আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেনা দাস-রা কখনো মরে না

সত্য বল সুপথে চল, ওরে আমার মন ...

হেনা দাস। একটি নাম। একজন মানুষের নাম। আর মানুষ কখনো মরে না। মানুষ মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকে।

চিরদিন বেঁচে থাকে। যেমন বেঁচে আছেন সক্রেটিস, হ্যানিমান, লালন, কার্ল মার্কস, লেনিন, মাও সে তুং, পাবলো নেরুদা, চে গুয়েভারা, আলেন্দ্র. হো চি মিন, কিম ইল সুন, হুমায়ুন আজাদসহ লক্ষ মানুষ তেমনি হেনা দাসও বেঁচে থাকবেন। মানুষ মানুষের মাঝেই বসবাস করে। মানুষ ছাড়া মানুষের আর যাওয়ার তো কোনো জায়গা নেই। শুধু হেনা দাস বললে নামটি অপূর্ণাঙ্গ থেকে যায়।

এই নামটির পূর্বে বিপ্লবী শব্দটি একান্তভাবে অপরিহার্য। তাতে বুর্জোয়া থেকে শুরু করে সুবিধাবাদী, অসুবিধাবাদী ও নানান রঙের বামপন্থীরা কোনো আপত্তি তুলবেন না, একথা আমি জানি। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো, যে মানুষের মধ্যে হেনা দাস-রা বেঁচে থাকবেন, সেই মানুষ কি আমরা হতে পেরেছি বা হওয়ার চেষ্টা করছি? মানুষ বা বিপ্লবী কখনো মরে না। তার যৌক্তিক কারণ হলো-মানুষ বেঁচে থাকে তাঁর কৃতকর্ম ও সৃস্টিশীলতার মাধ্যমে। কোনো সৃষ্টি ধবংস হয় না।

সৃষ্টি যুক্ত হয় নতুন সৃষ্টির সাথে। এভাবে সকল সৃষ্টি সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করে। যার কারণে সভ্যতার চাকা সবসময় সামনের দিকে অগ্রসর হয়। অনেকে মানুষ আর বিপ্লবী এই শব্দ দুটির মধ্যে পার্থক্য টানেন। কেউ কেউ এই শব্দ দুটিকে ভিন্ন ভিন্ন দুটি বিষয় বলেন।

আবার কেউ কেউ সমার্থক বলেও মত দেন। তবে সরদার ফজলুল করিমের মতে--একজন মানুষ সবসময়ই কমিউনিস্ট এবং বিপ্লবী। কারণ কমিউনিস্ট বা বিপ্লবী সেই হতে পারে, যে মানুষ হয়ে উঠে বা মানুষ হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকে। সে মানুষ কখনো কোনো অসঙ্গতি, অসাম্য, শোষণ-বৈষম্য মেনে নিতে পারে না। সে প্রতিনিয়ত লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষের সমাজ, মানুষের পৃথিবী গড়ার তোলার জন্য জীবনপণ সংগ্রাম করে যায়।

ইলেকট্রনিক মিডিয়া বেশ গুরুত্বের সাথে প্রচার করলো--হেনা দাস আর নেই, মারা গেছেন, মৃত্যুবরণ করেছেন, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন আরও কত কি শিরোনামে। পত্রিকাতেও তাই। দেশের বাম, ডান, মধ্যপন্থী, সুবিধাবাদী, অসুবিধাবাদী সব নেতারাই একই সুরে বললেন তিনি মারা গেছেন এজন্য আমরা শোকাহত। কিন্তু কেউ সাহস করে বললেন না, হেনা দাস মারা যায় নি। মরতে পারে না।

মানুষ আর বিপ্লবীর মৃত্যু নেই। তাহলে হেনা দাস যে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবেন, তারা কোথায়? অনেকে আমাকে হতাশাবাদী বলার সিদ্ধান্ত হয়তো নিয়ে ফেলেছেন। বলুন, আপত্তি নেই। কারণ অমানুষতো আর বলেন নি। আমার ভয় এইখানেই।

কেননা আমি মানুষ হয়ে উঠতে পারিনি এবং চেষ্টাও করছিনা। তারপরও আপনারা আমাকে মানুষ বলছেন। লোভ, ভোগ, লাভ ও প্রকাশইজম আমার অস্থি-মজ্জায়। আমার মধ্যে আমি(মানুষ) নেই। শুধু আছে ভোগ আর সুবিধাবাদ।

ব্যাখ্যা দেবেন হয়তো এর উর্ধ্বে কেউ নয়। একথা আমি মানি না। কেননা হেনা দি এর উর্ধ্বে ছিলেন। কারণ তিনি মানুষ ছিলেন। সরদার ফজলুল করিম, কমরেড জসীম উদ্দিন মন্ডল, শহীদুল্লাহ চৌধুরী, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, যতীন সরকারসহ অনেক মানুষ এখনোও বেঁচে আছেন।

মানুষ হয়ে বেঁচে আছে। বেঁচে থাকবেন মানুষের মাঝে চিরদিন। সাম্য ভালবাসার পৃথিবী গড়ার জন্য, মানুষের পৃথিবী গড়ার জন্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.