আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেনা প্রসঙ্গঃ গ্রামের টাউট বাটপারদের ইসলাম চর্চা ও কুয়োর সুশীলেরা

---

গত কয়েকদিন ধরে একটি বিষয় নিয়ে প্রচণ্ড আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। আর তা হল, গ্রামের কিছু সুবিধাবাজ ও মতলববাজ রাজনৈতিক কুলাঙ্গার কর্তৃক হেনার জীবনাবসান। পুরো ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করলে একটি ব্যাপার পরিষ্কার হয়। তা হল, ব্যাক্তিগত ঘাত সংঘাতের একটি স্থানীয় স্বেচ্ছাচারিতাকে শরীয়া বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে জেনে নেয়া যাক, ইসলামে বিয়ে বহির্ভূত দৈহিক সম্পর্কের ব্যাপারে কী বিধান রয়েছে।

রেফান্সের সাগরে না হাতড়ে সরাসরি বিধানগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হল। ব্যাভিচারি/ব্যাভিচারিণী যদি অবিবাহিত হয় তাহলে তাদের ১০০ চাবুক প্রয়োগ করতে হবে। এ শাস্তি প্রয়োগের পর সমাজে ব্যাভিচারি/ব্যাভিচারণীর সাক্ষী গ্রহণযোগ্য হবে না। সমাজ অপরাধীদ্বয়কে অনেকটা বয়কট করবে । অন্যান্য শাস্ত্রবিদের মতে শাস্তি প্রয়োগ উত্তর তাদের এক বছরের জন্য দেশান্তরি করা হবে।

এ গেল যারা বিবাহিত নয় এমন ব্যাভিচারী/ ব্যাভিচারিনীর ক্ষেত্রে বিধান। আর বিবাহিত অবস্থায় ব্যাভিচার করলে ব্যাভিচারি/ব্যাভিচারণীর শাস্তি হল পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদণ্ড। এ ক্ষেত্রে কোন ব্যতয় ঘটবে না। আলোচিত হেনা অবিবাহিতা ও মাহবুব বিবাহিত। বিধান অনুযায়ী হেনাকে ১০০ চাবুক প্রয়োগ ও মাহবুবকে পাথর মেরে হত্যা করার কথা ছিল।

কিন্তু গ্রাম্য শালিশীর ইসলামী পণ্ডিতেরা ( যার উদ্যেক্তা একজন ধর্মপ্রাণ গণতন্ত্রী চেয়্যারম্যান) মাহবুবের জন্যও ১০০ চাবুক প্রয়োগের সিদ্ধান্তে আসেন। প্রথম আলোর ভাষ্যমতে " মাহাবুবকে ২০০ দোররা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আর কিশোরী হেনাকে ১০০ দোররা মারার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু ধর্ষকের শাস্তি অর্ধেক কমিয়ে তাৎক্ষণিক সালিসকারীরা তাঁকে ১০০ দোররা মারেন। " বিবাহিত ধর্ষক মাহবুবকে ২০০ দোররা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান শরীয়ায় কোথায় পেলেন সালিসির ইসলামী পণ্ডিতেরা? হেনার দরিদ্র পিতার বক্তব্য শুনলে পুরো ব্যাপারটি পাঠকদের আঁচ করতে একটুও অসুবিধে হবার কথা নয়। প্রথাম আলোর ভাষ্যমতে : " হেনার বাবা দরবেশ খাঁ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি গরিব হওয়ায় প্রভাবশালীরা আমার মেয়ের সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন।

এভাবে দোররা মেরে মেয়েটিকে মেরে ফেলা হবে, কখনো ভাবিনি। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই। ’ " যে গ্রামে রাতভর নগ্ন নৃত্যের যাত্রা পার্টি হয়, দেদারসে সুদের কারবার চলে, মদ গাঁজার আসর বসে, পতিতালয় বসে, ভিসিডির দোকানে পোলাপানদের হাতে অশ্লীল ফিল্ম ধরিয়ে দেয়া হয়, যে গ্রামে সিনেমা হলে ব্লু ফিল্ম অবাধে প্রদর্শিত হয় সেখানে এত কিছু বাদ দিয়ে কেন ইসলামকে শুধু হেনার উপর প্রয়োগ করা হল তা প্রতিটি মুসলমানের ভেবে দেখবার বিষয়। পুরো ব্যাপারটি ঘেঁটে একটি প্রশ্নই বার বার উঁকি দিচ্ছে। ঘটনাটি ইসলামকে বিকৃতভাবে তুলে ধরার চলমান আন্তর্জাতিক এজেন্ডার অন্তর্ভূক্ত না তো ?


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.