আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রামান্যচিত্রঃ স্টপ জেনোসাইড

ফটোগ্রাফি, ভ্রমন, সিনেমা, ওয়ার্ডপ্রেস, এবং সব এলোমেলো ভাবনা

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি আর্মি বাংলাদেশে যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন চালায়, তা বিশ্ববাসীর কাছে জানাতে স্বাধীনতা যুদ্ধর সময় জহির রায়হান এই প্রামান্যচিত্রটি তৈরী করেন। ভারতীয় বন্ধুদের ব্যাক্তিগত আর্থিক সহায়তায় তিনি সিনেমাটি নির্মান করেন। এটি দেখে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এতটাই নাড়া খেয়েছিলেন যে তিনি তার ফিল্ম ডিপার্টমেন্টকে সিনেমাটির স্বত্ব কিনে নিয়ে সেটিকে সারাবিশ্বে প্রচারের নির্দেশ দেন। জহির রায়হানের সিনেমার নাম শুনেছি, কিন্তু কখনো দেখা হয় নি। কাল প্রথম সিনেমাটি দেখলাম।

দেখে চোখের পানি কিছুতে আটকে পারছিলাম না যখন দেখলাম যুদ্ধের সময় ভারতের শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া মাত্র ১৫-১৬ বছরের এক কিশোরির মুখ, যাকে মেঝেতে ফেলে ধর্ষণ করেছে ছয় জন পাকিস্তানী সেনা। যাওয়ার সময় মা-বাবা-ভাই-বোন সবাইকে গুলি করে হত্যা করেছে এবং আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়ে গেছে তাদের ঘর। খুব কষ্ট হচ্ছিল ভাবতে যে সেই সব নারকীয় পিশাচেরা আজো বাংলার মাটিতে সদর্পে ঘুরে বেড়ায়। বড় বড় দাড়ি টুপি লাগিয়ে বাংলার কাফেরদের নসিহত করে। আরো কষ্ট লাগে যখন দেখি আজো বাংলারই সন্তান তাদের সমর্থন দেয়।

ইলেকশনে ভোট দেয়। যুদ্ধাপরাধীর বিচারের কথা শুনলে প্রকাশ্যে টিটকারী করে। মনে হয়, একাত্তরের যুদ্ধ এখনো শেষ হয় নি। যতদিন প্রতিটি ঘাতকের প্রকাশ্য রাজপথে ফাঁসি না হবে, ততদিন এ যুদ্ধ চলবে। চলবে ততদিন, যতদিন জারজ সন্তানেরা ধর্মের নামে সমর্থন দিয়ে যাবে সেইসব নরপশুদের।

নিজের যায়গা থেকে আমরা তাদের প্রতিরোধ করব, যতদিন এই শরীরে বইবে এক ফঁোটা পরিমান রক্ত! জহির রায়হান আজ বেঁচে নেই। যুদ্ধর পরে নিখঁোজ হওয়া বড়ভাই শহীদুল্লাহ্ কায়সারকে খুঁজতে মিরপুরে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। শোনা যায়, বিহারীদের হাতে খুন হয়েছেন তিনি। বার বার শুধু মনে হয়, জহির রায়হানের মতো মানুষেরা বেঁচে থাকলে স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে আজ এত বিভ্রান্তি এদেশের মানুষের মধ্যে কিছুতেই থাকতো না। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা করতে পারতো এদেশের কোন রাজনৈতিক দল।

সেজন্যই যুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে হত্যা করা হয়েছে বাংলার সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানদের। ১৯ আগষ্ট জহির রায়হানের জন্মদিন। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। "স্টপ জেনোসাইড" সিনেমাটি দেখা যাবে বাংলা সিনেমা আর্কাইভে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.