আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোথায় যাচ্ছি আমরা ?



বেহায়ার পশ্চাদ দিক থেকে তাল গাছ বেড় হলে, বেহায়া বলে তার ছায়া হচ্ছে। বঙ্গালী বা বাংলাদেশী রাজনৈতিক সিন্ডিকেটগুলো বর্তমান সময় পরিকল্পীত অরাজগতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে অতীত ধারার কথিত স্বৈরাচার বিরোধী নগদ গণতন্ত্রীরা। বিশেষ করে যে সময় ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ জাতির সামনে পায় হেটে আসে। তখন রাজনৈতিক লেগোর সিন্ডিকেটগুলো শ্লোগানের সুরে প্যারোডি গেয়ে ওঠে, ‘ এখানে এসো না এ তলাটটা তস্করী মূলুক’। ‘ চাঁদা ও ভাই ধাঁধাঁ উভয় হলো জামানার চালু এ্যঁড়ে ও বকনা ।

কেন এখন তস্করি মহড়ার গতানুগতিক কাজ-কারবার বজায় থাকবে? দেশে যেন কেউ নাই যে, জবাব দেবে বা নেবে ! এখনও সেই আলীবাবা রাজ্যের হাওয়া ভবনের তাওয়া গরম অধ্যায় বজায় আছে পুর্ণদ্যোমে বাজার সমাচারে বলে। তাইতো হট্রগোল পাকালেই লুটের ভাগা এসে হাজির হবে। বেচারা ‘গণ’ রিপাবলিক করেও চাকরত্ব ঘুচাতে পারলো না সমাজ থেকে। এতো জীবন-রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন রিপাবলিক বাংলাদেশেও। এখনও কুর্নিশীয় অধ্যায় বজায় আছে শাসক নামক ফকরদের দরবারে যেন ভিক্টোরিয়ার রক্ষিতার সন্তানের ওয়ারেশ মালিকানার দাবীর ভিত্তিতে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা , রাজশাহীর ও চট্রোগ্রাম ও জাতীয় সংসদ ( ৫৪সালের যুক্তফ্রন্টের আমলে সংসদে ডেপুটি স্পিকার আহত এবং মৃত্যু ঘটনা ঘটে ) ইত্যাদির মধ্যে সমসাময়িক ঘটনাগুলো অতীতের রাজনৈতিক তস্করি ঘটনার ‘ ডিজিটাল সূচনা ’ শিরণাম দিতে হচ্ছে।

আমাদের চলার গতি রুদ্ধ করতে সম্রাজ্যবাদ, স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়ীক ইত্যাদি সহ যেকোনো রাজনৈতিক দাওয়াই বিতারনে ব্যস্ত হয়ে জান এই সকল কুরু-পান্ডবেরা এবং তাদের মুনি-ঋষিদের পরামর্শে। কিমত্ত কেন ? সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রীয় সেবকদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করেছে সকলের পরামর্শে । কিমত্ত ভর্তুকির উৎপাদিত কৃষিপণ্য আলু, টমেটো ও সীম ইত্যাদি যেন ঘাড়ের বোঝা হিসাবে বিরাজ করছে ভূক্তভুগি কৃষকদের। ভোগ্যপণ্যের মূল্য যেন সরকারকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখাতে বিরাজ করছে নয় ও ছয়ের নটীপনার কল্যাণে। চীনে তৈরী পোষাক উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি এবং মুনাফা হ্রাস পাওয়ায় গুড বাই দিয়ে পিছু টান দিচ্ছে কাংখিত মুনাফার আশায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তৈরী পোষাক আমদানীকারক প্রতিষ্টান ওয়ালমার্ট।

প্রোয়োজনীয় বস্ত্র পণ্যের চাহিদা আমাদের দিয়ে মিটানো যায় কি না তা যাচাই করতে ওয়ালমার্ট ‘সিইও’ ডগলাস ম্যাকলিন সাম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করলেন। বাংলাদেশের তৈরী পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আর সে দেশে আমাদের সবচেয়ে বড়ক্রেতা ওয়ালমার্ট। যুক্তরাষ্ট্রে মোট রফতানী হওয়া আমাদের তৈরী পোশাকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তারা ক্রয় করে বলে পোষাক রফতানীকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে। বলা চলে ওয়ালমার্ট হলো সেই খদ্দের, যাহার চাহিদা পূরণ করতে পারলে বর্তমান কর্মক্ষেত্রের চাহিদার দ্বিগুন বাড়বাড়ন্ত সৃষ্টি হবেই আমাদের এই উঠতি বাজারে।

তাইতো ওয়ালমার্ট আমাদের জাতির জন্য সাক্ষাৎ ‘ লক্ষ্মী ’ হিসাবে হাজির হয়েছে বলা চলে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বায়ার্স ফোরাম থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকেদের ন্যূনতম বেতন বাড়ানোর অনুরোধ করেন। তাদের চাহিদার তৈরী পোষাকের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসস্থল হিসাবে বাংলাদেশকে ভাবছে ওয়ালমার্ট। সমন্নিত শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার পরামর্শ দিচ্ছে তারা। অর্থাৎ তারা বেশ পরিকল্পিত ভাবে তাদের সরবরাহ উৎসের ভাল-মন্দ বিচার করে তবেই প্রস্তাব দিয়েছে।

