আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সব কিছুতে শেখের ছাপ কেন? জন্মদিন পালনের টাকা কি ভুতে যোগায়?

সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল

আমাদের দেশে বৃটিশদের দাক্ষিন্যে একদল মানুষের সৃস্টি হয়েছিল। যাদের চিন্তা চেতনা ছিল, তারা উচ্চ বংশীয়, আর বাকি সব অচ্ছুৎ বা নিম্ন শ্রেণির। ওদের মুখে মুখে তৈরি হয়েছিল প্রবাদ। মোগল, শেখ, খান, পাঠান ... এ সবই নাকি উচ্চবর্নিয় বংশের পদবি। এরা বরাবরই শাসক শ্রেনীর সহযোগি হিসেবে থাকতো।

এমন কি স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় এরাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে কিছু নিম্ন শ্রেনীর মানুষের অনর্থক বিশৃংখলা সৃস্টির অপচেস্টা বলে মনে করতো। যদিও এ দেশের মাটির মানুষদের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে একজন শেখ মুজিব হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধু, কিন্তু তার কন্যার কল্যাণে তাকেও উচ্চ বংশীয় বলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দূরে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। বলাই বাহুল্য এতে বঙ্গবন্ধুর সরাসরি হাত নেই। তিনি অনেক চেস্টা করেছিলেন তার জোষ্ঠ্য কন্যাটিকে সুপথে আনতে। কিন্তু অন্দর মহলের সমর্থন না থাকাতে, তিনি সফল হতে পারেননি।

শেখ পরিবারের সর্বনাশের শুরু সেদিন থেকে হয়, যেদিন থেকে হাসিনা আঃ লিগের চালকের আসনে বসেন। আর সর্বনাশের চুড়ান্ত হয় যেদিন নাকে খত দিয়ে নানা ছল চাতুরি আর মিথ্যা কথা বলে ৯৬তে প্রধানমন্ত্রিত্ব লাভ করেন। শাসনের "শ" জ্ঞানের বিশাল ঘাটতি নিয়ে সেই শাসন কেমন ছিল, তার নজির ৯৬-২০০১ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে। তবে তার কপাল ভালো। মিডিয়া আর তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের চাপার জোরে (আর সন্ত্রাসিদের পেশিশক্তি তো এক নম্বরে ছিলই) আর ভারতের আশির্বাদে কোনমতে উৎরে গিয়েছিলেন।

২০০১ সালে ভরাডুবির পর শয়তানের অক্ষচতুস্টয়ের কাছে আত্মা বিক্রি করে পেছনের পথে আবারও ক্ষমতায় এসেছেন। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে শুরু হয় দেশকে শেখ নামকরন। বাবা-মা- ভাই- বোন- ভাবি-দাদা- দাদি নানা-নানি খালা খালু ফুপা মোদ্দা কথায় ১৪ গুস্টির নামকরনের পেছনে সরকারি টাকার শ্রাদ্ধ ঘটান তিনি। টাকার মধ্যেও বঙ্গবন্ধুর ছবি দিতে গিয়ে অবশ্য তার উচিত একটা শিক্ষা হয়েছিল। সে কথা অনেকেই জানেন।

২০০৮ সালে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এসে, তিনি আরেক ধরণের নোংরামি শুরু করেন। পেছনে লাগেন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পেছনে। রাতের আধারে কিংবা দিনের আলোয়, দলীয় ক্যাডার আর পুলিশের কড়া পাহাড়ায় একে একে বিভিন্ন স্থাপনা থেকে জিয়ার নাম উপড়ে ফেলা শুরু করেন। এমন কি বিমান বন্দরের নাম শুদ্ধ বদলে ফেলেন। ওদিকে দ্রব্যমুল্য, আইন শৃংখলা পরিস্থিতি, গ্যাস বিদ্যুৎ সংকট, দখলবাজি, চাদাবাজি, সন্ত্রাসবাজির রাশ টেনে ধরা তো দূরে থাক, ওদিকে কোন নজর নেই।

যেন জিয়ার নাম উপড়ে ফেললেই সব নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে। অথচ তার প্রভু দেশটির রাস্ট্রিয় ভাষাতেই জিয়া নামের যে শব্দ আছে, সেটি উপড়ানোর মত ক্ষমতা কি তার আছে? জিয়া দিয়ে অনেক গানও আছে। যেমন জিয়া বেকাকার হায়, জিয়া লাগে না। এ সব থেকে জিয়ার নাম মুছে মুজিবের নাম লাগাতে গেলে কেমন শোনাবে? মুজিব বেকাকার হায়, মুজিব লাগে না... হ্যা। অনেক হাস্যকর শোনাবে।

