আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাসিয়া নদী রক্ষার দাবীতে স্থানীয় এম.পি বরাবরে মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম'র স্মারকলিপি

নাজমুল ইসলাম মকবুল

ঐতিহ্যবাহী বাসিয়া নদী রক্ষার দাবীতে ৭১ এর গর্বিত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংগঠন মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম'র উদ্যোগে গত ২৭ নভেম্বর শনিবার সিলেট-২ বিশ্বনাথ বালাগঞ্জ ওসমানী নগর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। দাবীর প্রতি একাত্বতা পোষন করে কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন বিশ্বনাথ উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ সভাপতি ও বিশ্বনাথ প্রেসকাব সভাপতি আব্দুল আহাদ, উপজেলা যুবলীগ নেতা শেখ আজাদ, বিশ্বনাথ প্রেসকাব সহ সভাপতি স্বপন দাশ, প্রবাসী সমাজসেবী আব্দুল গণি, বিশ্বনাথ থিয়েটারের সভাপতি ইশতিয়াকুর রহমান রাজীব প্রমূখ। স্মারকলিপি প্রদানের সময় ‘‘মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম’’র সভাপতি কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল, সাধারন সম্পাদক লিমন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হোসেন জরুরী জনগুরুত্বপূর্ণ বিশ্বনাথবাসীর এ ন্যায্য দাবীটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদপে নেবার অনুরোধ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। স্মারকলিপি গ্রহণকালে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী বিশ্বনাথবাসীর গুরুত্বপূর্ণ এ দাবীটি বাস্তবায়নে যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর পদপে গ্রহণের আশ্বাষ দেন। স্মারকলিপিতে উলেখ করা হয় বৃহত্তর সিলেটের মধ্যে বিশ্বনাথ উপজেলার সমৃদ্ধ ইতিহাস ঐতিহ্য এবং সুনাম সুখ্যাতি রয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্য্যায়ে।

কৃষির জন্য উর্বর ভুমি বিশ্বনাথে অগণিত নদী নালা খাল বিল হাওর বাওর বিদ্যমান রয়েছে। এরই মধ্যে ঐতিহ্যবাহী সিলেটের সুরমার শাখানদী বাসিয়া কামাল বাজার, মুন্সীর বাজার, লালাবাজার সহ আরও অনেক বাজার ছুয়ে আমাদের উপজেলা সদরস্থ বিশ্বনাথ বাজার অতিক্রম করে জগন্নাথপুরের ভাটি অঞ্চলের অপরাপর নদীসমুহের সাথে মিলিত হয়েছে। একসময় আমাদের ঐতিহ্যবাহী উত্থাল স্রোতস্বিনী এই বাসিয়া নদী দিয়ে অগণিত যাত্রী ও মালামাল নিয়ে লঞ্চ, স্টিমার, জাহাজ ও ছোট বড় পালতোলা নৌকা চলতো বিরামহীনভাবে। ব্যাপক জনগোস্টির আমিষের চাহিদা মিটাতো বাসিয়া নদী থেকে আহরিত হরেক প্রজাতির ছোট বড় স্বুস্বাদু মিটাপানির মাছ। শুষ্ক মৌসুমে এই বাসিয়া নদী থেকে পানি সেচের মাধ্যমে বাসিয়া পারের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে ইরি বোরো ধান এবং মৌসুমী শাক সবজি আবাদ করা হতো।

এলাকার কৃষক শ্রমিকসহ দেশের উন্নয়নেও ব্যাপক অবদান রয়েছে এই বাসিয়া নদীর। কিন্তু কালের পরিক্রমায়, ভুমি খেকোদের হিংস্র নখের আচড়ে এবং সিলেটের মাসুকগঞ্জ বাজারের পার্শ্বে সম্পুর্ন অপরিকল্পিতভাবে একটি সেতু নির্মাণ করে বাসিয়ার উৎসমুখ একেবারে সংকুচিত করে দেয়ার ফলে এবং আজ পর্যন্তু খনন না করায় আমাদের ঐতিহ্যবাহী বাসিয়া নদীসহ বাসিয়ার সকল শাখানদীর অস্তিত্ব আজ বিলীন হওয়ার পথে। শুধু তাই নয় পানি প্রবাহ বন্ধের ফলে বিশ্বনাথের অধিকাংশ খাল বিল নদী নালা হাওর বাওরেরও অস্তিত্ব আজ বিলীন হয়ে গেছে। শিগগিরই উৎসমুখ থেকে খনন শুরু না করলে বাসিয়া নদী কালের অতল গর্ভে হারিয়ে যাবে এবং বর্ষাকালে পানি প্রবাহের পথ চিরতরে বন্ধ হয়ে এলাকাবাসী অকাল বন্যায় তলিয়ে যাবে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে তে কৃষিসহ দৈনন্দিন কাজ কর্ম চরমভাবে ব্যাহত হয়ে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে।

সর্বোপরী আমাদের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ যেগুলো অবশিষ্ট আছে তাও বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তাই বিশ্বনাথের মাটি ও মানুষকে রা করতে এই মুহুর্তে বাসিয়া নদী খননের কোন বিকল্প নেই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।