আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওষুধেও ভেজাল! প্রতিরোধের বিকল্প নেই

গণমাধ্যমকর্মী, চেয়ারম্যান - উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান, সদস্য সচিব - সম্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলন।

ওষুধেও ভেজাল! প্রতিরোধের বিকল্প নেই জীবন রক্ষাকারী ওষুধেও ভেজাল। আমরা আসলে আছি কোথায়? জীবন রার জন্য যে ওষুধ, আরোগ্য লাভের জন্য যে ওষুধ তাতে যখন ভেজাল থাকে, তখন মানুষের অসহায়ত্ব যে কোথায় গিয়ে ঠেকে তা আর বলার অপো রাখে না। আমাদের দেশে এ ভয়াবহ অপকর্মটি ঘটেই চলেছে। ওষুধে ভেজালের কারণে বর্তমানে জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।

ভেজাল ওষুধ খেয়ে প্রায়ই শিশু মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটতে দেখছি আমরা। তারপরও ওষুধে ভেজাল প্রতিরোধে সরকারের এ সংক্রান্ত কর্তৃপরে খুব সক্রিয়তা রয়েছে- এ কথা বলা যাবে না। জনস্বার্থ রার কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার সাংবিধানিক দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এ দায়িত্ব কোনোভাবেই উপেতি হওয়া উচিত নয়। সম্প্রতি বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিগোচর করেছে একটি মানবাধিকার সংগঠন।

ওষুধে ভেজাল প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিশেষ মতা আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়াসহ কয়েকটি নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়েছে ‘হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ’ নামের সংগঠনটির প থেকে। এর প্রেেিত গত বুধবার ওষুধে ভেজাল প্রতিরোধে কার্যকর পদপে নিতে নীতিমালা তৈরির জন্য সরকারকে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ভেজাল প্রতিরোধে সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছেন আদালত। পাশাপাশি ৫টি অন্তর্র্বর্তীকালীন আদেশও দিয়েছেন। আদালত আদেশে বলেছেন, স্বাস্থ্য সচিব ও ডিজি ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশনকে ওষুধে ভেজাল বন্ধে নীতিমালা তৈরি সংক্রান্ত দিকনির্দেশনার জন্য বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে একটি উচ্চ মতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করতে হবে।

বাজার থেকে বিভিন্ন ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করে বিশুদ্ধতা সম্পর্কে ল্যাবরেটরিতে পরীা করে স্বাস্থ্য সচিব, ডিজি ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন, বিএসটিআই এবং সায়েন্স ল্যাবরেটরির চেয়ারম্যানকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট দাখিল করতে হবে। এছাড়া আদালত স্বাস্থ্য সচিবকে গত দুই বছরের ন্যাশনাল ড্রাগ এডভাইজারি কাউন্সিল, ড্রাগ কন্ট্রোল কমিটির কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলেছেন। ওষুধ আরো আট-দশটা সাধারণ পণ্যের মতো নয়। এটি খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। ভেজাল ওষুধ, নিম্নমানের ওষুধ এমনকি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ভয়াবহ পরিণাম ডেকে আনতে পারে।

প্রসঙ্গত, স্মরণ করতে হয় ১৯৯১ সালে ভেজাল প্যারাসিটামল খেয়ে ৭৬ জন শিশুর নির্মম মৃত্যুর কথা। আমরা আজো জানি না, এ ঘটনার দায়ীরা উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছিল কি না। উল্লেখ্য, এই ৭৬ শিশুর মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে সামগ্রিক বিষয়ও ৬ সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে জানানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে সাম্প্রতিক নির্দেশে। দেশে একটি ওষুধ প্রশাসন আছে। মাননিয়ন্ত্রক ও তদারককারী কর্তৃপ আছে।

কিন্তু তাদের ভূমিকা কোথায়? সংশ্লিষ্টরা কেন স্বউদ্যোগে তাদের দায়িত্বটুকু পালন করবেন না- সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। যেখানে মানুষের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন জড়িত সেখানে কোনো প্রকার আপোষ বা উদাসীনতার স্থান থাকতে পারে না। জনবল বা অবকাঠামোগত ঘাটতি বা আইনি দুর্বলতা থাকলে সরকারের উচিত দ্রুত তা কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা করা। জনগণকে তার মৌলিক অধিকার পূরণের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হতে হওয়া কোনো ভালো লণ নয়। আশা করবো সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ আদালতের নির্দেশসমূহের দ্রুত বাস্তবায়ন ঘটাবেন।

ওষুধের মান সংরণ ও ভেজাল প্রতিরোধের বিষয়টি সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে। সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপ এ ব্যাপারে সক্রিয় হবেন এবং এ ল্েয নীতিমালা প্রণয়ন, সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদপে গ্রহণ করবেন। ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধে সক্রিয় এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক ও ওষুধ ব্যবসায়ী মহলকেও।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.