আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাউন্ড কার্ড: খুব কি দরকার আজকালকার পিসিগুলোতে?

দিল ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা।

সাউন্ডকার্ড। এখনকার কম্পিউটারগুলো কিনবার সময় ক্রেতা যে নামটি প্রায় মুখেই আনেন না। আনবেনই বা কেন, বর্তমানের সব মেইনবোর্ডের সাথে বিল্টইন ভাবে যে কয়েকটি ডিভাইস দেয়া হয় সাউন্ড কার্ড তার মাঝে একটা। মেইনবোর্ড গুলো তিন চ্যানেল থেকে শুরু করে ছয় চ্যানেলের সাউন্ডকার্ড ধারন করে থাকে।

বেশিরভাগ ব্যবহারকারীর জন্যে এগুলো যথেষ্টের থেকেও বেশি। কিন্তু কিছু মানুষ আছে যারা শব্দের ব্যপারে অসম্ভব রকম সিরিয়াস ও খুতখুতে। তাদের সন্তুষ্ট করার সাধ্য এই বিল্টইন সাউন্ডকার্ডের ক্ষমতার বাইরে। সুক্ষ্ন সব ডিটেইলস সহ নানা রকম শাব্দিক বৈশিষ্ট দিতে পারে কেবল বিশেষ কিছু সাউন্ডকার্ডই। তাই আপনাদের সামনে সাউন্ডকার্ডের কিছু ফিচার নিয়ে আলোচনা করবো আজ।

কিভাবে কাজ করে সাউন্ড কার্ড? অনেক টেকনিক্যাল তথ্য আছে, যেগুলো আপনাকে বিরক্ত করে ফেলতে পারে। তবে ভালো সাউন্ড পেতে হলে অন্তত কিছু তথ্য জানা থাকলে নিঃসন্দেহে কাজে দেবে। আমরা যে শব্দ স্পীকারে শুনি, সেগুলো অ্যানালগ। অর্থাৎ এগুলো নিয়মিত শব্দ বা শব্দগুচ্ছ যা নির্দিষ্ট অথবা পরিবর্তনশীল কম্পাঙ্কের তীব্রতার বাড়া কমার উপর নির্ভর করে তৈরি হয়। ডিজিটাল সিস্টেম এ সিগনালগুলোকে একটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টের মাধ্যমে পরিমাপ করে।

এই চার্টে এক্স ও ওয়াই অক্ষ থাকে, একটি একক সময়ে কোন সিগনালের পীক বা সর্বোচ্চ অবস্থানটি ও তার কম্পাঙ্ক এই অক্ষের এক্স ওয়াই অবস্থান দিয়ে মেপে ডাটা ডিজিটাল তথ্য আকারে সংরক্ষন করা হয়। আবার যখন সেটাকে প্লে করবার দরকার হয়, সেই একই চার্ট থেকে রেফারেন্স নিয়ে ঠিক সেইভাবে আবার একই কম্পাঙ্কে ও তীব্রতায় শব্দ তৈরি করা হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় স্যাম্পলিং। এই স্যাম্পলিং আবার দুভাগে বিভক্ত। স্যাম্পলিং রেট হলো প্রতি একক সময়ে কতবার একটি সাউন্ড স্যাম্পলকে নোট করা হয়েছে।

ব্যপারটাকে ভিডিও এর ফ্রেমরেট এর সাথে তুলনা করা যেতে পারে। যদি একটি ভিডিও ক্লিপ প্রতি সেকেন্ডে পাচটি ফ্রেম হিসেবে রেকর্ড করা হয়, তাতে ভিডিওটি বোঝা যাবে ঠিকই, কিন্তু এর মান কখনই বাস্তব চোখে আমরা যা দেখি তার মতো হবে না। ছবি কেটে কেটে যাবে। আসলের কাছাকাছি মানের ভিডিও পেতে হলে এই ভিডিওর ফ্রেমরেট অবশ্যই ২৪ বা তারও বেশি করতে হবে। কেবল তাহলেই একটি স্মুথ চলমান ছবি আশা করা যেতে পারে।

তাই শব্দের ক্ষেত্রেও, এই স্যম্পলিং রেট যত বেশি হবে, সেই শব্দের মানও তত বেশি বাড়বে। আর যে সাউন্ডকার্ড বেশি স্যাম্পলিং রেট সাপোর্ট করতে পারে, সেটা থেকে তুলনামুলক ভালো সাউন্ড পাওয়া যাবে। স্যাম্পল রেটকে সাধারনত কিলোহার্টজ মানে প্রকাশ করা হয়। সবথেকে মানসম্পন্য সাউন্ড দিতে সেই কার্ড যেটা ৪৪ কিলো হার্টজ স্যাম্পলিং সাপোর্ট করে থাকে। স্যাম্পলিং এর আরেকটি ফিচার হলো স্যাম্পল রেজুলেশন।

এ ক্ষেত্রেও স্যাম্পল রেজুলেশনকে একটি ছবির রেজুলেশন এর সাথে তুলনা করা যায়। আমরা অনেকেই ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তুলে থাকি। কম রেজুলেশনের ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলো ঝাপসা, কম ডিটেইলস, বড় করতে গেলে ফেটে যাওয়া এসব সমস্যায় ভুগে থাকে। ছবি ক্যামেরার ডিসপ্লেতে ভলোই দেখায়, তবে প্রিন্ট করতে গেলে বা বড় স্ক্রীনে দেখতে গেলে বোঝা যায় সমস্যাগুলো। সেরকম ভাবেই কম স্যাম্পল রেজুলেশনের সাউন্ডকার্ডগুলোর কাছ থেকে ভালো ডিটেইলসের সাউন্ড আশা করা যায়না।

