আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এশিযা় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিনীদের কৌশলগত স্বার্থ, খিলাফতের আবির্ভাব ও চীনের উত্থান

good

১৯৯০ সালে সোভিযে়ত ইউনিয়ন তথা কমিউনিজমের পতনের পর উক্ত সমীক্ষায় প্রথমবারের মত এশিযা় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে সবচেযে় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। তাছাডা়, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থে এশিযা় অঞ্চলে তার উপস্থিতি জোরদার করার ঘোষণা দেয়। উক্ত রিপোর্টে যুক্তরাষ্ট্র ইসলামী খিলাফতের আবির্ভাব ও চীনের উত্থানকে তার নিরাপত্তার জন্য সামরিক প্রতিযোগী হিসাবে ঘোষণা দিযে় এই বিস্তৃর্ণ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির অপ্রতুলতার দিকটি সুস্পষ্ট করে এ অঞ্চলে আরো নতুন সামরিক স্থাপনা তৈরীকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যকম হিসাবে আখ্যা দেয়। খিলাফতের আবির্ভাবের ক্ষেত্রে বলা যায়, সোভিযে়ত ইউনিয়ন পতনের পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেছিল, ‘a new world order has emerged a new world order has emerged .’ মার্কিনীরা সেদিন ঠান্ডা যুদ্ধ সময়কার চিরশত্রু রাশিযা়র পতন ও খন্ড বিখন্ড হওযা়র এবং পৃথিবীতে তাদের একক আধিপত্য কাযে়মের উৎসব পালন করেছিল প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের মাধ্যমে। কিন্তু বিশ্বে পুঁজিবাদ তথা যুক্তরাষ্ট্রের একচ্ছত্র শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হওযা়র সময় থেকে মুসলিম বিশ্বে এক নতুন রাজনীতির প্রভাব দেখা যায়।

বিশেষতঃ মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিযা় এবং মধ্য এশিযা়র Commonwealth of Independent States (CIS) সমূহে ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা খিলাফতের প্রতি মুসলিম বিশ্বের জনগণ আকৃষ্ট হতে থাকে। মূলতঃ একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতারণা ও অনিবার্য ব্যর্থতা এবং ঠান্ডা যুদ্ধের বিজয় উৎসব তথা প্র ম ইরাক যুদ্ধে মুসলিম বিশ্বে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বাস্তবতায় ইসলামী শাসন তথা খিলাফতের পক্ষে মুসলিম জনগণের মতামত কমশ বাড়তে থাকে, যা সারা বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথা সমস্ত পশ্চিমা জীবন ব্যবস্থার জন্য হুমকি হিসাবে আবির্ভূত হয়। বিংশ শতাব্দীর শেষদিকে এবং একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে ন্যাটোর মহাসচিব Willie Claes প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয় যে, ‘‘The Alliance has placed Islam as a target for its hostility in place of the Soviet Union’| ’। যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের পশ্চিমা মিত্ররা মুসলিম বিশ্বে ইসলামী খিলাফতের আবির্ভাবকে ঠেকানোতাদের পররাষ্ট্রনীতির জন্য সবচেযে় গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসাবে আখ্যা দেয়। এরই প্রেক্ষিতে ৯/১১-র সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ আফগানিস্তান আকমণের প্রাক্কালে ঘোষণা দেয় যে, ̀This war will not be like the war against Iraq a decade ago, with a decisive liberation of territory and a swift conclusion. It will not look like the air war above Kosovo...Our response involves far more than instant retaliation and isolated strikes. Americans should not expect one battle, but a lengthy campaign, unlike any other we have ever seen. It may include dramatic strikes, visible on TV, and covert operations, secret even in success. We will starve terrorists of funding, turn them one against another, drive them from place to place, until there is no refuge and no rest. পশ্চিমা শক্তিগুলোর খিলাফতের আবির্ভাবের বিরুদ্ধে সামরিক যুদ্ধ চালিযে় যাবার লক্ষ্য সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল Richard Dannatt ঃ এর বক্তব্যেও সুস্পষ্ট হযে় উঠে, ̀there is an Islamist agenda which if we don't oppose it and face it off in Southern Afghanistan, or Afghanistan, or in South Asia, then frankly that influence will grow. It could well grow, and this is an important point, we could see it moving from South Asia to the Middle East to North Africa, and to the high water mark of the Islamic caliphate in the 14th, 15th century.Ó কিন্তু আফগানিস্তানের পর ২০০৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের মিথ্যা অজুহাতে ইসলামী খিলাফতের এক সমযে়র রাজধানী, মানব সভ্যতার এক উজ্জল ঐতিহ্যবাগদাদকে হিংস্র হাযে়নার মত ধ্বংস করে।

