C:\Users\asusmobile\Desktop\FF.jpg
এই গল্পের শুরুটা সম্ভবত ২০০৬ এর প্রথম দিকে, এখন আর সঠিক মনে পড়ছে না। ঠিক করেছিলাম গল্পটা কোন একদিন বলব, মনে রাখব প্রতিটা মূহুর্ত। কিন্তু সময়ে যা হয়। ধীরে ধীরে ভুলতে বসেছি সেসব কথা। আজ যখন আবার লেখতে বসেছি, তখন আমার এক পাশে কফির মগ, অন্য পাশে ওর মুচকি হেসে দুস্টুমি করে তোলা একটা ছবি।
কিন্তু জানুয়ারীর সেই রাতে এসব কিছুই ছিল না। বাইরে তাপমাত্রা অনেক আগেই শুন্যের নীচে নেমে গিয়েছিল, সেই ঠান্ডায় এই সুন্দর প্রকৃতিটাকেও ঠিক মতো দেখতে পারি নি। পকেট থেকে হাত বের করে ঘড়ি দেখতে ভয় হচ্ছিল। ঠান্ডা বাতাস সুযোগ পেলেই গালে ছোবল দিচ্ছিল। কিসের যেন একটা কষ্ট আমাকে আকড়ে ছিল।
আর সেই কষ্ট চেপে না রাখতে পেরে, আমি হাস্যকর একটি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম তখন যে, এই কষ্টের কথা আমি লিখব, লিখে লিখে সেই কষ্ট কিছুটা হলেও কমাবো একদিন।
আজ সেই লেখার দিন। নিজের কাছে দেয়া প্রতিজ্ঞা রক্ষার দিন।
ওহ আমার কফিটা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো। আমি কফির মগটা কাছে টেনে নেই।
কফির পোড়া গন্ধটা কি মোলায়েম! পায়ে উলের মোজাটা ঠিক করে চেয়ারে গা এলিয়ে দেই। আরে, আমার না লেখার কথা। তাহলে এই আলসেমী কেন! হুমম একটু আলসেমী করলে কি হয়, আলসেমী করাটাও তো একসময় বিলাসীতা ছিল।
ল্যাপটপে মৃদুশব্দে বাজছে রবীন্দ্র সংগীত। খুব অল্প ভলিউমে।
যেন মনে হয় অনেক দূর থেকে ভেসে আসছে। আমার খুব প্রিয় একটা গান বাজছে -
“ আমার প্রানের পরে চলে গেল কে,বসন্তে বাতাসটুকুর মতো
সে যে ছুয়ে গেল, নুয়ে গেল হে, ফুল ফুটিয়ে গেল শত শত।
সে চলে গেল, বলে গেল না, সে কোথায় গেল, ফিরে এল না।
সে যেতে যেতে চেয়ে গেল, কি যেন গেয়ে গেল
তাই আপন মনে বসে আছি, কুসুম বনে তে।
সে ঢেউয়ের মতোন ভেসে গেছে, চাঁদের আলোর দেশে গেছে
যেখান দিয়ে হেসে গেছে, হাসি টা রেখে গেছে।
মনে হলো আখির কোনে আমায় যেন ডেকে গেছে...”
আমার ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। আমি চোখটা একটু খুলতেই সামনে পড়ল ওর ছবি। সেই দুষ্টুমী ভরা ছবি। কে বলবে ছবির মেয়েটার বয়স তখন ২৪! আচ্ছা এখন কত হবে ওর বয়স? এখনো কি এইরকম দুষ্টুমী করতো ও? নাহ ওর ছবিটাকে আর টেবিলে রাখা যাবে না। যখন তখন ওর দিকে চোখ পড়ে যায়, আর ও বিনা অনুমতিতে আমার অনুভবে হানা দেয়।
আমি সবসময়ের মতো এই ভাবনাগুলোকে তাড়িয়ে দেবার চেষ্টা করি। ভাবার জন্য আরো কতো কিছু আছে।
বাইরে তুলোর মতো তুষার পড়ছে। সকালের মধ্যেই মোটামুটি সবকিছু ঢেকে যাবে তুষারে। গাছের পাতার মাঝ দিয়ে এক টুকরো চাঁদ দেখা যাচ্ছে।
সেই রাত, সেই চাঁদ, সেই ওর হাসি মাখা ছবি।
রাত ১২টার বেশী বাজে। ঘুমানো দরকার। আমি চোখ বন্ধ করি আবার।
দূর কোথা হতে আমার কানে এসে বাজে –
“ সে ঢেউয়ের মতোন ভেসে গেছে, চাদের আলোর দেশে গেছে
যেখান দিয়ে ভেসে গেছে, হাসি টা রেখে গেছে।
”
এই অদ্ভুত রকম সুন্দর রাতেও কেন যেন আমার চোখটা ভিজে ওঠল।
(হয়ত চলবে…)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।