আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রবীন্দ্রপ্রণাম -আবদুশ শাকুর


রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি সবসময়ই আকস্মিক, অনুমিত সম্ভাবনার সকল সীমারই বাইরে। অন্যদের সঙ্গে তাঁর প্রতিভার তুলনার অবকাশই নেই কোনো। কেননা অন্যরা ব্যক্তি, রবীন্দ্রনাথ পরিব্যক্তি। উদ্ভিদবিদ্যায় পরিব্যক্তি হল মিউটেশন-এর পরিভাষা। পুষ্পজগতে প্রকৃতির এমনি খেয়ালী সৃষ্টিকে বলে ‘স্পোর্ট’-- যেমন ‘পিস’-নামক ঐতিহাসিক গোলাপটির বংশধারার পরম্পরাচ্যুত এক ব্যতিক্রান্ত নিদর্শনস্বরূপ গোলাপবিশ্বে ফুটেছে ‘শিকাগো পিস’ (নামকরণটি শিকাগোতে ফুটেছিল বলে)।

তেমনি মনুষ্যবিশ্বে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও জন্মেছেন প্রকৃতির আকস্মিক খেয়ালেই। অন্যরা প্রতিভার বরপুত্র হলে, রবীন্দ্রনাথ প্রতিভার বিশেষ সংজ্ঞা। নবনবোন্মেষশালিনী প্রজ্ঞার মানুষী মূর্তি তিনি। তাই রবীন্দ্ররহস্যের যেদিকেই তাকাই কেবল এই সত্যই দেখতে পাই যে অনৈসর্গিক এই শিল্পীর সৃজনধর্মী চিত্তবৃত্তি সর্বদাই অন্যথাচারী, কিন্তু চিরস্থায়ী। তাই অদ্ভুতকর্মা এই সার্বক্ষণিক শিল্পীকে এক জন্মে নয়, বহু জন্মেও নয়, এক প্রজন্মে নয়, বহু প্রজন্মেও নয়, এক শতকে নয়, বহু শতকেও নয়-- এককথায় রবীন্দ্রনাথকে সম্পূর্ণরূপে জানা হয়তো সম্ভবই নয়।

তাই আমাদের কেবল পড়েই যেতে হবে তাঁর সাহিত্য, শুনেই যেতে হবে তাঁর সংগীত, দেখেই যেতে হবে তাঁর চিত্র, নিয়েই যেতে হবে তাঁর শিক্ষা, ভেবেই যেতে হবে তাঁর কথা। তাই বলতে হয় যে তাঁকে পড়া-শোনা-দেখা, তাঁর শিক্ষা গ্রহণ করা, দীক্ষা অনুসরণ করা-- এই সমস্ত ক্রিয়ারই ‘টেন্স’ বা কাল হল ‘প্রেজেন্ট কন্টিনুয়াস টেন্স’ বা ‘ঘটমান বর্তমান কাল’। এ কখনোই ‘প্রেজেন্ট পারফেক্ট টেন্স’ বা ‘ঘটিত বর্তমান কাল’ হবে না। বলতে চাচ্ছি-- রবীন্দ্রনাথ কারও পঠিত হয়ে যাবেন না কখনো, সবার পঠমানই থাকবেন সর্বদা।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.