আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঁঠালবাগানে ভবন হেলে পড়েছে।

আমি একজন মেকানিক্যাল ইন্জ্ঞিনিয়ার

ঢাকা, নভেম্বর ০৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) - রাজধানীর কাঠালবাগান এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবন হেলে পড়েছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। রোববার রাত সোয়া ১১টার দিকে 'এশিয়া হায়দার টাওয়ার' নামের ছয়তলা ভবনটির পিলার ভেঙ্গে নিচের তলাটি দেবে যায়। এরপর ভবনটি পূর্ব দিকের ১৬-তলা ভবন নাসির টাওয়ারের দিকে হেলে পড়ে। এ ভবনটিতেও ফাটল দেখা দিয়েছে।

এ ঘটনার পর দমকল কর্মীরা মাইকিং করে নাসির টাওয়ারের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলেছেন। সেনাবাহিনীর ১৪ ইঞ্জিনিয়ার্স ব্রিগেডের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শরাফত হোসেন হেলেপড়া ভবনটি পরিদর্শন শেষে রাত পৌনে ৩টায় সাংবাদিকদের বলেন, ডিসিসি, গণপূর্ত ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে সমন্বিতভাবে ভবনটি ভাঙার পরিকল্পনা করা হবে। এছাড়া এটি ভাঙার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও আনতে হবে। এই গলির ভেতরে হয়তো ভারি যন্ত্রপাতি প্রবেশ করানো সম্ভব হবে না। এ কারণে এটা হয়তো ম্যানুয়ালি ভাঙতে হতে পারে।

রাতে ভাঙার কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন তিনি। ভবনটি হেলে পড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বহুতল ভবন হিসেবে নির্মাণ করা হলেও এটি সেভাবে পাইলিং করা হয়নি। এ কারণেই ভবনটি হেলে পড়েছে। এ সময় ডিসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুস সালাম উপস্থিত ছিলেন। ভবন হেলে পড়ায় আশপাশের অন্য ভবনগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

গভীর রাতে অনেকেই ব্যাগে প্রয়োজনীয় মালামালসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। দমকল বাহিনীর মহাপরিচালক আবু নাইম মো. শাহিদুল্লাহ বলেন, "পূর্বদিকের ১৬ তলা ভবনটি ছাড়াও উত্তরদিকের ছয়তলা ভবনটিও ঝুঁকির মুখে রয়েছে। হেলেপড়া ভবনটির কারণে পাশের ভবনগুলোর ভিত্তিও হুমকির মুখে পড়েছে। ১৬ তলা ভবনটি তো এরমধ্যেই হেলে পড়তে শুরু করেছে। "হেলেপড়া ভবনের নীচে একটি তলা চাপা পড়েছে।

তবে কেউ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এজন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি ভাঙ্গার জন্য আমরা ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকে অনুরোধ করেছি। " রাত সোয়া একটার দিকে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকা সাংবাদিকদের জানান, হেলেপড়া ভবনটি ভাঙার কাজ রাতের মধ্যেই শুরু করতে গণপূর্ত অধিদপ্তর ও কর্পোরেশনের প্রকৌশলীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সাহায্য নেওয়া হবে।

ঘটনাস্থল থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদক শামীম আহমেদ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভবনটির আশপাশে অবস্থান নিয়েছে। রাত সোয়া ১২টার দিকে দমকল বাহিনীর কর্মীরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছান। হেলেপড়া ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্যে একটি বেসমেন্ট রয়েছে। এছাড়া ছয়তলার উপরে আরেকটি তলার অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রমনা অঞ্চলের উপ-পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে বলেন, ভবনটি মূলত সাড়ে ছয়তলা।

তবে এর নীচে একটি বেসমেন্ট রয়েছে। প্রতিবেশীরা জানান, ভবনটি নির্মাণাধীন বিধায় এতে তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া কারো থাকার কথা নয়। তারা হতাহতের কথা কিছু বলতে পারেননি। ভবনটির তত্ত্বাবধায়ক মো. আব্বাসউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে টেলিফোনে বলেন, ভবনটির নিচতলায় তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকতেন। রাত সোয়া ১০টার দিকে বিকট আওয়াজ শুনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বের হয়ে আসেন তিনি।

এর কিছুক্ষণ পরই ভবনটি হেলে পড়তে শুরু করে। আব্বাস জানান, জমির মালিক আলমগীর হায়দার ও এশিয়া কমপ্লেক্স বিল্ডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে ভবনটি নির্মাণ করছিল। দুইবছর আগে এর কাজ শুরু হয়। পাশের আরেকটি নির্মাণাধীন ভবনের তত্ত্বাবধায়ক তোফাজ্জল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকালে ভবনের নিচের দিকে ফাটল দেখা দেয়। তখন হেলেপড়া ভবনটির মালিক আলমগীর হায়দার কিভাবে কী করা যায় সে ব্যাপারে নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।

তোফাজ্জল জানান, সন্ধ্যা থেকে ফাটল বেড়ে যায়। রাতে সোয়া ১১টার দিকে নিচ তলাটির পিলার ভেঙ্গে দেবে যায় এবং পূর্ব দিকে হেলে পড়ে। গত ১ জুন রাজধানীর বেগুনবাড়ি এলাকায় একটি পাঁচতলা ভবন ধসে অন্তত ২৫ জন প্রাণ হারায়। এর তিনদিন পর একই এলাকায় সাততলা আরেকটি ভবন হেলে পড়ে। প্রায় একই সময় তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়ায় আরেকটি পাঁচতলা ভবন হেলে পড়ার খবর পাওয়া যায়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।