আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

(NCTB Book ) তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ধর্ম ১ম অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর

শহীদের খুন লেগে, কিশোর তোমার দুই হাতে দুই, সূর্য উঠেছে জেগে। -------হাসান হাফিজ আরবী আমার পাঠ্য বিষয় ছিল না, কিন্তু আমার এক আত্মীয় খুব পীড়াপীড়ি করল তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ধর্ম বইয়ের ১ম ও ২য় অধ্যায়ের প্রশ্নগুলোর উত্তর তৈরি করে দিতে। কথায় আছে না,"পড়েছি মোগলের হাতে, খানা খেতে হবে সাথে"-শত ব্যস্ততার মাঝে তাই করে দিতে হলো । আর আপনাদের সাথে তা শেয়ার করলাম, যদি কারো উপকারে আসে। আমার জন্য দোয়া করবেন।

************************************************** ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা তৃতীয় শ্র্রেণি প্রথম অধ্যায়--------------------আকাইদ খ. সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন ১। আল্লাহ তায়ালার চারটি গুণের নাম লিখ। উত্তর: আল্লাহ তায়ালার চারটি গুণের নাম হলো- ক) আল্লাহু খালিকুন ( ) অর্থ আল্লাহ স্রষ্টা খ) আল্লাহু রাব্বুন ( ) অর্থ আল্লাহ পালনকারী গ) আল্লাহু রাজ্জাকুন ( ) অর্থ আল্লাহ রিজিকদাতা ঘ) আল্লাহু রহমান ( ) অর্থ আল্লাহ দয়ালু ২। মহান আল্লাহর পাঁচটি সৃষ্টির নাম লিখ। আমরা যা কিছু দেখতে পাই অথবা দেখতে না পাই, সবকিছুই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন ।

এদের মধ্যে পাঁচটি সৃষ্টির নাম হলো- ক. মানুষ খ. পশুপাখি, গ. গাছপালা, ঘ. চন্দ্র-সূর্য ঙ. নদী-নালা ৩। ইমান কাকে বলে? মহান আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি সব কিছু জানেন, শোনেন ও দেখেন। হযরত মুহাম্মদ (সা.)আল্লাহর প্রেরিত রাসুল।

এসব মনে প্রাণে বিশ্বাস করাকে ইমান বলে। ৪। আল্লাহু খালিকুন অর্থ কী? আল্লাহর অনেকগুলো গুণবাচক নাম আছে। তার মধ্যে একটি নাম হলো “আল্লাহু খালিকুন” । আর “আল্লাহু খালিকুন” অর্থ হলো আল্লাহ স্রষ্টা ৫।

হাত, পা না থাকলে আমাদের কী অসুবিধা হতো? হাত, পা না থাকলে আমাদের নানা ধরনের অসুবিধা হত। আমরা কোন কিছু ধরতে পারতাম না, হাঁটতে পারতাম না, কোন কাজ করতে পারতাম না। ৬। রাজ্জাক শব্দের অর্থ কী? আল্লাহর অনেকগুলো গুণবাচক নাম আছে। তার মধ্যে একটি নাম হলো “রাজ্জাক” ।

আর রাজ্জাক শব্দের অর্থ রিজিকদাতা। ৭। “রব” শব্দের অর্থ কী? আল্লাহর অনেকগুলো গুণবাচক নাম আছে। তার মধ্যে একটি নাম হলো “রব” । আর “রব” শব্দের অর্থ পালনকারী।

গ। বর্ণনামূলক প্রশ্ন ১। আল্লাহ তায়ালা আমাদের কীভাবে লালন-পালন করেন? উত্তর : আমরা যা কিছু দেখতে পাই সবই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। আবার এমন অনেক কিছু আছে যা আমরা দেখতে পাই না, সেগুলোও তিনিই সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের লালন-পালনের ব্যবস্থাও করেছেন। আমাদের চারপাশে রয়েছে জীব-জন্তু, পশুপাখি, গাছপালা, আরও অনেক কিছু।

এগুলো তিনিই সৃষ্টি করেছেন আবার তিনি এগুলোকে খাদ্য, পানি ও আলো-বাতাস দিয়ে লালন-পালন করেন। সব জীবজন্তু, পশুপাখি, তৃণলতা ও গাছপালা খাদ্য গ্রহণ করে বেঁচে থাকে, কিন্তু সবার খাদ্য এক রকম নয়। আমরা মানুষ—ভাত, মাছ, গোশত ইত্যাদি খাই। আবার ফলমূল ও শাকসবজি খাই। পশুপাখি ও জীবজন্তু ঘাস, পাতা, তৃণলতা ইত্যাদি খায়।

