আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অশ্রুর রসায়ন

তবে তাই হোক, ক্লান্তিহীন তিল তিল আরোহনে সত্য হোক বিক্খুব্ধ এই জীবন _____
চোখের জলের আলাদা এক আবেদন রয়েছে। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন কিংবা পরিচিতদের চোখে পানি দেখলে মানুষ চঞ্চল হয়ে ওঠে। তার কারণ জানতে চায়। শুধু আত্মীয়স্বজন কেন, পরের চোখের জলও অনেককে করুণার্দ্র করে; সামর্থ্য অনুযায়ী তা মোচনের চেষ্টাও চালানো হয়। তবে সবচেয়ে বেশি আবেদন মনে হয় নারীর চোখের জলের।

পুরুষ তার মা-বোন-মেয়ে-স্ত্রী-প্রেমিকা—এদের কারো চোখে জল দেখলেই নিজেকে স্থির রাখতে পারে না। চোখের জলের বেদনা কিংবা সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কবি নজরুল তো বিখ্যাত এক গানই লিখেছেন, ‘এত জল ও কাজল চোখে পাষাণী আনলে বলো কে...’। চোখের জলের পেছনের কারণ হলো মানুষের মনে অপ্রাপ্তি, বঞ্চনা বা হতাশার বিরুদ্ধে উজ্জীবিত ক্রোধ বা ক্ষোভের সর্বশেষ অনুভূতি। কোনো ব্যাপারে আঘাত পেলে প্রত্যাঘাতই হলো প্রাণীর স্বাভাবিক প্রবণতা। আর মানুষের পক্ষে যখন পাল্টা আঘাত করাটা সম্ভব হয়ে ওঠে না, তখনই ক্ষোভের বাষ্প চোখের জল হয়ে বেরিয়ে আসে।

আবার চোখের জল আপনার রাগকে মুহূর্তে করুণায় পরিণত করতে পারে। বিশেষ করে প্রেমিকার চোখের জলের অস্ত্রে তো চিরকালই ঘায়েল হয়ে থাকে প্রেমিক পুরুষ। এটা তাহলে কী? মায়া নাকি জাদু? নইলে মানুষকে অমন সম্মোহিত করে কী করে? কিন্তু সম্প্রতি ইসরাইলি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এটা কিছু নয়, স্রেফ কিছু পদার্থের রাসায়নিক মিশ্রণ। মানুষ যদি ওই রসায়নটা স্পষ্ট দেখতে পেত, তাহলে কি এভাবে সাড়া দিতে পারত? মনে করা হয়, সবচেয়ে বেশি মায়া মেয়েদের চোখের জলে। ইসরাইলি বিজ্ঞানীরা তাই তাদেরই ডেকেছিল চোখের জল দেয়ার জন্য।

তারা প্রথমে দেখতে চেয়েছিলেন নারীর চোখের জলের আলাদা কোনো গন্ধ আছে কিনা, যা পুরুষকে তার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে বাধ্য করে। তারা প্রথমে নারীর চোখের জল সংগ্রহ করেন। এরপর স্রেফ চোখের পানি হিসেবে তা পুরুষদের সামনে হাজির করে তার গন্ধ নিতে বললেন। ভেবেছিলেন, ওই পানি দেখে কিংবা শুঁকে পুরুষ দর্শকের মধ্যে হয়তো কোনো ধরনের চাঞ্চল্য বা ভাবান্তর সৃষ্টি হবে। কিন্তু গবেষকদের একজন ফ্রুুমিন বলেছেন, ‘আমরা অবাক হয়ে দেখলাম, দর্শকদের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়াই নেই।

মনেই হলো না, তাদের চোখে ওটা স্রেফ পানি ছাড়া আর কিছু। ’ গবেষকরা এরপর দর্শকদের চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছে—এমন কিছু নারীর ছবি দেখিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানতে চান। এ ক্ষেত্রে দেখা গেল, ক্রন্দসী নারীর ছবিও তাদের মনে বিচিত্র আবেগের সৃষ্টি করছে। সে আবেগে দুঃখ, করুণা এমনকি কেউ কেউ কামনার কথাও জানাল। সায়েন্স নামের সাময়িকীতে ফ্রুমিন ও তার সঙ্গীরা বলেন, সম্ভবত মানুষের চোখের জলে এমন কিছু রসায়ন আছে, যা মানুষের মনে ভাবান্তর ঘটায়।

তবে সেটা চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়লেই কেবল অনুভব করা যায়। ইসরাইলি গবেষকদের এই রিপোর্টের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে বেশ। কর্নেল ইউনিভার্সিটির একজন মনোবিজ্ঞানী টমাস ক্লেল্যান্ড বলেছেন, মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগ যে রাসায়নিকও হতে পারে, এরকম গবেষণা এর আগে আর হয়নি। ’ তবে আরেক মনোবিদ বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর জেমস চেরি বলেছেন, ‘এটা হতে পারে। তবে ওই ধরনের রসায়ন নিশ্চয় অন্য কিছুর মধ্যেও আছে।

আমরা শুধু এখনও সেগুলো শনাক্ত করতে পারিনি, এই যা। ’ সুত্র
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.