শিল্প উৎপাদন ব্যবস্থার প্রান হলো শ্রমিক। সরবরাহ ব্যবস্থার অব্যাহত রাখতে শ্রমিকের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা এবং প্রযুক্তিসহ কারিগরী কাঠামো সম্প্রসারণের মাধ্যমে সফল হওয়া সম্ভব। অর্থাৎ শুধু তৈরী পোষাক করলেই হবে না প্রয়োজনীয় মেশিনপত্রের চাহিদার সরবরাহ কাঠামো ও বিভিন্ন চাহিদার বস্ত্রশিল্প গড়ে তুলতে হবে। চীনাদের ইউরোপের বস্ত্র ও পোষাক শিল্পের বাজার সঙ্কুচিত হওয়ায় আমাদের অগ্রসর হওয়ার সুযোগ ঘটে গত জোট সরকারের আমলে। দুর্ভাগ্য দেশবাসীর একদল সংঘবদ্ধ বল প্রোয়োগে ইসলাম ’বিপনণকারী’ সরকারি ভাষ্যে মরিচিকারা ৬৩টি জেলায় বোমা ফোটায়ে ভেস্তে দিল জাতির কাছে হেটে আসা সুর্বণ সুযোগের হাতছানি।

বাড়া ভাতে ছাই ছিটালো যে দুষ্কৃতিরা তাদের বেলায় ধরা ছোয়ার বাইরে শব্দ প্রয়োগ হলো। অর্থাৎ ক্ষমতা নিজেই নিজের অপরাধ ঢাকবার চেষ্টা চলালো ! বেশ একটা বদ হজমের কারবার আর কি ? তাইতো বলি এই সব ধোঁকাবাজী আর কতদিন চলাবেন আপনারা ? এখনতো বাংলাদেশে যথেষ্ট পূঁজি, প্রযুক্তি, ভোক্তা ও বাজার ইত্যাদির প্রসার ঘটছে সতিনের সন্তানের মতো। আমাদের বর্তমান কৃষি, শিল্প ও সেবা ইত্যাদি পূঁজিকে একের পাশে শূণ্য বসায়ে দশের বাজারে রূপ দিতে চাই। সেই বাজার শুধু নিজেদের হলেই হচ্ছে না। আমাদের চাই ওয়াল মার্টের মতো দু’কুড়ি বড় বড় খদ্দের লক্ষ্ণী।

খদ্দের বললেইতো পাওয়া যায় না। আন্তর্জাতিক বাজার প্রতিবেশী মহা-ভারত সে কি তার বাজারে আমাদেরকে বিশেষ কোন ছাড় দেয় ? অথচ সে তার বস্তা পচামালের মোরগা ক্রেতা হিসাবে চালায়ে যাচ্ছে আমাদের জন্মলগ্ন থেকে। খ্রীষ্টান দেশগুলো(যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স) চীনাদের বিশ্ব বাজারে বাণিজ্যের অংশিদারীত্বে অৎছুত করে রেখে ছিল স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় সত্তর দশক পর্যন্ত। অথচ আমরা ছিলাম বিশ্ব বাজারের অৎসুত চীনা মালের আন্তর্জাতিক বাজারের প্রথম ক্রেতা। এখন কি চীন তার বাজারে বিশেষ সুবিধাভোগীর মর্যদায় আমাদের ব্যবহার করতে দেবে ? যেমন আমরা দিয়ে ছিলাম ষাটের দশকে অৎসুত চীনকে।

এই দুই মহারথি আগামী বিশ্বে এক ও দুই নম্বর খেতাবের অধিকারী হবে। বর্তমান বিশ্ববাজারে প্রায় চল্লিশ ভাগের উদ্ধের বাজার মোড়ল হলো ভূ-স্বর্গের আকাংখিত আমেরিকা। ক্যানিং মেট হিসাবে আমাদেরকে ‘মডারেট মুসলিম’ বলে বুঝায় দিয়েছে বিশেষ সুযোগ সুবিধা খ্রীস্টান দেশটার কাছ থেকে পাওয়া যাবে না। বাজারের ব্যবস্থা করতে পারলে আমাদের অর্থনীতির চেহারাও রুপান্তরীত হবে অজ থেকে ঐরাবতে। কিমত্ত এমন দোকলা রাজনীতি বজায় থাকলে পারবো কি ভাবে ? জনসাধারণ অগ্রসর হলেও কহম্ভু-কর্ণের উত্তরসুরী রাজনৈতিক সিন্ডিকেট গুলোর নিদ্রাভঙ্গ হয়নি।

বরং ঘোট পাকানোর জন্য কেউ প্রদেশ বা বাচালতার পরিবেশ সৃষ্টি করছে দিবানৈশ্য। ক্ষমতা ও অপরাধ পরস্পর আপন বা সতালো ভাই। ক্ষমতার প্রশ্রায় ছাড়া অপরাধ হতে পারে না। এই সহজ কথা আমাদের রাজনীতিবিদরা না জানলেও জনগন যানে। সাধে আসা সুযোগকে কেন আমরা রাজনৈতিক গোলকধাধায় প্রয়োগ করতে চাচ্ছি।

আমরা যদি ওয়ালমার্টের চাহিদা মাফিক পণ্য সরবরাহ না করি। প্রকারন্তে ওয়ালমার্ট নিজ চাহিদা পূরণের জন্য অন্য মোকামের সন্ধানে ব্যস্ত হয়ে যাবে। রাজনৈতিক কার্যকালাপ স্থানীয় উৎপাদন, সেবা, বাজার ও ভোক্তাদের উচ্ছন্নে যাওয়ার পায়তারা কষতে থাকে দেশ উদ্ধারের নিবেদনে। অথচ আমরা সুবর্ণ সুযোগ হেলায় হারাতে দিচ্ছি নেটিভ চরিত্রের সেবাদাসী সাজতে যেয়ে। তাইতো বচন বলে,- গণতন্ত্রের সংসার জনগণতো রংসার লিডার বলে যাও চান্দা তুলে খাও **আমার এই লেখাটি খুলনা জার্নাল এ প্রকাশিত হয়েছে।

লিঙ্ক

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.