আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চলচ্চিত্রে সাফল্যের জোয়ার

চলচ্চিত্রে সাফল্যের জোয়ার বইছে। গল্প, গান, নির্মাণ, অভিনয়শিল্পী ও প্রযুক্তিতে নতুনত্ব এসেছে। দর্শক আবার প্রেক্ষাগৃহমুখী হয়েছে। সবমিলিয়ে চলচ্চিত্রের সোনালি অতীত এখন প্রত্যাবর্তনের দ্বারপ্রান্তে। এ দাবি চলচ্চিত্রকারদের। ৯০ দশকের শেষ ভাগে অশ্লীলতা শুরু হলে এই শিল্পে ধস নামে। দর্শক প্রেক্ষাগৃহ বিমুখ হয়। এতে চলচ্চিত্রকাররা চরম বিপাকে পড়েন। মাঝেমধ্যে দু-একটি ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ হলেও সব শ্রেণীর দর্শককে আর প্রেক্ষাগৃহে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। অশ্লীলতার সঙ্গে যুক্ত হয় ভিডিও পাইরেসি। ২০০৯ সাল থেকে এই বন্ধ্যত্ব কাটতে শুরু করে। এ বছর মুক্তি পায় গিয়াসউদ্দীন সেলিমের 'মনপুরা'। প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের ঢল নামে। ্এই ধারাবাহিকতায় আজিজুর রহমানের 'ডাক্তার বাড়ী', বুলবুল জিলানীর 'নীল অাঁচল', এফ আই মানিকের 'কোটি টাকার কাবিন', 'চাচ্চু', 'পিতার আসন', 'দাদীমা', মতিন রহমানের 'তোমাকেই খুঁজছি' , ইফতেখার চৌধুরীর 'খোঁজ-দ্য সার্চ', এস এ হক অলিকের 'হৃদয়ের কথা', আকাশছোঁয়া ভালোবাসা' অনন্য মামুনের 'মোস্ট ওয়েলকাম' প্রভৃতি চলচ্চিত্র সুস্থধারা ও নতুনত্বের কারণে দর্শক মন জয় করে। চলচ্চিত্রাঙ্গনে সুবাতাস বইতে শুরু করে। কিন্তু নতুন করে বাধ সাধে প্রযুক্তিগত সমস্যা। দর্শক উন্নত প্রযুক্তির নির্মাণ ও প্রদর্শন দাবি করে। অবশেষে এ দাবিও পূরণ হয়। ২০১২ সালে একটি প্রযোজনা সংস্থা প্রায় ২০০ প্রেক্ষাগৃহকে ডিজিটাল প্রযুক্তির আওতায় নিয়ে আসে। এ প্রযুক্তিতে চলচ্চিত্র নির্মাণও শুরু হয়। এতে সিনিয়র নির্মাতাদের পাশাপাশি নতুন চলচ্চিত্রকাররা ব্যাপক হারে এগিয়ে আসে এবং তাদের চলচ্চিত্র দেখতে দর্শক প্রেক্ষাগৃহে ভিড় করতে শুরু করে। নতুনদের মধ্যে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, স্বপন আহমেদ, রেদোয়ান রনি, মোস্তফা কামাল রাজ অন্যতম। চলচ্চিত্রকারদের কথায়_ একসময় কলকাতার চলচ্চিত্রেও ধ্বস নেমেছিল। ১৯৮০ সালে মহানায়ক উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর টালিগঞ্জ বলতে গেলে বন্ধ হয়েই গিয়েছিল। মাঝে মধ্যে আশার আলো দেখা দিলেও পাইরেসি সেই আলোকে আবার অন্ধকারে ঠেলে দেয়। এ অবস্থার অবসানে দুই হাজার সালের প্রথম দিকে এগিয়ে আসে দুটি প্রযোজনা সংস্থা। তারা কলকাতার অধিকাংশ প্রেক্ষাগৃহ ডিজিটাল প্রযুক্তির আওতায় নিয়ে আসে। এতে পাইরেসি বন্ধ হয় এবং ঝকঝকে ছবি ও নিখুঁত শব্দ পেয়ে দর্শক প্রেক্ষাগৃহমুখী হয়। শুরু হয় বিগ বাজেটের চলচ্চিত্র নির্মাণ। জোয়ার আসে টালিগঞ্জের ফিল্ম পাড়ায়। চলচ্চিত্রকাররা বলছেন, এই ধারাবাহিকতায় ঢাকার চলচ্চিত্রেরও উন্নয়ন ঘটছে। এখানে এখন উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর বিগ বাজেটের চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে এবং দর্শক তা সাদরে গ্রহণ করছে। এর প্রমাণ চলতি বছরের এ পর্যন্ত মুক্তিপ্রাপ্ত ৮০ শতাংশ চলচ্চিত্রের ব্যবসায়িক সফলতা। এই বছরে এ পর্যন্ত হিটের তালিকায় নাম লেখানো ছবিগুলো হলো_ ইফতেখার চৌধুরীর 'দেহরক্ষী', জাকির হোসেন রাজুর 'পোড়ামন', শাহিন সুমনের 'অন্যরকম ভালোবাসা' এবং বদিউল আলম খোকনের 'নিষ্পাপ মুন্না'।

এ ছবিগুলোর ওপেনিং কালেকশন ছিল গড়ে ৯০ শতাংশ। দ্বিতীয় সপ্তাহেও কালেকশনের পরিমাণ ৮০ শতাংশের নিচে ছিল না। বুকিং এজেন্সির হিসেবে কোনো ছবির ওপেনিং কালেকশনের গড় ৭০ শতাংশ হলেই তাকে হিট বলে গণ্য করা হয়। সে হিসাবে উলি্লখিত চারটি ছবি সুপার হিটের তালিকায় চলে এসেছে। বাকি হিট পাঁচটি ছবি হলো_ জর্জ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার, টেলিভিশন, প্রেম প্রেম পাগলামী, জটিল প্রেম এবং রোমিও ২০১৩। তা ছাড়া ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত বদিউল আলম খোকনের 'মাই নেম ইজ খান', পি এ কাজলের 'ভালোবাসা আজকাল', অনন্ত জলিলের 'নিঃস্বার্থ ভালোবাসা'র ওপেনিং গড় কালেকশন ছিল ৯৫ থেকে ১০০ ভাগ। সে হিসাবে এ বছরের এখন পর্যন্ত ৮ মাসে ১৬টি ছবি সুপারহিটের তালিকায় নাম লেখিয়েছে। চলচ্চিত্রকারদের মতে, গত ৭ বছরের মধ্যে একই সময়ে এটি সর্বোচ্চ হিটের রেকর্ড। তাই বলা যায়, ঢাকার চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরেছে।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.