আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দবীরের হিসাব আর একটুস খানি ভুল: ২

আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!

পরথম পার্ট ৪. : মামা, আমি অখন দৌলতদিয়ায়। আমার পালসারের খবর তো পাইলাম না। : তুমি দৌলতদিয়ায় কি করো? তুমারে কাইল রাইতে ফুন দিছিলাম। রিসিভ করো নাই, ঘটনা কি? : আর কইয়েন না, একখান ডেলিভারী আছিলো, ওর পেমেন্ট লইতে গেছিলাম।

আমার পালসারের কি খবর? : হুনো, তুমারে আবারও কই, পালসারের চেয়েও ভালো একখান মডেল আছে এপাচীর, গীয়ার পাংখা ২২০ এর উপরে, লাইসেন্সের সেটিং আছে। : ঐডায় তো ডাবল হাইড্রলিক নাই? আমি তো কইছি আমার ঐটাই দরকার! : কি খালি এক প্যাচাল পারো, এক্সিডেন্ট করলে তুমারে উঠাইবো কেডা? এই বাইকের সমস্যা আছে, তুমারে আমি ভালা পাই। তুমার বাপের লগে একলগে ক্যারাম খেলতাম। তুমি এইটা লইয়ো না! : মামা, থাক, আপনের আর টেনশন লইতে হইবো না। আমি অন্য জায়গায় দেখতাছি! : তুমি আমারে এই কথা কইলা? তুমি এইডা কইতে পারলা? দুঃখ পাইলাম।

আইচ্ছা, যাত্রাবাড়ী কতক্ষনে আইতে পারবা? মাল রেডী! : ৩ ঘন্টার মধ্যে ব্যাগ নিয়া আসতাছি! মোবাইলটা রেখেই শাহেদ একটা টেক্সট পাঠালো যার ভাষা,"পাখী পাওয়া গেছে, খাচার ডিজাইন রেডী। ডেলিভারী শনির ৪ এ!" মোবাইলটা বন্ধ করতেই ফেরীর গেট খুলে গেলো। মাথায় হেলমেট পড়ে এপাচীর গীয়ারে দিলো টান। গেট খুলে নামছে, শাহেদ তাকিয়ে আছে পদ্মার পানির দিকে। এই কাজটাই তার শেষ কাজ।

হঠাৎ এসএমএস টিউন, নোকিয়া এন ৮, ভ্রু কুচকে যায় শাহেদের। এতক্ষনে গেট নেমে গেছে, বেশীক্ষন দাড়ালে ঘাটের পুলিশের কাছে ২০০ টাকা খোয়াতে হবে, একেতো ইলিগ্যাল তার ওপর লাইসেন্স দুই নম্বর। তবুও ম্যাসেজটা দেখবার জন্য মোবাইলটা বের করতেই দেখে একটা মিসড কল, প্রাইভেট নম্বর থেকে। মনে হয় কথা বলার সময় কলটা এসেছে। ম্যাসেজটা পড়তেই হার্টবিট বেড়ে গেলো।

জার্মানীর কান্ট্রি কোড থেকে একটা টেক্সট," কিছু হিসাব পেন্ডিং। কথা বলার দরকার! এই নম্বরে দ্রুত কল করো!" বেলা বাজে ১২ টা। মাল ডেলিভারী হতে হতে ৫টা। জার্মানীতে ১২ টা তখন। ঠিক আছে ভেবেই দিলো পিক আপ! ঠিক চারটায় শনির আখড়ার চার রাস্তার মোড়ের আগে কাজলায় ঢুকলো।

জামে মসজিদের পাশের গ্যারেজটায় দাড়াতেই রহিম মিয়ার ছোট ছেলে সামনে এগিয়ে এলো। "বস, শরবত খামু, বাপে ট্যাকা দেয় না!" চিকন করে কালো ছেলেটা, সব সময় ডান হাত চুলকায়, এখনও চুলকায়। দেখতে দেখতে ছেলেটা নষ্ট হয়ে গেছে। শাহেদের মনে পড়ে যখন ও কলেজে পড়তো তখন ছেলেটা ওর কাছে আইসক্রিম খাবে বলে ঘুড় ঘুড় করতো। নিজের ছোট ভাইটা হারিয়ে যাবার পর ওকে খুব আদর করতো।

আস্তে আস্তে দিন যায় ছেলেটা হারিয়ে যায় প্রথমে ফেন্সিতে, পরে ছিনতাই করে হেরোইনে ঢুকে। অনেক জোড় জবরদস্তি করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। টানা ১ বছর চিকিৎসার পর সুস্হ হয়ে ফিরলে বাবা বিয়ে দিয়ে দেয়। বৌটা পালিয়ে যাবার পর আবারও হেরোইনে ঝুকে যায়, পাগলের মতো এ পথ ওপথ ঘুরে বেড়ায়, আউট অব কন্ট্রোল। শাহেদ চোখ থেকে সান গ্লাসটা খুলে।

হাতটা বাড়িয়ে কাধে হাত তুলে কাছে টেনে আনে," বিরানী খাবি? হাজির বিরানী?" শান্ত নিজের কাধটা শাহেদের হাতের কন্জা থেকে এক ঝাকি দিয়ে পিছনে টেনে নিয়ে বলে," শরবত খামু, সকাল থিকা মাথাটা ঘুরতাছে। বাপে শিকল দিয়া বাইন্ধা রাখছিলো। আম্মাজান একটু আগে ছাইড়া দিছে। ক্ষুধা লাগে না, খালি শরবত খাওনের ইচ্ছা করে। তুমার মোবাইলটা দিবা?" শাহেদ মুচকি মুচকি হাসে,"এক শর্তে, আগে ঔষুধ খাবি তারপর মোবাইল পাবি?" শান্ত মুখ ভেংচি কাটে,"তুমার ঔষুধ তুমার পকেটে রাখো।

