আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অ্যাডাম হিলড্রেথের কথা

চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি।

আজকের ইত্তেফাকের লিংক: Click This Link অ্যাডাম হিলড্রেথ, অল্পবয়সী এক মিলেনিয়ার। এক অন্যরকম কায়দায় তিনি সাফল্যের এই পথটুকু পার হয়ে এসেছেন। তিনি সোস্যাল ইসু্য নিয়ে কাজ করেছেন, যা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি পৃথিবীর কাছে প্রমাণ তুলে ধরেছেন যে, সামাজিক দায়িত্ববোধও আমাদের এনে দিতে পারে সাফল্য।

তাকে নিয়ে লিখেছেন প্রাঞ্জল সেলিম অ্যাডাম তার প্রথম ব্যবসা শুরু করেন ১৯৯৯ সালে, তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ১৪ বছর। এত অল্প বয়সে ইউকের (যুক্তরাজ্য) এক কোম্পানির ডিরেক্টর হওয়ায় তিনি তার আরো সাতজন বন্ধুসহ গিনেজ বুকে জায়গা করে নেন। 'ডুবিট' নামের সাইটটিকে এক প্রকারের সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট বলা চলে। তবে, বর্তমানে এটাকে 'ইয়থ মার্কেটিং এজেন্সি' বলা হচ্ছে। কারণ, ২১ শতকে এসে সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোর ভূমিকা সম্পর্কে ব্যাপক কথা বলা হয়েছে এতে।

কোকাকোলার মতো কোম্পানি ডুবিট সাইটের মাধ্যমে তাদের ব্যবসার প্রচারকার্য চালনা করতেন। ২০০৪ সালে খুব দ্রুতই অ্যাডাম যুক্তরাজ্যের ২০ জন ধনী টিনেজদের তালিকায় স্থান করে নেন। ২০০৬ সালে তিনি তার ডুবিটের সব শেয়ার বিক্রি করে দেন। তারপর অন্যরকম একটা কোম্পানির কথা ভাবতে থাকেন যেটা প্রতিরোধমূলক সফটওয়্যার বানাবে, যা গ্রুমিং খুঁজে বের করতে পারে 'পেডোফিলিস' অনলাইনের মাধ্যমে। এটি এমন একটি সফটওয়্যার ব্যবস্থা, যা অনলাইন গ্রুমিংয়ের আচরণ হিসাব করতে পারে।

সাল, ২০০৭, 'সানডে টাইমস' পত্রিকাটির হিসাবমতে, অ্যাডাম যুক্তরাজ্যের ১০০ জন তরুণ ধনীদের মধ্যে ২৮ নম্বর স্থানে ছিলেন। এ পত্রিকাতে প্রতিবছর ১০০ জন ধনীদের তালিকা প্রকাশ করে। সেই সাথে একটা গবেষণায় প্রকাশ করা হয়, ২০২০ সালের মধ্যে অ্যাডাম হবেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। 'ছেলেটা একটা ভালো দৃষ্টান্ত যে, একজন সাদা মনের মানুষ কী করতে পারে। এভাবে এগোতে থাকলে সে অবশ্যই একদিন সুপারস্টার হবে', অ্যাডাম সম্পর্কে তার একজন বিজ্ঞ পরামর্শদাতা ও ডুবিটের চেয়ারম্যান মাইক বে ইরক্লিফ মন্তব্য করেন।

অনলাইন গ্রুমিং ও ঘটনার সূত্রপাত 'হাই', সহজ একটি বাক্য দিয়েই ব্যপারটির শুরু হয়েছিল। মেসেজটা এক তরুণীর কম্পিউটারে এসেছিল। সেই শুরু, এরপর তাদের পরিচয় ধীরে ধীরে প্রণয়ের দিকে গড়ায়। ১৪ বছরের তরুণী ভাবে, সে যার সাথে কথা বলছে সে একজন তরুণ। কিন্তু সত্য ছিলো অন্যরকম।

এভাবেই ব্যপারটি এগোতে থাকে। যা কিছু শুরু হয় তার সবসময়ই একটা শেষ সীমা থাকে। তেমনি একসময় এই ব্যপারটিরও সমাপ্তি ঘটে। তবে তা সুখের ছিল না, ছিল মেয়েটির সাথে অমর্যাদা ও অন্যায় সুবিধাগ্রহণের মাধ্যমে। ৩৪ বছর বয়সী লোকটা নিজেকে তরুণ হিসেবে পরিচয় দিয়ে সেই তরুণীর সাথে এমনটা করে।

এত ভালোবাসা, আবেগের কথা বলার মানুষটি আসলে ছিলো দুষ্ট চরিত্রের এক লোক। শুধু সেই মেয়েটিই নয়, প্রতিনিয়ত এভাবে প্রতারিত হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে থাকা তরুণ-তরুণীরা। তবে, এ ক্ষেত্রে তরুণীদের প্রতারিত হওয়ার সংখ্যাই বেশি। কারণ দেখা গেছে, একাকী যেসব তরুণ-তরুণী থাকে তারা বেশিরভাগ সময় কাটায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে। আর এ ধরনের দুষ্ট চরিত্রের মানুষেরা তাদেরকেই শিকার বানায়।

ইন্টারনেট মার্কেটিং ও নিরাপত্তা ২০০৪ সাল পর্যন্ত ডুবিটের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদে থাকার পরে তিনি অন্য ব্যবসা নির্বাচন করেন। ইন্টারনেট মার্কেটিং ও নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে কাজ করে যান। অনলাইনে যারা প্রতিনিয়ত এমন দুষ্ট মানুষদের শিকার হচ্ছে, তাদের কার্যক্রম রোধের জন্য তিনি ব্যবস্থা নিতে চান। অর্থাৎ, আমরা এমন একটি সফটওয়্যারের কথা ভাবতেই পারি, যা অনলাইনে মানুষের গতিবিধি লক্ষ করে এবং বেগতিক কিছু দেখলে সাথে সাথে রিপোর্ট করার ব্যবস্থা থাকবে। সেভাবে চিন্তা করতে গেলে বলা যায়, সাইবার অপরাধী অথবা অনলাইনে মানুষদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সুবিধা আদায় করে যারা, তাদের সংখ্যা অনেকাংশেই কমে যাবে।

বর্তমানে অ্যাডামের ভাণ্ডারে রাজস্ব সংখ্যা হিসাব করলে দাঁড়ায় ২ মিলিয়ন পাউন্ডের সমান।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।