আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এসাঞ্জের মুক্তি চাই। জয়তু তথ্য মুক্তিযুদ্ধ।



জুলিয়ান এসাঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ উনি জোর করে লগ ইন বা হ্যাকিং করে শীলা কী জওয়ানিকে অশ্রদ্ধা করেছেন শরীর মুক্তির দেশ সুইডেনে। গিভ মি আ ব্রেক, যে দেশের সিটি সেন্টারের ডিসকো থেকে ইউনিভার্সিটির ডর্মে একটা বিয়ার অফার করে চোখে চোখ পেতে কিছুক্ষণ গম্ভীর থেকে ঠোটের কোণায় দুষ্টু হাসির রেখা তুলে গিভ মি আ ফাইভ করলেই নেফারতিতি থেকে আফ্রোদিতি স্টুডিও এপার্টমেন্টের চাবি হাতে তুলে দিয়ে পাশে বসে গাড়ি চালায় আর গুণগুণ করে গান করে ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে,তারপর শ্যাম্পেন বোতল খুলে টেক মি টু নাইট এনিথিং ইজ পসিবল বলে সুশীল সম্মতিতে পাসওয়ার্ড দেয়, সেই দেশে এসাঞ্জের মতো ৩৯ বছর বয়েসী অস্ট্রেলীয় যুবক কোন বরফকুমারীকে হ্যাকিং করেছে,এটাতো একেবারেই সরাইলে শেকল তুলে দিয়ে হ্যাকড জরিমনের সঙ্গে জুলিয়ানের বিয়ের আগের পর্ব মনে হচ্ছে। বর্তমান পর্বটি লিখেছেন হিলারী ক্লিনটন। মনিকা লিভনিসকি গল্পটিও সম্ভবত তারই লেখা। হিলারী ক্লিনটন ওয়ান ওয়ার্ল্ড অর্ডারের ছাত্রী, ক্লিনটনকেও কাজ করতে দেননি ঘ্যান ঘ্যান করে, এখন ওবামার পথে কাঁটা বিছিয়ে দেয়াই এই লৌহমানবীর প্রতিদিনের কাজ।

হিলারী ক্লিনটন নিজের মেধাকে ওভারএস্টিমেট করেছিলেন। তিনি বুশের কাজটাই লুকিয়ে করতে গিয়ে মাকড়সার জালে জড়িয়ে গেলেন। উইকিলিক্স সেই জাল বিছিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার সমস্ত মানবাধিকার লংঘন ও যুদ্ধাপরাধের তথ্য হিলারীর সিন্দুক থেকে চুরি করেছে। হাসিনা-খালেদা-মনমোহন-জারদারির এবং দক্ষিণএশিয়ার রাজনীতি-ব্যবসার আদার ব্যাপারীদের যাদের কাছে টাইটানিকের ডুবে যাবার খবর আছে তারা নড়ে চড়ে বসেছেন। ব্যাপারটা কি।

কি হচ্ছে,অফিসিয়াল সিক্রেসি এক্টের তেজারত তো উজাড় হয়ে যাচ্ছে। এটা শুধু হিলারীর সমস্যা নয়, হিলারী বা ওয়াশিংটনের ওয়ান ওয়ার্ল্ড অর্ডারের এজেন্টদের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার যেসব নেতা নেত্রীর চিঠি চালাচালি হয়েছে, সে সবি এসে যাবে ধীরে ধীরে, স্ট্যাচু অব লিবার্টীতে চিড় ধরেছে, মার্কিন দাদাগিরির সমস্ত গোপন তথ্য এখন স্ট্রবেরি-আম-খেজুর-জাম জনতার জিমেইল ইনবক্সে। কেউ কেউ ডাউনলোড করে পড়ছেন। চেগুয়েভারাকে বলিভিয়ায় গোপন কারাগারে সি আই এ এজেন্ট গুলি করে মারার আগে চে বলেছিলেন, আমাকে মেরে ফেলতে পারো,কিন্তু আমার আইডিয়া, সাম্রাজ্যবাদের মুখোশ খুলে দেবার আইডিয়াকে কিভাবে হত্য করবে। সুষম বন্টনের মানবিক গোলক রচনার প্রধান শত্রু ওয়ান ওয়ার্ল্ড অর্ডারের ইলুমিনেত্তি সমাজ।