স্যাম্পল রেজুলেশনের একটি ভালো উদাহরন হল এমপি ৩ ফাইলের বিটরেট। আমরা অনেকেই খেয়াল করেছি এই ফরম্যাটের গানের ফাইলের সাথে অনেকসময় ১২৮, ১৯৬ অথবা ৩২০ কিলোবিট লেখা থাকে। এ তথ্যগুলোই হলো স্যাম্পল রেজুলেশন তথ্য। যতবেশি বিটরেট. ততবেশি কোয়ালিটি, ততবেশি ফাইল সাইজ। আবার একই সাথে, কম বিটরেট হলে শব্দ মান কমতে থাকে।

যত কমবে, তত বেশি নয়েজ বা বাড়তি বাজে শব্দের প্র্রকোপ বাড়তে থাকবে। সাউন্ড সিস্টেমের সাথে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যে শব্দটির, তা হলো সারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেম বা থ্রিডি সাউন্ড। এটি এমন একটি সাউন্ড ব্যবস্থা যেটা একজন শ্রোতাকে ত্রিমাত্রিক পরিবেশে শব্দ শুনবার অভিজ্ঞতা দেয়। শ্রোতাকে ঘিরে বিশেষ কৌনিক অবস্থান থেকে তার বা তাদের উদ্দেশ্যে শব্দ নিক্ষেপ করার এই প্রক্রিয়াটি উদ্ভাবিত হয় ডলবি ডিজিটাল ল্যাবরেটরিতে। ডলবি সাউন্ড সিস্টেমে ক্ষেত্র ভেদে পাচটি থেকে সাতটি ভিন্ন ভিন্ন চ্যানেলে বিভিন্ন শব্দ সরবরাহ করা হয়।

একে বলে মাল্টি চ্যানেল সাউন্ড সিস্টেম। মাল্টি চ্যানেল সাউন্ডের সবথেকে ভালো উদাহরণ হতে পারে স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেম। মুভিতে একটি গাড়ি আসবার শব্দ হলে আমরা আগে ডানদিকে অথবা বামদিকে থেকে শব্দ পাই। ঠিক যেমন পেতাম বাস্তবে গাড়িটি বাম অথবা ডানদিকে থেকে আসলে। ডলবি সাউন্ড সিস্টেম সিনেমা বা মুভী থিয়েটারে ব্যবহৃত হলেও আজ অবস্থা ভিন্ন।

বর্তমান সময়ে যে কেউ একটু টাকা পয়সা খরচ করে হোম থিয়েটার সিস্টেম বানিয়ে নিতে পারেন। সেগুলো হয়তবা থিয়েটার হলের মতো হবে না, তবে সারাউন্ড সাউন্ড যে তিনি পাবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। এখনকার আধুনিক সাউন্ডকার্ড গুলো ৫.১ ও ৭.১ চ্যানেল সাউন্ড সাপোর্ট করে। তবে ভালো সাউন্ড পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই একটি ভালো স্পীকার সিস্টেম ব্যবহার করতে হবে। বাজারে এখন যে সাউন্ড কার্ড গুলো পাওয়া যায়, সেগলোর মাঝে ক্রিয়েটিভের সাউন্ডকার্ডগলো মনোযোগের দাবিদার।

সেই প্রথম থেকেই ক্রিয়েটিভ সাউন্ড ডিভাইসের ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল দেখিয়ে আসছে। বর্তমান বাংলাদেশের বাজারে ভালো সাউন্ডকার্ডের কথা বললে অনেকেই ক্রিয়েটিভকে আগে নজর করবেন। ইকোনমিক, মিড ও অ্যাডভান্সড ইউজারদের জন্যে ভিন্ন ভিন্ন সাউন্ড ডিভাইস বাজারজাত করেছে তারা। ক্রিয়েটিভ ছাড়াও আসুস এরও কিছু ভালো সাউন্ড ডিভাইস বাজারে চলছে। যেমন, ক্রিয়েটিভ সাউন্ড ব্লাস্টার ৫.১ কার্ডটি ।

আবার যদি তুলনামূলক ভালো ফলাফল চান, তবে পছন্দ করতে পারেন ক্রিয়েটিভ সাউন্ড ব্লাস্টার অডিজি ভ্যালু অথবা আসুস জোনার এইচ ডি এভি ১৩ কার্ডটি । সবথেকে ভালো ফলাফল পেতে হলে অথবা প্রফেশনাল কাজ যেমন হাই কোয়ালিটি অডিও রেকর্ডিং অথবা উচু মানের অডিও এডিটিং ইত্যাদি কাজের জন্যে অবশ্যই নিতে হবে ক্রিয়েটিভ সাউন্ড ব্লাস্টার এক্স-ফাই টিটানিয়াম কার্ড অথবা আসুস জোনার ডিএক্স/এক্সডি ৭.১ কার্ড। ভালো সাউন্ড পেতে হলে ভালো স্পীকার অত্যন্ত জরুরী সে তো আগেই বলা হয়েছে। তাই চেষ্টা করুন একটি ভাল স্পীকার সিস্টেমও সাথে কিনে নিতে। স্পীকার সিস্টেম নিয়ে অভিজ্ঞতা অল্প।

এটা ছেড়ে দিচ্ছি অন্য ব্লগারদের হাতে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৮ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.