আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দৃষ্টি এখন ট্রাইব্যুনালের দিকে

আইসিসির নিরাপত্তা ও দুর্নীতি দমন কমিশন (আকসু) তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পরই হয়তো সব ঝামেলা মিটে যাবে_ এমনই ধারণা ছিল সবার। কিন্তু ঘটেছে উল্টো ঘটনা। এখন যেন ক্রিকেট বোর্ডের সংকট আরও বেড়ে গেছে। যদিও অভিযুক্ত ৯ জনের কে কী শাস্তি পাবে কিংবা কে মুক্ত হবে তা দেখার দায়িত্ব ট্রাইব্যুনালের। কিন্তু এটা তো ঠিক যে, অভিযুক্তদের ব্যাপারে আইসিসির অঘোষিত নির্দেশনা (তদন্ত প্রতিবেদন ও শাস্তির সুপারিশ) মানা না হলে তার প্রভাবটা বিসিবির ওপরই বর্তাবে।

কেননা ট্রাইব্যুনাল ও প্যানেল তো বিসিবি-ই গঠন করেছে।

প্রতিবেদন অনুসারে ফিক্সিংয়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের শাস্তি পাঁচ বছর থেকে আজীবন নিষিদ্ধ। আর যারা দুর্নীতির বিষয়টি জেনে চুপচাপ ছিল তাদের শাস্তি এক বছর থেকে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ। অভিযুক্ত ছয় বাংলাদেশির মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধেই ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ। কেবলমাত্র মোহাম্মদ রফিককে দোষী করা হয়েছে দুর্নীতির বিষয়ে তথ্য না জানানোর জন্য।

তাছাড়া ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের মালিক সেলিম চৌধুরী, তার ছেলে শিহাব চৌধুরী, মোহাম্মদ আশরাফুল, মাহবুবুল আলম রবিন ও মোশারফ হোসেন রুবেল সরাসরি ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত। আশরাফুল অবশ্য তদন্ত প্রতিবেদনের আগেই নিজের দোষ স্বীকার করে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। আকসুকে তদন্ত কাজেও সহায়তা করেছেন। তাছাড়া চারজনের চেয়ে তার তারকাখ্যাতিও বেশি। তাই আশরাফুলের ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল কি সিদ্ধান্ত নিবেন, আর বাকি চারজনও যদি নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন তাদেরই বা কী শাস্তি হবে _তা জানার জন্য যেন উদগ্রীব হয়ে আছেন দেশবাসী।

কয়েক দিন আগেও সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল আকসুর তদন্ত প্রতিবেদন, আর এখন লক্ষ্য ট্রাইব্যুনালের দিকে।

বিসিবি অবশ্য অনেক আগে থেকেই বলছে, দুর্নীতি নিয়ে তাদের অবস্থান 'জিরো টলারেন্স'। বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দৃঢ় কণ্ঠেই বলেছেন, দোষী প্রমাণিত হলে কেউ ছাড় পাবে না। কিন্তু বিসিবির এই তর্জন-গর্জন কী শুধু বাংলাদেশিদের জন্যই! চার্জশিট পাওয়ার পরও তো দাপটের সঙ্গে ঘরোয়া ক্রিকেট লিগ খেলে যাচ্ছেন লঙ্কান ক্রিকেটার কৌশল লোকুয়ারাচ্চি ও ইংল্যান্ডের ড্যারেন স্টিভেন্স। অথচ শোনা যাচ্ছিল, চার্জশিট পাওয়ার পর থেকেই অভিযুক্তরা ক্রিকেট খেলতে পারবে না।

এক্ষেত্রে বিসিবি যেন কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না! তাছাড়া বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাকি ফিক্সিংয়ের কালো ছায়া পড়েছিল। স্থানীয় এক পত্রিকায় তো তিন সাবেক তারকা খালেদ মাসুদ পাইলট, খালেদ মাহমুদ সুজন ও মোহাম্মদ রফিকেরফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়া নিয়ে প্রতিবেদনও করেছে। তাছাড়া আশরাফুলও নাকি আকসুকে বিষয়টি জানিয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও কলঙ্কিত কিনা, সাবেক তিন তারকাও জড়িত কিনা _সে বিষয়টিও সুরাহা করার দায়িত্ব এখন বিসিবির।

বিপিএলের তৃতীয় আসর হওয়ার কথা ডিসেম্বরে।

কিন্তু এবার বিদেশি ক্রিকেটাররা অংশ নিবেন কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। কেননা ফিকার সদস্য দেশ ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের খেলোয়াড়দের অনুমতি নাও দিতে পারে। ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেটাররাও তো আসবে না। খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক নিয়ে ফ্রাঞ্চাইজিগুলো ঝামেলা করার কারণেই বিপিএলের প্রতি অনীহা ফিকার। তাছাড়া দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকায় ইংলিশ পেশাদার ক্রিকেটারদের সংগঠন পিসিএর প্রধান নির্বাহী পোর্টার বলেছেন, 'বিপিএলে পারিশ্রমিক ঠিকমতো না পাওয়ার কারণেই ক্রিকেটাররা দুর্নীতির দিকে ঝুঁকে পড়ছে।

' একে তো ফিক্সিং ধাক্কা, তারপরও তৃতীয় আসরে বিদেশি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ নিয়ে সংশয়, আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিক্সিংয়ের গন্ধ _সব মিলিয়ে বিসিবি যেন সংকটের মধ্যে পড়ে গেছে।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.