আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্টপ জেনোসাইড-মুক্তিযুদ্ধের গনহত্যার উপর নির্মিত চলচ্চিত্রটি কোথায়??

মানুষ আসে মানুষ যায় কিন্তু সময় যায় চিরতরে

স্টপ জেনোসাইড বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র। ইংরেজি "স্টপ জেনোসাইড" শব্দবন্ধের অর্থ "বন্ধ কর গণহত্যা"। শহীদ বুদ্ধিজীবি ও বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে ১৮ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই তথ্যচিত্রটি তৈরি করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতে আশ্রয়গ্রণকারী বাঙ্গালীদের দুঃখ-দুর্দশা, হানাদার পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ, ভারতে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের দিনকাল প্রভৃতি এই তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছিল। জহির রায়হান একাত্তরের এপ্রিল-মে মাসের দিকে এই তথ্যচিত্র তৈরির পরিকল্পনা করেন।

তিনি বিশ্বাস করতেন চলমান গণহত্যা ও মানবতার লাঞ্ছনার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরি করার জন্য প্রামাণ্য চলচ্চিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সহকারী আলমগীর কবির কে সাথে নিয়ে তিনি স্টপ জেনোসাইডএর কাজ শুরু করেন। মুজিবনগর সরকারের তথ্য ও চলচ্চিত্র বিভাগ আর্থিকভাবে সহায়তা করতে সম্মত হয়। কিন্তু পরে এই ছবিটি নিয়ে প্রবাসী সরকারের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্ট হয় ; কারণ ছবিটির কোথাও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ছিল না। তথ্যচিত্রে জহির রায়হান চেয়েছিলেন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যুদ্ধের রাজনৈতিক দিকটার থেকে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ, গণহত্যা, শরনার্থীদের দুরবস্থা আর স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকটা বেশী করে তুলে ধরতে।

তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন সারাবিশ্বই মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বদানের বিষয়ে ওয়াকিবহাল, তাই সেটা আর নতুন করে কিছু বলার নেই। পরে তাজউদ্দীন আহমেদ সহ অন্যরা পরিস্থিতি সামাল দেন। [১] [২] । এর প্রথম প্রদর্শনী হয় এক অজ্ঞাত স্থানে, যেখানে অস্থায়ী রাস্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ, মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরি করার ক্ষেত্রে 'স্টপ জেনোসাইড' অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রেখেছিলো।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে এখন পর্যন্ত নির্মিত ছবিগুলোর মধ্যে শিল্পগত সাফল্যের দিক থেকে এই চলচ্চিত্রটিকে শীর্ষে স্থান দেয়া হয়ে থাকে। [৩] বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ভারতস্থ অস্থায়ী সরকারের চলচিত্র বিভাগের এক কর্মকর্তা দেশে ফিরে আসার সময় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স থেকে ছবিটির ফিল্ম আশ্চর্যজনক ভাবে হারিয়ে যায়। ঐ কর্মকর্তার সব জিনিস পত্র ঠিক মত দেশে আসলেও "স্টপ জেনোসাইডের" ফিল্ম যে ব্যাগে ছিল তা হারিয়ে যায়। পরবর্তিতে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স ঐ কর্মকর্তাকে এই মহামুল্যবান সম্পদ খোয়া যাবার খেসারত স্বরূপ ৩০০ রূপির একটি ক্ষতিপূরণ পাঠিয়ে দেয়। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে বিজয়ের এই মাসে-যখন চারিদিকে দাবী উঠেছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের।

ঠিক সেই সময়ে আমাদের দাবী উদ্ধার করা হোক জহীর রায়হানের সেই কালজয়ী চলচ্চিত্র, স্টপ জেনোসাইড। void(1);

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।