আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মধুমতিতে সেতু হলে বদলে যাবে খুলনা বিভাগের চালচিত্র

Mahmood Khan

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কালনাঘাট পয়েন্টে মধুমতি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ হলে বদলে যাবে খুলনা বিভাগের চালচিত্র। জ্বালানি খরচসহ যাতায়াত ব্যবস্থা অধিকতর সহজ হবে। ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব কমবে প্রায় ২০০ কিলোমিটার। রাজধানীর সঙ্গে খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর কৃষি পরিবহন ও বিপণন সহজ হবে। চাঙ্গা হবে অর্থনৈতিক কর্মকা-।

কৃষিপণ্য ধান, চাল, পাট, পান, নারকেল, বাঁশ, শাক-সবজি, তরিতরকারিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য হাটবাজারে বেচাকেনাসহ পণ্য পরিবহনে সুফল পাবে খুলনা বিভাগ ও আশপাশের অন্তত ২০টি জেলার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। বাসসহ যাত্রী পরিবহনেও সুবিধা হবে। তাই দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কালনাঘাট পয়েন্টে সেতু নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, মধুমতির কালনাঘাট পয়েন্টে সেতু নির্মিত হলে নড়াইল থেকে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার কমে যাবে। নড়াইল শহর ফেরিঘাট মোড় থেকে ঢাকার দূরত্ব হবে ১২৭ কিলোমিটার।

যশোরের দূরত্ব হবে ১৬১, বেনাপোল সীমান্ত ২০১ ও খুলনা ২০৩ কিলোমিটার। এতে করে খুলনা, মংলা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, বেনাপোল, শিল্পনগরী নোয়াপাড়াসহ খুলনা বিভাগের চালচিত্র বদলে যাবে। অথচ বর্তমানে নড়াইল থেকে প্রায় ৩৩০ এবং যশোর থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরত্ব রয়েছে ঢাকার। দক্ষিণবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী বিনোদন কেন্দ্র ‘নিরিবিলি’ ও ‘স্বপ্নবীথি’র (নড়াইলের লোহাগড়ার রামপুরায় অবস্থিত) স্বত্বাধিকারী মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী সৈয়দ মফিজুর রহমান জানান, এলাকায় প্রচুর প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনসহ গুণীজন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান, চারণ কবি কবিয়াল বিজয় সরকার, জারিশিল্পী মোসলেম উদ্দিন, সুরকার, গীতিকার ও গায়ক কমল সরকার, নৃত্যশিল্পী উদয় শংকর, সেতারবাদক রবি শংকর, ঔপন্যাসিক নীহার রঞ্জন গুপ্ত, ক্রিকেট তারকা মাশরাফি বিন মর্তুজাসহ জমিদারদের স্মৃতিধন্য নড়াইল। অথচ এর কোনো উন্নয়ন নেই।

বরাবরই আমরা অবহেলিত। ভৌগোলিক কারণেই কি সরকারের সদিচ্ছার অভাব? এখানে আমরা যারা উদ্যোক্তা আছি, তারা ভালো কিছু করতে চাইলেও পারি না। কারণ প্রতিপক্ষ আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা। কালনাঘাট পয়েন্টে মধুমতি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে সেতু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন বদলে যাবে, তেমন কৃষি ক্ষেত্রেও উন্নতি হবে। অনেক শিল্প ও কলকারখানা গড়ে উঠবে।

ঢাকার ওপর চাপ কমবে। নড়াইল ফেরিঘাট এলাকার (সীমাখালি অংশ) বালু ও তেল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, নড়াইলের চিত্রা সেতু নির্মাণ ও সেতুতে টোল আদায় বন্ধের পর থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য বেশ ভালো হচ্ছে। ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। তবে এখন লোহাগড়া উপজেলার কালনাঘাট পয়েন্টে মধুমতি নদীর ওপর সেতু হলে রাজধানী ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের আরো প্রসার হবে।

নড়াইল রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের অধ্যক্ষ সুলতান মাহমুদ জানায়, কালনাঘাট এলাকায় সেতু নির্মিত হলে নড়াইল থেকে ঢাকা যেতে সাধারণভাবে আড়াই কি তিন ঘণ্টা সময় লাগতো। জ্বালানির সাশ্রয় হতো। শহরের রূপগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল জানান, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নড়াইলে ভিক্টোরিয়া কলেজ মাঠে তার নির্বাচনী সফরে এসে ভাষণে তিনি নড়াইলবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি নির্বাচিত হলে কালনাঘাট পয়েন্টে মধুমতি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা হবে। কিন্তু আজো তার কোনো বাস্তবায়ন লক্ষ করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী জানান, কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মুখ থেকে শুনেছি এই সেতুটি একনেকে পাস হয়েছে।

নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমীন জানান, কালনাঘাট এলাকায় মধুমতি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের বিষয় নিয়ে কোনো অগ্রগতিই হয়নি। যশোর-নড়াইল থেকে কালনা সেতু হয়ে ভাটপাড়া পর্যন্ত একটি রাস্তার কাজ হওয়ার কথা রয়েছে, যার শুধু প্রাথমিক জরিপ হয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.