দেখছিলাম। কমলালেবুর শরবতের মতো আকাশ আর নিচে ঢেউয়ের মাথায় হাজার রুপালি সিকির উল্লাস। সেখানে বসে ভাবছিলাম, এই জল কি আমার নদীটা চেনে? আকাশটার ওধারে আমার প্রিয় বাবাও কি গোধূলির আলোয় মন খারাপ করা সূর্য ডোবা দেখছেন? এমন সময় ওপর থেকে হঠাৎ কেউ চেঁচিয়ে উঠে বলেন, ‘মিসসি (Missy), তুমি সাঁতারের জন্য তৈরি হচ্ছ না তো?’আমি জলের বেশ কাছেই ঝুঁকে বসেছিলাম। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি তাঁকে।
‘মিসসি’ শুনে ফিক করে হেসে ফেলি আমি। মেলানিনের এই এক সুবিধা। চোখের তলায় কাকের পা আড়াল করে ভালো। তিনি পর্যটক। পর্যটকদের সমস্যা হলো, তাঁরা আমার মতো বাদামিদেরও সহযাত্রী ভাবেন।
আমার হাসি দেখে স্বাস্থ্যে ভরপুর ভদ্রলোক হাসি হাসি মুখে কথা চালানোর জন্য পাথরের কাছে এগিয়ে আসেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।