পরবর্তীতে ফালুজা, বসরা, বাগরাম, গুযা়ন্তানামো, আবু গারিবের মত ঘটনা,ড. আফিযা় সিদ্দিকী অপহরণ, পবিত্র কুরআন ও রাসূল (সাঃ) কে অপমানিত করা ইত্যাদির মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্ব ইসলামের বিরুদ্ধে তার কুসেডের পূর্ণ অভিযান জোরদার করে। এমন বাস্তবতায় মুসলিম উম্মাহ্ একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বেপশ্চিমা বিশ্বের এই সর্বাত্বক আগ্রাসন এবং অন্যদিকে তার শাসকদের নির্লজ্জ দালালীর বিরুদ্ধে ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থা িফরিযে় আনার জন্য রাজনৈতিক ও আদর্শিক সংগ্রামে লিপ্ত রাজনৈতিক নেতৃত্বকে প্রচন্ডভাবে সমর্থন দিতে শুরু করে। ইসলামী খিলাফত মুসলিম উম্মাহ্’র প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়। দক্ষিণ এশিযা় ও মধ্য এশিযা় খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য চূডা়ন্তভাবে প্রস্তুতি লাভ করে। ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে The National Intelligence Council of the CIA তার ১২৩ পৃষ্ঠার ""Mapping the Global Future" শিরোনামের এক প্রতিবেদনে ২০২০ সালের মাঝে ‘a rise of new Caliphate’ সমগ্র বিশ্বে মার্কিন ও তার মিত্রদের জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার জন্য সবচেযে় ভযা়বহ দিক হিসাবে আখ্যাযি়ত করে।

অন্যদিকে চীনের ক্ষেত্রে, প্রাক্তন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী কন্ডোলিৎসা রাইস ২০০০ সালে বিখ্যাত ফরেন এ্যাফেযা়র্স (Foreign Affairs)ম্যাগাজিনে চীন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বলেছিল, China ... resents the role of the United States in the Asia-Pacific region. ... China is not a 'status quo' power but one that would like to alter Asia's balance of power in its own favor. That alone makes it a strategic competitor.... আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে চীনের উত্থান বিষযে় যুক্তরাষ্ট্রের নযা় কৌশল সম্পর্কে ধারণা দিতে গিযে় কন্ডোলিৎসা রাইস বলেছিল "... ... the United States must deepen its cooperation with Japan and South Korea and maintain is commitment to a robust military presence in the region." এমনকি সা¤প্রতিক কাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র পীত সাগরে দক্ষিণ কোরিযা় বা জাপান সাগরে জাপানের সাথে যে বিশাল সামরিক মহডা় আযো়জন করেছে, ওযা়শিংটনে ডিসেম্বর ৭, ২০১০, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ও দক্ষিণ কোরিযা় যে তিন জাতি বৈঠক করেছে, দক্ষিণ কোরিযা়র রাজধানী সিউলে জি-২০ শীর্ষ সন্মেলনে চীনের মুদ্রা নিযে় জাপান, কোরিযা় ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ উদ্বেগ তা সবই চীন সর্ম্পকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গিরই বহিঃপ্রকাশ। আর তাই খিলাফতের আবির্ভাব ও চীনের উত্থান এই প্রেক্ষিতে মার্চ, ২০০৫ 2005 US National Defense Strategy তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ঝুঁকি হিসাবে নতুন করে চারটি অঞ্চল তথা: ইউরোপ, বঙ্গপোসাগর থেকে জাপান সাগর পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকা, দক্ষিণ পূর্ব এশিযা় এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে দক্ষিণ পশ্চিম এশিযা়কে উল্লেখ করা হয়। উক্ত প্রতিবেদনে বলা যে, ̀A network of forward facilities and capabilities, mainly in four critical regions, provided that the United States has unmatched capabilities to act globally. চলবে...


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।