আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের বিদ্যূৎ সমস্যার সম্ভাব্য সমাধানঃ পারমাণবিকবিদ্যূৎ

চুশীল/প্রগুদিশীল/প্রচুদিশীল ব্লগার দ্বারা সাম্প্রদায়িক ঘোষণা করা হয়েছে।
নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বর্তমানে সারা বিশ্বে ৪৪১ টি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট চালু আছে বা বিদ্যূৎ উৎপাদিত হচ্ছে এবং উৎপাদিত শক্তি ৩৭৪,৬৯২ মেগাওয়াট। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ১০৪টি চুল্লি থেকে ১০০,৬৮৩ মেগাওয়াট, ফ্রান্স ৫৮টি চুল্লি থেকে ৬৩,১৩০ মেগাওয়াট, জাপান ৫৪টি চুল্লি থেকে ৪৬,৮২৩ মেগাওয়াট, রাশিয়া ৩২টি চুল্লি থেকে ২২,৬৯৩ মেগাওয়াট, দক্ষিন কোরিয়া ২১টি চুল্লি থেকে ১৮,৬৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। এছাড়া ভারতের ১৯টি চুল্লি থেকে ৪,১৮৯ মেগাওয়াট ও পাকিস্তান ২টি চুল্লি ৪২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থাকে। বিশ্বে আরো ৬০ টি পরমাণু বিদ্যূৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে যা থেকে আরও ৫৮,৫৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যূৎ উৎপন্ন হবে।

চাপকৃত পানি ব্যবহৃত নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট এর সংখ্যার তুলনামূলক চিত্র পারমানবিক বিদ্যুৎশক্তির ব্যবহারকারি অন্যন্য দেশগুলো হচ্ছে যথাক্রমে যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ইউক্রেন, ভারত, সুইডেন, চীন, স্পেন, বেলজিয়াম, তাইওয়ান, চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভাকিয়া, সুইজারল্যান্ড, বুলগেরিয়া, ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরী, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, লিথুয়ানিয়া, স্লোভেনিয়া, রোমানিয়া, নেদারল্যান্ড, আর্মেনিয়া। আরও ৫/৬টি দেশ যেমনঃ মিয়ানমার, ইরান অদূর ভবিষ্যতে পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা এবং উৎপাদনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। খরচঃ পরমাণুবিদ্যূৎকেন্দ্র স্থাপনের খরচ অনেক বেশি। প্রতিটি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট স্থাপনের খরচ ৩ বিলিয়ন থেকে ৫ বিলিয়ন ইউএস ডলারের মত যা বাংলাদেশি টাকায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার সমান; অর্থাৎ বাংলাদেশের বাজেটের এক চতুর্থাংশ। তবে একবার স্থাপন করতে পারলে ২০/৩০ বছর মেয়াদ থাকে, তাই মোটের উপর খরচ কমে আসে।

এরপর আছে মেয়াদ শেষে পাওয়ার প্লান্ট বন্ধ করা এবং নিউক্লিয়ার বর্জ্য নিষ্কাশনের খরচ। তবে খনিজ কার্বন এবং নিউক্লিয়ার এনার্জি থেকে প্রাপ্ত বিদ্যূৎ খরচের একটা তুলনা থেকে দেখা যায় প্রতি মেগাওয়াট-ঘন্টা বিদ্যূৎ খরচ প্রায় সমান (নিউক্লিয়ার = $ ৩০ আর খনিজ কার্বন = $ ২৯.১)। ১০ $/Mw-hr = ১ cent/kw-hr এবং প্রতি $ ১ = ৭২ টাকা হিসেবে বাংলাদেশে এই খরচ পড়বে ২.১৬ টাকার মত। অবশ্য এটা আন্তর্জাতিক বা উন্নত বিশ্বের হিসাব, বাংলাদেশে এই খরচ আরও কম হবে, আমার আনুমানিক ধারণা ২.০০ টাকা। এখন পল্লী অঞ্চলে আমরা প্রতি কিলো-ওয়াট-ঘন্টায় বিদ্যূৎ বিল দেই সম্ভবতঃ ৩ টাকা!!! তার মানে আপাতঃদৃষ্টিতে, বাংলাদেশের মানুষের পারমানবিক বিদ্যূৎ ব্যবহার করা লাভজনক!!! আমি জানি না বাংলাদেশে জলবিদ্যূৎ উৎপাদনের প্রকৃত খরচ কত (আমরা সরকারের কাছে ভর্তুকি পাই সম্ভবতঃ)।

নিরাপত্তাঃ পরমাণু বিদ্যূৎকেন্দ্র পরিচালনায় বেশ সতর্ক থাকতে হয়। অনেক ছোট ভুলের বিরাট মাশুল দিতে হয়। রাশিয়ার চেরনোবিলের নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টে ১৯৮৬ সালে যে দূর্ঘটনা ঘটে তাতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এ পর্যন্ত মোট ৯৩,০০০ জন মানুষ মারা যায়। ভবিষ্যতে ক্যান্সার আক্রান্তের ঝুকিও রয়ে গেছে। পরিবেশঃ নিরাপত্তার দিকটা ঠিক থাকলে নিরাপদ বর্জ্য নিষ্কাশন নিশ্চিৎ করা গেলে পারমানবিক বিদ্যূৎ অধিকতর পরিবেশবান্ধব, বলতে গেলে পরিবেশের উপর তেমন কোন প্রভাব পড়ে না।

পক্ষান্তরে, খনিজ কার্বন থেকে বিদ্যূৎ উৎপাদনে পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব অনেক বেশি। পারমানবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতাঃ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের বর্জ্যে পারমানবিক অস্ত্রের কাঁচামাল প্লুটোনিয়াম তৈরি হয় এবং পরমাণু অস্ত্রবিস্তারের ঝুকি থাকে। চলবে... ধন্যবাদ সবাইকে।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.