আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উইকিলিক, বাংলাদেশ এবং আমাদের ইতিহাস

ভালো লাগে জোছনা রাতে মেঘ হয়ে আকাশে ভাসতে.... :)

'৯১-র নির্বাচন ছিলো আমার জীবনের প্রথম বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে বুঝতে শেখা। বাসায় বাবা-মা, আর বড়দের মধ্যে উৎসাহ দেখে বুঝলাম কিছু একটা হচ্ছে। এর পরে অনেক দিন পার হলো। এখন দেশ, বিদেশের মোটামুটি খবর রাখা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ আমার কাছে বরাবরই রহস্যে ঘেরা একটি দেশ।

৯১-এর আগে কি হয়েছে আমি কখনই খুব ভালো করে বুঝিনা। '৭১-কে নিয়ে বই পড়ে, মুরুব্বিদের কাছে শুনে মোটামুটি ধারণা আছে। কিন্তু বাকি সময়গুলো কেমন যেন ধোঁয়াটে। একেক জন একেক রকম করে নিজেদের মত চাপিয়ে দিতে চায়। আমার ভালো লাগেনি কোনোদিন।

এখন আসা যাক এই কথাগুলো কেনো বলা। দুই তিন দিন আগে উইকি লিক নামে একটি ওয়েব সাইট ঘোষনা দিল তারা ১৯৬৬ থেকে ২০১০ (এই বছরের) ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ২৭৪টি দেশের যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে সংগঠিত সব ধরণের যোগাযোগ তারা প্রকাশ করবে। ২৫১,২৮৭ পৃষ্ঠার এই বিশাল সংগ্রহে বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাবে বলে আমি ধারণা করছি। এর মধ্যে মাত্র ২৯১ পৃষ্ঠা প্রকাশ করলেও পুরো সংগ্রহে ২১৮৭ পৃষ্ঠার তথ্য রয়েছে বাংলাদেশ সম্পর্কে। মাত্র তিনশ পৃষ্ঠার যেসব নথি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতেই দুনিয়াতে হইচই লেগে গেছে।

দেখা গেছে, সউদি রাজাসহ অনেক মধ্যপ্রাচ্যের দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে বারবার চাপ দিচ্ছে ইরানের উপরে আক্রমন করার জন্য। তাছাড়াও অনেক প্রধানমন্ত্রী আর রাষ্ট্রপতিদের উপরে নজরদারি করার উদাহরণ রয়েছে। ২১৮৭ পৃষ্ঠার বাংলাদেশ সম্পর্কিত নথিগুলো থেকে ৬৬ থেকে বাংলাদেশের উপরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যাবে- যা দিয়ে মোটামুটিভাবে সত্যিকার অর্থে এই সময়গুলোতে বাংলাদেশে কি হয়েছে তা নিয়ে অনেক পরিষ্কার জানা যাবে। এখন পর্যন্ত ব্লগে, পত্রিকায়, সামনা সামনি অনেককে অনেক কিছু বলতে দেখি। নিজের ইচ্ছামতো ইতিহাস বিকৃত করে নতুন প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করে যাচ্ছে।

আমি আশা করছি কম করে হলেও এই গোষ্ঠির চাপাবাজি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে, আর কিছুটা সত্য জানা যাবে। কোন কোন বাটপার দেশ বেঁচার ষড়যন্ত্র করেছে তাও বের হয়ে আসবে। যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই অনেক দেশকে সাবধান করে দিয়েছে কি ধরণের তথ্য আসতে পারে তার ব্যাপারে। এখন আশা যাক কিছু আশঙ্কার কথায়। এই নথিতে নিশ্চিতভাবে অনেক শ্রদ্ধেয় মানুষজনের স্পর্শকাতর গোপন দিকগুলো বের হয়ে আসবে- তা জাতি কিভাবে নিবে।

কেউ কেউ এই নথি ব্যবহার করে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে। আর কোনো কিছু বের হওয়ার আগেই আরেক দল কিছু মানুষের সম্বন্ধে গুজব ছড়িয়ে জীবন তামা করার চেষ্টা করলে অবাক হবোনা। আমি এখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা- ২১৮৭ পৃষ্ঠার বাংলাদেশ নিয়ে এই রিপোর্ট নিয়ে সত্য জানার আনন্দে আমরা কি খুশি হবো নাকি নিষ্ঠুর সত্য জেনে স্বপ্নভঙ্গের দু:স্বপ্নে তাড়িত হবো। আমার ভয়, পরেরটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।