আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আল্লামা সাঈদির জন্য চোখের জল।

জামাত-শিবির দূরে গিয়া মর! আজ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদির বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অভিযোগের রায় ঘোষনা হয়েছে। রায়ে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, এ রায় বাংলাদেশের অনেক মানুষের পছন্দ হয়নি। সাঈদি এদেশে একজন ইসলামী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন একজন কারী।

আমার নিজের অভিজ্ঞতায় বলি, জামাত-শিবির পছন্দ না করলেও অনেকেই সাঈদিকে পছন্দ করতেন এবং এখনও করেন। সাঈদি এদেশের সাধারন ধর্মপ্রান মানুষের বৃহৎ অংশের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলেন। তার ওয়াজ মাহফিলে প্রচুর মানুষের ঢল নামতো। আজ সাঈদির রায় ঘোষনা হয়েছে। আমাদের ভাড়াটিয়া আংকেল-আন্টি অনেক টেনশনে ছিলেন।

আংকেল তো রায় ঘোষনা শুরু হবার পর থেকেই নফল নামাজে দাড়িয়ে গেলেন। আন্টি রোজা রেখেছেন। অথচ এরা দুজনই জামাত-শিবিরকে ঘৃনা করেন। বাচ্চু রাজাকারের ফাসির আদেশের পর এই দুজন মাংস-খিচুরী রান্না করে আমাদের পার্টি দিয়েছিলেন। অথচ সাঈদির ইস্যুতে তারা এ রায় মানতে পারছেন না।

সাবান কিনতে দোকানে গেলাম, দোকানদারও গম্ভীর। তিনিও সাঈদিকে পছন্দ করতেন। খুজে দেখেন, আপনার আশে পাশে হাজারো মানুষ পাবেন, যারা সাঈদিকে পছন্দ করতেন। ব্যাক্তি সাঈদিকে পছন্দ করতেন। ২১শে ফেব্রুয়ারী বন্ধুরা আড্ডা দিচ্ছিলাম।

আমি সাঈদির বিচারের প্রসঙ্গ তুলতেই দুয়েকজন তাদের মতামত জানালো। সাঈদিকে তারাও পছন্দ করে। আসলে সাঈদির ৭১ পরবর্তী লাইফষ্টাইল, তার ওয়াজ-তাফসীর, বক্তৃতা মানুষের মন জয় করে নিয়েছিল। আমাদের এই ভাড়াটিয়া আংকেল এর সাথে কথা বলছিলাম, তিনি বললেন, " ৭১এ তিনি কি ছিলেন ব্যাপার না, এখন তিনি কি সেটাই বড়, যুবক বয়সে তিনি ভুল করতেই পারেন। মানুষ মাত্রই ভুল।

তিনি অবশ্যই তওবা করেছেন। আল্লাহ চাইলে সবাইকে ক্ষমা করতে পারেন। সাঈদির ডাকে কত মানুষ ইসলাম গ্রহন করেছে, কত মানুষ সৎপথে এসেছে। সাঈদি রাজাকার হলেও আল্লাহ তাকে মাফ করে দিতে পারেন। " আপনি কি জানেন আমি উপরে যাদের উল্লেখ করেছি, তাদের কারও সাথেই আমি তর্কে যাইনি।

সাঈদির বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। বললে অনেক কিছুই বলতে পারতাম। প্রমানও দেখাতে পারতাম। কিন্তু আমার ইচ্ছা করেনি। এরা এতই অন্ধ ভক্ত হয়ে গিয়েছে যে এদের কিছু বলেও লাভ নেই।

এদের কিছুই বোঝানো সম্ভব নয়। সাঈদি হতে পারেন বড় আলেম, আল্লামা, কারী আমার কিছুই আসে যায় না। ৭১ এর পরবর্তী জীবন যাত্রাও আমার উপর প্রভাব ফেলে না। সাঈদির অনেক বড় ক্ষমতা ছিল। মানুষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা।

তিনি ইসলামের মোড়কে রাজনীতি করে গেছেন। ইসলামকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তার এই ইসলামী ভাবধারা সম্পূর্নই লোক দেখানো ছিল। তার ফোনালাপের কথাও জাতি ভুলেনি। সাঈদি ৭১ এর অপরাধের ক্ষমা পাবে না।

তাছাড়া সে সাধারন মানুষের কাছে কখনো ৭১ এর জন্য ক্ষমা চায়নি। ৭১ এর ভিক্টিমদের কাছে ক্ষমা চায়নি। সে যাদের কাছে অপরাধ করেছে তাদের কারও কাছে ক্ষমা চায়নি। আর এরা ক্ষমা না করলে সে ঈশ্বরের কাছেও ক্ষমার অযোগ্য। সাঈদি ইসলামকে পন্য রুপে বিক্রি করে জীবন চালিয়েছেন।

আমি সাঈদি ভক্তদের কিছু বলবনা, কারন তাদের বললে শুধু আমার মুখটাই ব্যাথা হবে, তাদের ভাবান্তর হবে না। সাঈদির ফাসির আদেশে আমি সন্তষ্ট, সচেতন জাতি সন্তষ্ট। শুধু কিছু দেশবিরোধী মানুষ আর কিছু ধর্মান্ধ মানুষ আজ চোখের জল ফেলছে। জাতি আজ কলঙ্কমুক্ত হলো। তবে এখনো অনেক পথ যেতে হবে।

সকল যুদ্ধাপরাধীর একমাত্র শাস্তি হিসেবে ফাসিই চাই। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.