আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের মত যাত্রীদের জিম্মিদশা কাটবে কি?

গণমাধ্যমকর্মী, চেয়ারম্যান - উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান, সদস্য সচিব - সম্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলন।

আমাদের মত যাত্রীদের জিম্মিদশা কাটবে কি? আমাদের মত রাজধানীর যাত্রীদের কি হবে? আমাদের এই জিম্মিদশা কাটবে কবে? এই জিম্মিদশা কাটিয়ে উঠার জন্য বর্তমান সরকারের কি কিছুই করার নেই? আগামী বছরের জানুয়ারির এক তারিখ থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অটোরিকশার নতুন এই ভাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি অটোরিকশা মালিকদেরও দৈনিক জমার পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। সিএনজি অটোরিকশা মালিক-চালকদের আবেদনের পরিপ্রেেিত গত বৃহস্পতিবার তথা ৪ নভেম্বর সরকার এ ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বলাবাহুল্য, এ নিয়ে চতুর্থ দফায় সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া বৃদ্ধি করা হলেও যাত্রী হয়রানি বন্ধ হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ-সংশয় রয়েই গেলো।

যদিও কর্তৃপ আশ্বাস দিয়েছেন যে-অতিরিক্ত ভাড়া নেয়াসহ যে কোনো ধরনের যাত্রী হয়রানি করা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সন্দেহ-সংশয়ের কারণ হলো-এর আগেও যতোবার এই ত্রিচক্রযানটির ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে, তখনো ঠিক একইভাবে তাদের দ্বারা যাত্রী হয়রানি না হওয়ার প্রতিশ্র“তি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন যে-অটোরিকশার কারণে কী পরিমাণ ভোগান্তির শিকার হতে হয় তাদের। জানা গেছে-যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত যে সভাটি অনুষ্ঠিত হয় সেখানে বিআরটিএ চেয়ারম্যানসহ সিএনজি অটোরিকশা মালিক ও শ্রমিক সমিতির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমানে সিএনজি প্রথম ২ কিলোমিটারের ভাড়া ১৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ টাকা করা হয়েছে।

পরবর্তী প্রতি কিলোমিটার ৭ টাকা এবং বিরতিকালের জন্য প্রতি মিনিট ১ দশমিক ২৫ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। যাত্রীদের ভাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি ৬০০ টাকা করে দৈনিক জমা পাবেন গাড়ির মালিকরা। বর্তমানে পরবর্তী প্রতি কিলোমিটার ৬ টাকা, বিরতিকালের জন্য প্রতি মিনিট ১ টাকা ও মালিকদের জন্য দৈনিক জমা ৪৫০ টাকা নির্ধারিত রয়েছে। কর্তৃপ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে- যারা কর্তৃপরে এ সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন তাদের গাড়ির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার কথাও বলা হয়েছে। জানানো হয়েছে-এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে অটোরিকশা মালিক শ্রমিকের একটি চুক্তিসই হবে খুব শিগগিরই।

দেখা যায়, সিএনজি অটোরিকশা চালকদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী যাত্রীদের ােভ-অভিযোগের অন্ত নেই। প্রথমত সিএনজি চালকরা কখনই মিটারে নির্ধারিত ভাড়ায় যেতে চায় না। প্রায়ই দেখা যায় অটোরিকশাগুলোতে মিটার নেই অথবা থাকলেও তা বিকল। আবার সচল থাকলেও তারা মিটারে যাবে না। অভিযোগ রয়েছে- চালকরা ইচ্ছাকৃতভাবেই তাদের মিটারগুলো বিকল করে রাখে।

দ্বিতীয়ত, নগরীর অভ্যন্তরে যাত্রীদের চাহিদামতো স্থানে চালকদের যেতে বাধ্য থাকার নিয়ম থাকলেও তারা সেখানে যায় না। এ েেত্র চালকদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার কাছেই জিম্মি যাত্রীরা সব সময়। এ নিয়ে চালকদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসা-সংঘর্ষ সব সময় লেগে থাকে। শেষ পর্যন্ত যাত্রীরা অসহায় হয়ে চালকদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে একরকম বাধ্যই হন। পাশে ট্রাফিক পুলিশ কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে সাহায্য চেয়েও না পেয়ে তাদের আর এই অরাজক পরিস্থিতির কাছে নিজেদের সমর্পণ করা ছাড়া উপায় কী।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঝেমধ্যে যে কোনো তৎপরতা দেখায় না- তা নয়। কিন্তু তাদের তৎপরতায় এ অবস্থার কোনো উন্নতি হয়েছে কিংবা যাত্রী হয়রানি বন্ধ হয়েছে- তা বলা যাবে না। বাড়তি ভাড়া আদায় সম্পর্কে অটোরিকশা চালকরা সব সময়ই যুক্তি দেখায়- গাড়ির মালিকরা তাদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি জমা নেয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- মালিকদের বাড়তি টাকা আদায়ের খেসারত যাত্রী সাধারণকে দিতে হবে কেন? সরকারের পে যারা মালিকদের জমার টাকা নির্ধারণ করে দেন তারা কি বিষয়টা সম্পর্কে অবহিত নন? তারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না কেন? আর মিটারে যদি যানটি নাই চলে তাহলে ঐ বস্তুটির ব্যবহার কী? দফায় দফায় ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে কিন্তু সেবার মান বাড়ানো তো দূরের কথা যাত্রীদের জিম্মিদশাই কাটছে না। আমরা চাই, যোগাযোগমন্ত্রীর নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপ এবার অটোরিকশা মালিক-চালকদের উদ্দেশে এ সংক্রান্ত যে নিয়মনীতির কথা বলেছেন-তা পালনে তাদের বাধ্য করা হবে।

মিটার অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত ভাড়া ও রাজধানীর যে কোনো স্থানে যাত্রীদের চাহিদামতো তাদের যেতে বাধ্য করা হবে। অর্থাৎ এ সংক্রান্ত নিয়মনীতি পালনে আগের অবস্থার পুনরাবৃত্তি হবে না-কর্তৃপকে সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে হবে। আমরা আর অটোরিকশায় কোনো যাত্রী হয়রানি দেখতে চাই না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।