আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারকীয় জেলহত্যা দিবস : হত্যাকারীদের প্রতি ঘৃণা!!!

নিজের বিষয়ে কিছুই বলিবার নাই

আসসালামু আলাইকুম, ১.আজ ৩ রা নভেম্বর। বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি করুণ ভয়াবহ আর মর্মান্তিক দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে আমাদের জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী আর এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে হত্যা করা হয়। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে এই ৪ নেতার অবদান স্মরণীয়। বিশেষ করিয়া তাজউদ্দীনের অবদানের কোনো তুলনা নাই।

এই নেতার দূরদর্শিতার কারণে আর নেতৃত্বের গুণেই শেখ মুজিবুর রহমানের অবর্তমানেও দেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম ব্যাহত হয় নাই। আমরা একটি স্বাধীন দেশ পাইয়াছিলাম। কিন্তু দুনিয়ার ইতিহাসে যাহা কখনোই ঘটেনাই আর ঘটিবে বলিয়া আশা করি না সেই ঘটনাই আমাদের দেশে সংঘটিত হইয়াছে। আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্য কারাগারের ভিতর ঢুকিয়া এই ৪ জন বেসামরিক নেতাকে অত্যন্ত নারকীয় কায়দায় হত্যা করে। এই রকম ঠাণ্ডা মাথায় খুন লাতিন আমেরিকার সেনাবাহিনীকেও হার মানাইয়া দিয়াছে।

পরিতাপের বিষয় হইতেছে এই যে এখনো এই জেল-হত্যাকাণ্ডের কোনো সুষ্ঠু বিচার হয় নাই। ভবিষ্যতেও যে হইবে---তাহার সম্ভবনা খুউবই কম বলিয়া ধারণা করা যায়। পরম করুণাময়ের নিকট এই ৪ নেতার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত চাহিতেছি। ২. সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ নিয়মিত ডায়ারি লিখিতেন। তাহার সেই ডায়ারি হইতে ১৯৫১ সালের ৩ রা নভেম্বরের অংশখানা ব্লগারগণের সহিত শেয়ার করিতেছি।

এইখানে বলিয়া রাখা প্রয়োজন যে ১৯৫১ সালে জননেতা তাজউদ্দীন ২৬ বছরের একজন যুবক। ৩.১১.১৯৫১ '' সকাল সোয়া ৬ টায় ঘুম থেকে উঠেছি। বেলা ১১ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত স্কুলে ছিলাম। আজ স্কুলে যাবার আগে শফির মা খাবার দিয়েছে। প্রধান শিক্ষক আমাকে তার বাড়িতে দুপুরের খাবার খাওয়ালেন।

শেষ বিকেল সেনেটারি ইন্সপেক্টরের কোয়ার্টারে গেলাম। পত্রিকা নিলাম। তার সঙ্গে প্রায় সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত রেল লাইনের ধারে হাঁটলাম। তারপর ফিরে এলাম। রেঞ্জারের সঙ্গে মোড়লদের বর্তমান সমস্যায় হাবিব গার্ড আমার সঙ্গে মোড়লদের যোগসূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করল।

সে অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে আমার সামনে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরল। সে বোঝাতে চাইল, বিষয়গুলো আমি তো আগে থেকই জানি। অথচ, প্রথমবারের মত আমি তার কাছ থেকেই আজ কথাগুলো শুনেছি। সেনেটারি ইন্সপেক্টর আমাকে আগে থেকেই জানিয়েছিলেন,ক্লাবের বিষয়ে এসআই এন হক এবং রেঞ্জার যে আচরণ দেখিয়েছে তা থেকেই বোঝা যায় তারা খবই নিচুমনের লোক। '' রাত ৯ টায় ঘুমাতে গেলাম।

আবহাওয়া : আগের মতই। (সূত্র :তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরি : তৃতীয় খণ্ড,২০০৮) ৩.উহার ৩৪ বছর পরে ১৯৭৫ সালের ২ রা নভেম্বর রাতে যখন তাজউদ্দীন আহমদ ঘুমাইতে গিয়াছিলেন তখনও কি তিনি জানিতেন যে এই ঘুম তাহার শেষ ঘুম?? ৩ রা নভেম্বর রাতে সেনা বাহিনীর সদস্যগরা যখন এই নেতাকে ঘুম হইতে ডাকিয়া তোলে তখনও কি তিনি বুঝিতে পারিয়াছিলেন যে আর ঘাতকের গুলিতে যে-ঘুম সেই ঘুম আর কখনোই জাগতিক ঘুম হইবে না!!!!! পরম করুণাময় এই দেশ আর দেশের মানুষকে হেফাজৎ করুন। সকলে ছহি-ছালামতে থাকিবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.