এই নাও কাগজ, বাপে কইছে এইখানে যাইতে!" কাগজটা হাতে নিয়েই শাহেদ আবারও স্টার্ট দিলো বাইক। জানে কাগজে কি লেখা আছে, লেখা আছে "বাসায় অপেক্ষা করছি!"নিশ্চয়ই ছেলের ব্যাপারে কথা বলবে! ও ভাবছে বাসায় যেতে মিনিমাম ৩০ মিনিট, তারপর রহিম চাচার সাথে আরও ৩০ মিনিট। তারপর জার্মানীর ব্যাপারটা। আজকে রাতেই ডিজাইনটা সাথে হাইড্রোলিক মেশিন। শাহেদের খুব একটা ভালো লাগছে না, ফিরিঙ্গীরা কয়েকবছর ধরে খুব ভালো জিনিস নিয়ে কাজ করছে না! ৫. : নর্লিন, রিডবার্গের সাথে আগে কি হয়েছিলো? : হঠাৎ রিডবা্র্গ কেন? ও তো স্বাধীনভাবে কাজ করতো।

ওর আগে পিছে গভর্নম্যান্টের ইনভলভ ছিলো না। : নর্লিন, আসলে তোমরা কি নিয়ে কাজ করেছো সেটা তোমারও জানা নাই। তুমি শুধু এখানে সাহায্যকারী হিসেবেই ছিলে। তবে তোমাদের কাজটা আসলেই দারুন ছিলো। তবে আটলান্টিকের ঐ রিগটা যখন কোলাপস করলো, কারো কিছু হলো না, কিন্তু রিডবার্গের মৃতদেহটা সাগরে ভাসমান পাওয়া গেলো।

: দেখো, আমি তার দুদিন আগে অসলোর মিটিং এ ডাটাগুলোর রিপোর্টের আপডেট এবং প্রজেক্টের ফান্ডিং এর ব্যাপারে এসেছিলাম। আমি এখনো বুঝতে পারছি না এর সাথে তোমার পোল শিফটের কি সম্পর্ক? আর আমি তো জানি পোল শিফট শুধুই একটা থিওরী। দবীর হাসলো, বলা শুরু করলো, মনে পড়ে পাকিস্তানের সেইনডাক কপার মাইনের কথা যেখানে ছোটখাটো একটা এক্সপেরিমে্ট করা হয়েছিলো ২০০৪ এর দিকে। কিছু ফিনিশ প্রফেসর আসলে দেখতে চেয়েছিলো ফাইহসালমির থেকে পাওয়া নিউট্রনোর ডাটা গলো ওখানে মিলিয়ে দেখতে। সমস্যাটা হয়েছিলো নিউট্রিনো ডিটেক্ট করবার সময় যে ডিউটেরিয়ামের আধার বানানো হয়েছিলো সেখানে ম্যাগমা উঠে আসে।

ওখানে তেমন প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ছিলো না বলে কেউ আর বেরিয়ে আসতে পারেনি, এমনকি পাওয়া যায় নি কোনো লাশ । বিষয়টা ধামা চাপা পড়ে গেলেও কিছু ডাটাযে তারা নিরাপদ ভাবে ট্রান্সমিট করতে পেরেছিলো সেটা নিয়ে কাজ করা শুরু করে ফিনল্যান্ডের আর কিছু বিজ্ঞানীরা। এদিকে কিছু অবর্জার্ভেটরীতে ধরা দেয় প্রক্সিমা সেন্ঞ্চুরাইয়ের অরবিট থেকে সরে যাওয়ার ঘটনাটা। এটা নিয়ে বেশ কিছু প্রজেক্ট শুরু করা হয়। ২০০৮ এ নাসা যখন ডার্ক ম্যাটার অবজার্ভের জন্য হাবলে সেটিং চেন্জ্ঞ করে তখন কিছু ঘটনা শিউড়ে উঠার মতো ধরা দেয়! নর্লিন বাধা দেয়," আমি জানি ঘটনাটা কি! কিন্তু ভিয়েনার ঐ বন্ধুটি তো বলেছিলো ওটা একটা স্কূপ! বিশ্বাস করার কোনোই কারন নেই।

কেননা ওটাকে টেনে নেবার মতো ক্ষমতা নেই বলেই এত বছর ধরে আমরা সার্ভাইভ করেছি। যদিও ফিজিক্স আমি ভালো বুঝি না, তবুও হিসাবে নাকি আমাদের আরো এখনো ৪০ থেকে ৫০ হাজার বছর সময় হাতে আছে। " "সমস্যাটা এখানেই। তোমার এই থিওরীটা ছিলো ২০০৭ এর আগ পর্যন্ত, কিন্তু এস.করিম নামের এক ছেলের করা কিছু ক্যালকুলেশন পাঠায় কার্লসরুহিতে, পিএইচডির জন্য এপ্লাইয়ের ব্যাপার ছিলো মূলত। ডার্ক ম্যাটার এই সময়টাকে কমিয়ে ৪০-৫০ বছরে নামিয়ে এনেছে!" নর্লিন হাতের গ্লাসের পুরো ব্রান্ডি গলায় ঢেলে দিয়ে আস্তে আস্তে সোফা থেকে উঠে দাড়ালো।

অন্য দিকে ঘুরে বলতে থাকলো,"ওকে, রিডবার্গের কাজ ছিলো যতদূর পর্যন্ত ড্রিল করা যায় ততদুর। এবার মনে হয় আমি বুঝতে পেরেছি ঘটনাটার কিছু অংশ!" চলবে.....

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।