যারা অর্থনীতির রোবোট দিয়ে সমাজকে শাসন করে। বন শহরের রয়টার্স ফ্যামিলি পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী পরিবার। এরা গোলকের যে কোন রাষ্ট্রের চেয়ে ধনী। রয়টারের পাঁচ ছেলে গোটা ইউরোপের প্রধান ব্যাংক গুলোর ওপর মালিকানা প্রতিষ্ঠা করার পর এমেরিকা সহ গোটা পৃথিবীতে তাদের পুঁজি লগ্নি করে, আজ অব্দি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় একক মালিকানা। ফ্রি মেসেনারির অধরা দর্শনটি এসাঞ্জের জালে ছায়ানর্তকদের মুখোশ উন্মোচনের অপেক্ষায়।

চে গুয়েভারা সেই আইডিয়ার কথা বলেছিলেন যা যুদ্ধবাজ শোষকদের মুখোশ উন্মোচন করবে। ক্যানাডার এক নেতা এসেঞ্জকে হত্যা করার পরামর্শ মিডিয়ায় দিয়েছেন, এতো আরেক ওসামা বিন লাদেন। প্রকাশ্যে নরমুন্ডুর এলান দেয়ার পরেও ইন্টারপোল তাকে গ্রেফতার করেনি, এসেঞ্জের সুইডিশ ইভহ্যাকিং এর সরাইল ফাঁসাইয়া দিমু কেস নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করছে। বাংলাদেশে যেমন মতিউর রহমান বা শফিক রেহমান বা মাহমুদুর রহমান বা ফরহাদ মাজহার বা অধ্যাপক ইউনুস এদের প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকান্ডে যদি কোন দুর্নীতি থাকে তা ধরতে না পেরে নানারকম কইয়া দিমু কেস দিয়ে পুলিশ ডনবৈঠক করছে আর এসেঞ্জের উইকীলিক্স জাহাজের খবর ভেবে আদার কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতা,ব্যবসায়ী-সেনা-আমলা-এনজিও-ধর্ম ব্যবসায়ীর প্রতিটি তথ্য এখন তিরিশের নীচের সিটিজেন জার্নালিস্টরা সংগ্রহ করছেন।

বাংলাভাষী অনেক জুলিয়ান এসাঞ্জ ওরফে জলিল আশরাফ আছে। এরা মোস্ট সাকসেসফুল ড্রপ আউটস অফ বাংলাদেশ এডুকেশন সিসটেম। এরা অফিসে চে গুয়েভারার টিশার্ট পরে বসদের ঘৃণাভাজন হয়। এরা ইনফরমেশন ফ্রিক। জীবনে কিছুই করতে পারার কথা না কিন্তু কোন একটা কাজ এরা এতো ভালো পারে যে বস না দেখার ভান করে সহ্য করে।

এরা তথ্যের রবিন হুড। এদের চাহিদা খুব বেশী নয়। ভ্রমণ এদের প্রিয়। ইভদের ব্যাপারে আগ্রহ বেশ কম। ঢাকার জলিল আশ্রাফ প্যারিসের মুলানরুশের নায়িকার সঙ্গে চ্যাট করে, বাস্তবের শীলাদের সঙ্গে খুব ভদ্র ভাবে মেশে।

জুলিয়ান সম্পর্কে ওয়াশিংটনের তুখোড় প্রতিশ্রুতিশীল সাংবাদিকিনীরা বলছেন, যে লোক লিভিং লেজেন্ড হয়ে গেছে তার আর ভয় কী? মিডিয়া আছে তার সাথে। নিউইয়র্কের তথ্য আবেদনময়ী টিভি হোস্ট্এরা অন দ্য স্ক্রিণ জুলিয়ানের সত্য শিকারের ব্যাগপ্যাকার মৃগয়াকে অভিনন্দন জানাচ্ছে, আর ঘষেটি বেগম স্ট্যাচু অব লিবার্টির ফাটল বাঁচাতে সরাইলের ধর্ষণ মামলা ফেঁদেছেন সুইডেনের কাপুরুষ আদালতে, সেখান থেকে তাকে পেন্টাগণে চা খেতে নিয়ে যাবার কাজটা ইন্টারপোল সি আই এর স্পেশাল এজেন্টদের হাতে দিয়ে দেবে। হিলারীর মুল্লুক, আমাদের কালো ছেলে ওবামা পদ্মলোচন ভাবছেন শান্তির নোবেল প্রাইজটা এসেঞ্জকে জেলখানায় একটা জয়েন্ট ফূঁকতে ফুঁকতে দিয়ে দেবেন। কিন্তু এসেঞ্জতো বাংলাদেশের জলিল আশ্রাফ না যে তাকে এনকাউন্টারে মেরে দেবেন। এসাঞ্জ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক।