গাছপালা তার শিকড় দিয়ে রস শুষে নেয়, বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে। পাতার সাহায্যে সূর্যের আলো থেকে খাদ্য প্রস্তুত করে। মানুষ অক্সিজেন গ্রহণ করে আর কার্বন ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করে। আবার গাছ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে আর অক্সিজেন ত্যাগ করে । নদনদী, খালবিল, এমনকি গভীর সাগরে কোটি কোটি মাছ ও অন্যান্য প্রাণী আছে।

তাদের জন্য আল্লাহ পানির নিচে শেওলা ও অন্যান্য খাদ্য সৃষ্টি করে দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—‘ভূপৃষ্ঠে যত প্রাণী আছে সবার খাদ্যদানের দায়িত্ব আমার। ’ এ পৃথিবীতে যা কিছু আছে তাদের লালন-পালনের দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালার। ২। মায়ের দুধের সাথে কোনো খাদ্যের তুলনা হয়না কেন? শিশু জন্মের আগেই মহান আল্লাহ মায়ের বুকে দুধের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।

মায়ের দুধ শিশুর জন্য একটি উত্তম খাবার । অন্য খাবারের সাথে এর কোনো তুলনা হয় না, কারণ- ক) মায়ের দুধে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান সঠিক মাত্রায় থাকে। খ) মায়ের দুধ পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত। গ) মায়ের দুধে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মায়-যার ফলে শিশুর অসুখ বিসুখ কম হয়। ঘ) মায়ের দুধে শিশুর বুদ্ধি বাড়ে।

ঙ) মায়ের দুধ শিশু মৃত্যুর হার কমায়। চ) মায়ের দুধ সহজে হজম হয় । ছ) মায়ের দুধে পূর্ণমাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ থাকে বলে শিশুর রাতকানা হবার সম্ভাবনা থাকে না। জ) মায়ের দুধ বিশুদ্ধ ও খাঁটি। ঝ) মায়ের দুধে পানি, চিনি, ফিডার এসব কিছুই লাগে না।

ঝ) মায়ের দুধ জ্বাল দিতে বা গরম করতে হয় না। ঞ)মায়ের দুধ খাওয়ালে শিশুর সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক গভীর হয়। তাই মায়ের দুধের সাথে কোনো খাদ্যের তুলনা হয়না । ৩। রাব্বুল আলামীন অর্থ কী? রাব্বুল আলামীন অর্থ “সকল সৃষ্টির পালনকারী”।

মহান আল্লাহ শুধু আমাদের রব নন। তিনি হচ্ছেন রাব্বুল আলামীন। সকল সৃষ্টিজগতের পালনকারী। তিনি সকল জীবকে খাদ্য, পানি ও আলো-বাতাস দিয়ে লালন-পালন করেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—‘ভূপৃষ্ঠে যত প্রাণী আছে সবার খাদ্যদানের দায়িত্ব আমার।

’এ পৃথিবীতে যা কিছু আছে তাদের লালন-পালনের দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালার। ৪)গাছপালা, শাকসবজি কী থেকে খাদ্য গ্রহন করে? মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন নানারকম গাছপালা, শাকসবজি। আমাদের মতো গাছপালাও খাদ্য গ্রহণ করে। গাছপালা, শাকসবজি মাটি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে।

গাছপালা তার শিকড় দিয়ে মাটি থেকে রস শুষে নেয়, বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে। পাতার সাহায্যে সূর্যের আলো থেকে খাদ্য প্রস্তুত করে। ৫। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন কেন? আল্লাহপাক সাত আসমান জমিন সৃষ্টি করেছেন, জান্নাত-জাহান্নাম তৈ্রি করেছেন, আরো কত কত কিছু সৃষ্টি করেছেন । তিনি দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন, এতে আছে সূর্য, চন্দ্র, নদী, সাগর, গাছপালা, হরেক রকম প্রাণী- আরো কত কি ! এ সবকিছুই তিনি তৈরি করেছেন মানুষের জন্য ।

আর মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য । ৬। আমাদের নবীর নাম নিলে কী বলতে হয়? মহান আল্লাহ পৃথিবীতে অনেক নবি-রাসুল পাঠিয়েছেন। সকল নবি ও রাসুলগণের মধ্যে আমাদের নবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) হলেন সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ। আমাদের নবীর নাম নিলে বলতে হয় “সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম”।

