আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাসপাতালে সেবার চিত্রঃ

সুস্থ্য ব্লগিং করতে চাই.........

গত ২০ আগস্ট আমার বাবার হার্ট অ্যাটাক হলে তিনি রংপুর মেডিকেলে টানা ৭ দিন ছিলেন সিসিইউ-তে। তখন বুঝতে পারি কতোটা অসহায় আমরা সেবাদানকারী এই প্রতিষ্ঠানের কাছে। সিসিইউ- যেখানে সুষ্ঠু, পরিপাটি, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ থাকার কথা, সেখানে একজন সুস্থ মানুষও নিজেকে সুস্থ মনে করতে পারে না। যেখানে এসি থাকা সত্ত্বেও কোনো কারণ ছাড়া বন্ধ রাখা হয় আর কক্ষের পরিচ্ছন্নতার কথা নাইবা বললাম। মনে হলো এর থেকে আমাদের বাসার স্টোর রুমও পরিষ্কার, যেখানে কাউকে সেবা দেয়া যেতে পারে।

এবার আসি নার্স বা ওয়ার্ডবয়/ গার্ল প্রসঙ্গে। নার্স মানে সেবক/ সেবিকা- রোগীদের সেবা করাই যাদের ধর্ম এবং কর্ম। কিন্তু সেবা দেয়া তো দূরে থাক তাদের কাছ থেকে বিন্দুমাত্র সহানুভূতি কিংবা ভালো ব্যবহার পাওয়া যায় না। দেখলাম কিছু গরিব মানুষকে যারা সিট পায়নি, রোগীকে মেঝেতে রেখেছে, তাদের সঙ্গে কীরকম দুর্ব্যবহার করে এইসব নার্স বা ওয়ার্ড বয় বা গার্ল। এরা শুধু এসে রোগীকে ওষুধ দিয়ে যায় বা ইনজেকশন দেয়।

কিন্তু সেটাও দিচ্ছে নিজেদেরকে রাজা ভেবে আর রোগী বা রোগীর সঙ্গে যারা থাকে তারা প্রজা। আমরা তাদের কাছে জিম্মি। এদের কথাবার্তা, চলাফেরা সবকিছুতেই ডোন্ট কেয়ার ভাব। এরাও কিন্তু নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছে। অথচ নার্স হবার একটা ডিগ্রি নিয়ে এদের ভাবসাবই পাল্টে গেছে।

যাদেরকে প্রয়োজনের সময় পাওয়া যায় না, টাকা না দিলে যারা কথা শোনে না তাদের সেবক/ সেবিকা উপাধি দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। এবার আসি ডাক্তার প্রসঙ্গে। ডাক্তার রাউন্ডে কখন আসবেন তা জানার উপায় নেই। হঁ্যা কিছু ডাক্তার আছেন যাঁরা আন্তরিক কিন্তু তাঁরা কোনো কথা শুনতে চান না। অর্থাৎ রোগীর সঙ্গে আমরা যারা থাকি, তাদের অনেক কিছু জানার থাকে কিংবা ডাক্তারকে বলার থাকে যা তাঁরা কখনোই শুনতে চান না! আর এসব কিছু ঠিকমতো না জানলে আমরা রোগীর সেবাই বা করবো কীভাবে, আর সচেতনই বা হবো কীভাবে? যেমন আমার বাবার ইসিজি রিপোর্টে আসে এটা তাঁর দ্বিতীয়বার হার্ট অ্যাটাক।

অথচ আমরা বুঝতে বা জানতে পারিনি প্রথমবার কখন তাঁর অ্যাটাক হয়েছিলো কিংবা কী ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে আমরা বুঝবো যে এটা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে বা কীভাবে সচেতন হবো সে বিষয়ে যখন রাউন্ডে আসা ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছি, তাঁরা আমার কথা না শুনে শুধু বলেন- এগুলো আপনাদের জানার দরকার নেই, ওষুধগুলো খাওয়ান! রোগীর সার্বিক অবস্থা কী বা কী ধরনের যত্ন তাঁর নেয়া উচিত বা কীভাবে আমরা সচেতন হবো- এই বিষয়গুলো যদি আমরা না জানতে পারি তাহলে কী করে আমরা আমাদের প্রিয়জনকে সুস্থ করে তুলবো? ডাক্তারদের লিখে দেয়া ওষুধেই তো শুধু রোগী সুস্থ হতে পারে না, তার জন্য প্রয়োজন সেবা ও সচেতনতা। টাকার বিনিময়েই আমরা সেবা নেয়ার জন্য হাসপাতাল বা ডাক্তারদের কাছে যাই। কিন্তু বিনিময়ে আমাদের হতাশ হতে হয়। যা হোক, কতর্ৃপক্ষ, ডাক্তার ও নার্সদের যথাযথ পদক্ষেপ, মানসিকতার পরিবর্তনই দিতে পারে হাসপাতালগুলোর সেবার চিত্র পাল্টে দিতে। হাসপাতালে সুস্থ, সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।