সিডনীতে কেউ জিজ্ঞেস করেনি এসাঞ্জ আওয়ামী লীগ না বিএনপি, এসাঞ্জ অস্ট্রেলিয়ান, সুতরাং তার মানবাধিকার যাতে লংঘন না হয় সেদিকে নজর রেখে উইকীলিক্সে গোমর ফাঁক হবার জন্য ওয়াশিংটনকে দায়ী করেছে অস্ট্রেলীয় সরকার। কূটনৈতিক সম্পর্কের ৩৬০ ডিগ্রী অবস্থান! একজন নাগরিক যার বিরুদ্ধে সামনে ইভ হ্যাকিং এর অভিযোগ পেছনে ওয়াশিংটনের অফিশিয়াল সিক্রেট এক্টস ও এসপিওনাজ রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলা, অস্ট্রেলিয়ার প্রথম কাজ সে এসাঞ্জের মানবাধিকার নিশ্চিত করা। চে গুয়েভারার ইক্যুইটির আইডিয়া কেন জুলিয়ান এসাঞ্জের মাথায়, ইঙ্গ-মার্কিন-জার্মান ইলুমিনেত্তি সমাজ চের এই সাম্যের ভাইরাস নির্মূল করতে চায়। কিন্তু এসাঞ্জের পক্ষে তৃতীয় গোলক যুদ্ধে চে গুয়েভারার হ্যাকাররা যুক্ত হয়েছে,তারা সুইডেন,সুইটজারল্যান্ডে এসাঞ্জের শত্রু প্রতিষ্ঠানের তথ্যশালা লুন্ঠন করেছে। এসাঞ্জ বার বার বলেছেন সত্য উন্মোচন কোন অপরাধ হতে পারেনা।

এখন পর্যন্ত মার্কিন প্রশাসন বুঝতে চেষ্টা করছে টুইনটাওয়ার লাদেন হামলার চেয়ে এসাঞ্জের তথ্য হামলা বেশী ক্ষতি করে ফেললো কিনা। এসাঞ্জকে নিয়ে ঘষেটি ও তদীয় চাকরেরা যত লেবু কচলাবে, যত বেশী তেনা পেচাবে তত দ্রুততার সঙ্গে স্ট্যাচু অব লিবার্টি ধসে পড়বে। নোয়াম চমস্কি গ্রীণ টিতে চুমুক দিয়ে মৃদু হাসছেন। ম্যাকিয়াভেলীর প্রাসাদের কৌটার মধ্যে লুকিয়ে থাকা সাদা-কালো-বাদামী জনতার প্রাণভ্রমর উইকীলিক্স মুক্তি দিয়েছে। সরকারী আর কর্পোরেট মিডিয়ার শোষণের বিপরীতে উইকীলিক্সের এই সাফল্য; ইতিহাসের চাকাটাকে শঠতার ল্যাবিরিন্থ থেকে উদ্ধার করে সত্যের ড্রিম শাটলে বসিয়ে দিয়েছে।

ফলে জগত জোড়া ভার্চুয়াল বন্ধুতার আশীর্বাদ উইকীলিক্স ও এসাঞ্জের সঙ্গে। ভয় পেওনা এসাঞ্জ সক্রেটিসের চ্যালা, চে গুয়েভারার মৃত্যঞ্জয়ী স্কোয়াড,গান্ধী, কাস্ত্রো বা বঙ্গবন্ধুর চেলা,মার্টিন লুথার কিং বা ম্যান্ডেলার শিষ্যরা, কনফুসিয়াসের অনুসারীরা, গোলকের আটানব্বুই ভাগ সত্য-সুন্দর-মঙ্গল প্রিয় মানুষ তোমার সঙ্গে আছে। জয়তু তথ্য মুক্তিযুদ্ধ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.