যেমন হাস্যকর হয়েছে এদেশ থেকে জিয়ার নাম মুছার অপকর্মটি। যাই হোক। নামকরনের সাথে সাথে আবার শুরু হয়েছে ১৪ গুস্টি নিয়ে নানা দিবস পালন। আচ্ছা স্বাধীনতার স্থপতি হিসেবে অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর নামে বিভিন্ন দিবস পালন করা শুধু যৌক্তিক নয়, অবশ্য পালনীয়। তবে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করে নয়।

তবে কোন যোগ্যতায় তার ছেলে মেয়েদের নিয়ে এত্ত মাতামাতি? (হাসিনা বাদে কেননা তিনি রাজনৈতিক নেত্রি এবং প্রধানমন্ত্রি)। সেদিন দেখলাম শেখ রাসেলের জন্মদিন পালন উপলক্ষ্যে ধাড়ি আর ধড়িবাজদের নর্তন কুদন। হাসিনা নিজেও শিশু কিশোরদের সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। রাসেল উনার ছোট ভাই ছিল। ব্যাক্তিগত পর্যায়ে হাসিনা, কামাল জামাল রাসেলকে নিয়ে দিবস পালন করতেই পারেন।

কিন্ত রাস্ট্রিয় পর্যায়ে এদের নিয়ে এত্ত মাতামাতি কেন? তারা শেখ মুজিবের ঘরে জন্ম নিয়েছেন, এতে তাদের যোগ্যতা কোথায়? এতো বিধাতার দয়া কিংবা প্রকৃতির দান। তাহলে কোন যুক্তিতে রাস্ট্রিয় পর্যায়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন? কামাল বেচে থাকতেই সন্ত্রাসি কায়দায় জমি দখল করে আবাহনি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ৯৬ সালে ওই রকম কায়দা তেই শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর হাসিনা মনে করলেন, তাহলে আরেক ভাই কি দোষ করলো? ধানমন্ডি ক্লাবকে হাইজ্যাক করে বানানো হলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। ৩২ নম্বরের বাড়িটি শেখ মুজিব পেয়েছিলেন পাকিস্থানের নুরানী ব্রাদার্সের কাছ থেকে।

না, কিনে নেননি। "উপহার" পেয়েছিলেন মন্ত্রি থাকার সময়। অর্থাৎ ধানমন্ডির উপর বংশ পরম্পরায় অধিকার হাসিনার নেই। এর পরেও ভাই ভাবি মা এদের সাথে ধানমন্ডিকে জুড়ে দেবার অর্থ কি? কারণ একটাই। নিজেদের ধানমন্ডির আশ্রাফ বংশিয় বলে প্রচার করা।

অথচ সবাই জানে, তার দাদা ছিলেন আদালতের মুহুরি। কলকাতার কোন লেখক নাকি অন্য ইতিহাস আবিস্কার করেছে। যা নিশ্চই করে আমাদের ভাবমুর্তির জন্য সুখকর নয়। রাসেলের জন্মদিনে ধেই ধেই করা নৃত্য করা, ভারতের এক ব্রাক্ষ্মন কন্যার কুল নস্ট করা সৈয়দ বংশীয় আওয়ামি সাধারণ সম্পাদক আশরাফ মিয়ার আবার দেখলাম বিভিন্ন বিষয়ে সবক দিতে। চুরি আবার সিনা জুরি।

দেশের মানুষ কস্টে আছে। আতংকে আছে। নামকরণ করে দেশের টাকা নস্ট করার পর এখন বিভিন্ন দিবস পালনে যেভাবে অর্থের অপচয় ঘটছে, তাতে সহসা উন্নতির আশা নেই। গোদের উপর বিষফোড়ার মত ভারত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করছে না। ( সীমান্তে মানুষ মারা তো আছেই, সাথে শুল্কমুক্ত এটা সেটা বাগিয়ে নেয়া, এমন কি ৫০ গজের মধ্যে কাটাতারের বেড়া পর্যন্ত দিতে কার্পন্য করছে না।

) এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, দেশের মানুষ যখন ভালো নেই, তখন কোন আনন্দে আর আয়েসে হাসিনা তার জ্ঞাতি গুস্টির নামে নামকরণ আর দিবস পালনে উন্মত্ততায় মেতে উঠেছেন? বেশি বাড় বাড়লে নাকি ঝড়ে পড়ে যায়। অতীত দেখেও কি তিনি শিক্ষা নেবেন না?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.