আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুই মহানগরে দীর্ঘদিন কমিটি নেই আওয়ামী লীগের

আট মাস আগে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হলেও ঝুলে আছে কমিটি গঠন। কেন্দ্র থেকে এ নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাও রাখা হয়নি। দীর্ঘ নয় বছর ধরে পুরনো নেতৃত্বে চরম অস্থিরতার মধ্যে রাজধানীতে কার্যক্রম চলছে ক্ষমতাসীন দলের। নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ও কমিটি গঠন ইস্যুতে কর্মীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।

দলীয় কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি নেই। ওয়ার্ড, থানা পর্যায়ে সৃষ্টি হয়েছে চরম বিশৃঙ্খলার। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, কমিটি গঠন নিয়ে কেউ কথা রাখেনি।

মহানগরের নেতৃত্বে সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার প্রভাব বরাবরই প্রাধান্য পেলেও প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছে একাধিক গ্রুপ। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ সংগঠনে যতটা না সক্রিয়, তার চেয়ে নিজের বলয় নিয়েই ব্যস্ত বলে অভিযোগ রয়েছে নেতা-কর্মীদের।

তারা জানান, দুঃসময়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ রাখলেও তার অবদান এখন কর্মীদের কাছে ভাটা পড়েছে। অন্যদিকে, প্রভাবশালী আরেক নেতা যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ওয়ান-ইলেভেনের সময়ে সাহসী ভূমিকা রেখে কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। দল ক্ষমতায় আসার পর তিনি বদলে গেছেন। দুঃসময়ে কর্মীবান্ধব থাকলেও আইন প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির কারণে কর্মীদের সঙ্গে অনেকটা দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে। একটি ক্ষুদ্র অংশ তাকে ঘিরে রাখে বলেও অভিযোগ।

কথিত আছে, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম আলাদা আলাদা গ্রুপের নেতৃত্ব দেন। জানতে চাইলে এম এ আজিজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'মহানগর আওয়ামী লীগে কোনো গ্রুপ নেই। যারা দলের সুবিধাবাদী, চাওয়া-পাওয়ার জন্য রাজনীতি করেন, তারাই এমন প্রচার চালাতে পারেন। ' কমিটি গঠন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আশা করি শীঘ্রই কেন্দ্র থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে। ' অনেকটা নিয়ম রক্ষায়ই গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

তখন বলা হয়েছিল, কেন্দ্রের সঙ্গে মহানগর কমিটিও ঘোষণা দেওয়া হবে। কিন্তু আট মাসেও এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেই। মহানগর সম্মেলন থেকে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানাগুলোয় সম্মেলনের তাগিদ দেওয়া হলেও সাড়া মেলেনি। সূত্র জানায়, মহানগর সভাপতি মেয়র হানিফ মারা যাওয়ার পর ৯ বছর ধরেই চলছে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দিয়ে। আন্দোলন সংগ্রামে ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত এই নেতার মৃত্যুর পর মহানগর আওয়ামী লীগে যেন শনির দশা দেখা দেয়।

চার দফায়ই ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পরও অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্য। শীর্ষ পর্যায় থেকে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড, সব জায়গায় কোন্দল। অনেক জায়গায় রয়েছে একাধিক কমিটি। এক সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি নিয়েও চলছে কিছু ওয়ার্ড।

কর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে হতাশার সৃষ্টি হওয়ায় ঝিমিয়ে পড়েছে নগর আওয়ামী লীগের কার্যক্রম। ক্ষুব্ধ কর্মীরা আগের মতো দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন না। ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও। ২০ জুন নগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বক্তব্য দেওয়ার সময় দলকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। কিন্তু তার বক্তব্যের মধ্যে একাধিক ওয়ার্ড সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চিৎকার শুরু করেন।

তারা বলতে থাকেন, 'দলকে শক্তিশালী করতে হলে ওয়ার্ড নেতাদের কথা শুনতে হবে'। এ সময় সবাই হইচই করতে থাকেন। বলেন, 'আপনি তো নেতা-কর্মীদের কথা শোনেন না'। এরপর মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া কর্মীদের শান্ত করেন। সূত্র আরও জানায়, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এম এ আজিজ ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে গণভবনে ডেকে এ নিয়ে আলোচনা করেন।

তিনি দলের প্রভাবশালী এক নেতাকে কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেন। কিন্তু ফল শূন্য। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, 'যত দ্রুত সম্ভব কমিটি ঘোষণা করা হবে। '

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।