৭। আসমানি কিতাব কাকে বলে? মানুষকে পথ দেখানোর জন্য আল্লাহ আসমান থেকে পৃথিবীতে অনেক বাণী পাঠিয়েছেন। এসকল বাণী সমূহকে কিতাব আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এসকল কিতাবকে আসমানি কিতাব বলা হয়। আসমানি কিতাব ১০৪ খানা।

কুরআন মাজিদ একটি আসমানি কিতাব। ৮। সহিফা কাকে বলে? মানুষকে পথ দেখানোর জন্য আল্লাহ আসমান থেকে পৃথিবীতে অনেক আসমানি কিতাব পাঠিয়েছেন। এসকল আসমানি কিতাব সমুহের মধ্যে ৪ খানা বড় আর ১০০ খানা ছোট। ছোট আসমানি কিতাবসমূহকে সহিফা বলা হয়।

৯। আখিরাত কাকে বলে? আমাদের এই দুনিয়ার জীবনকে ইহকাল বলা হয়। মানুষ চিরদিন বাঁচে না, মরে যায়। যার জীবন আছে তার মৃত্যু আছে। মৃত্যুর পরের জীবনকে আখিরাত বলা হয়।

আখিরাত অর্থ পরকাল। আখিরাতের শুরু আছে, শেষ নেই। পরিকল্পিত কাজ ১। আল্লাহর পরিচয় জ্ঞাপক দশটি বাক্য লিখ। আল্লাহর পরিচয় জ্ঞাপক দশটি বাক্য হলো- ক. আল্লাহ এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করেছেন।

খ. আল্লাহ রিজিকদাতা । গ. আল্লাহ পালনকারী। ঘ. আল্লাহ পরমদয়ালু । ঙ. আল্লাহ এক । চ. আল্লাহর কোনো শরিক নেই ।

ছ. আল্লাহর সাথে কারও তুলনা হয় না । ঝ. আল্লাহ সবকিছু জানেন । ঝ. আল্লাহ সবকিছু শুনেন। ঞ. আল্লাহ সবকিছু দেখেন। ২।

আল্লাহর দশটি সৃষ্টির নাম লিখ। আল্লাহ অসংখ্য জিনিস সৃষ্টি করেছেন। এসকল সৃষ্টির মধ্যে দশটি সৃষ্টি হলো- ক. আল্লাহ এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করেছেন। খ. আল্লাহ অসংখ্য ফেরেশতা সৃষ্টি করেছেন। খ. আল্লাহ উঁচু পাহাড়-পর্বত সৃষ্টি করেছেন।

গ. আল্লাহ নদী-নালা, গভীর সমুদ্র সৃষ্টি করেছেন। ঘ. আল্লাহ নীল আকাশ সৃষ্টি করেছেন। ঙ. আল্লাহ চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছেন। চ. আল্লাহ সুন্দর সুন্দর গাছ-পালা ও বন-বনানি সৃষ্টি করেছেন। ছ. আল্লাহ অসংখ্য পশু-পাখি সৃষ্টি করেছেন।

জ. আল্লাহ নদী-নালা ও সমুদ্রে অসংখ্য মাছ ও প্রাণি সৃষ্টি করেছেন। ঞ. আল্লাহ আলো-বাতাস সৃষ্টি করেছেন। ৩। চারখানা আসমানি কিতাবের কোন খানা কোন রসুলের ওপর নাজেল হয়? আসমানি কিতাব যে রাসুলের উপর নাজেল হয় তাওরাত হযরত মূসা (আ.) যাবুর হযরত দাউদ (আ.) ইনজীল হযরত ঈসা (আ.) কুরআন মজিদ হযরত মুহম্মদ (সা.) ৪। শিক্ষার্থীরা আখিরাতের স্তর সমূহ খাতায় লিখবে।

আখিরাতের স্তর সমূহ হলো--- ১ম স্তর: কবর ২য় স্তর: কিয়ামত ৩য় স্তর: হাশর ৪র্থ স্তর: বিচার ৫ম স্তর: জান্নাত ও জাহান্নাম ***************************************** তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ধর্ম ২য় অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর চতুর্থ শ্রেণির ইসলাম ধর্ম ১ম অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর চতুর্থ শ্রেণির ইসলাম ধর্ম ২য় অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।