আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ মহালয়া - মার ঘরে ফেরা


বাজে ওই আগমনি গান ঝরে শেফালি দোলে কাশের গুচ্ছ মধুর বায়ে হল উতলা পরাণ শুভ্র মেঘের ভেলা সুনীল আকাশে ধানের মঞ্জরী দোলে বাতাসে পুলকে জেগে ওঠে আনন্দ তান। শারদ অজ্ঞলী বাঁশির সুরে আনে আশার বাণী হৃদয় জুরে শিশির ভেজা ঘাসে ঝরা মালতী আসিবে ঘরে চির চেনা অতিথি বনে মর্মরে শুনি তারি আহ্বান। মা মেনকাঃ বর্ষা গেল আশ্বিন এল উমা এল কই শূন্য ঘরে কেমন করে পরাণ বেঁধে রই! ও গিরিরাজ সবার মেয়ে মায়ের কোলে এলো ধেয়ে আমারি ঘর রইল আধাঁর আমি কি মা নই! নাই শাশুড়ি ননদ উমার আদর করার নাই কেউ আদর করার নাই। অনাদরে কালি মেখে বেড়ায় পথে তাই, মোর গৌরী বড়ই অভিমাণী সে বুঝবে না মা কান পোরানি আনতে তারে সাধতে হবে ওর যে স্বভাব ওই। যাও যাও গিরিরাজ আনিতে গৌরী, উমা আমার ওগো কেমনে রয়েছে।

এক বছর গত হল কৈলাশে গিয়াছে। শুনেছি নারদের মুখে উমা আছে বড়ই দুখে, তার কাছে নাকি উমা ‘মা’ বলে কেঁদেছে। ভাঙ্গেতে ভোলা জামাই তো তোমার, সোনার প্রতিমা গৌরী আমার। ভাঙ্গে মত্ত হয়ে জামাই তো তোমার বসন ভূসন বেচে ভাঙ্গ খেয়েছে। আর না রাখিব গিরি প্রাণের গৌরী শিবের ঘরে এবারে আসিলে তারে পাঠাবো না পুন ফিরে।

নির্গুণ জামাতা হেরে, সমর্পিলে গিরিজারে সেও তো পালিতে নারে, শুনি গৌরী পালে তারে। নহে শিব পালনকারী, কহে তায় সংহারকারী জেনে শুনে সে ভিখারী কেন কন্যা দিলে তারে মনেতে রহিল কালি, গৌরী নাকি হল কালী দুঃখে কাটে চিরকালি, সুখ নাহি দিনেরও তরে। । হে গিরি শোন ধরি দুটি পায়। এনে দাও উমারে আমায় স্বপনে দেখেছি তারে লুটাতে ধুলায়।

লোকে বলে উমা নাকি উন্মাদিনী ঘর ছেরে হয়েছে সে শ্মশানবাসিনী। বসন ভূষণ নাই, অঙ্গে মেখেছে ছাই আপনি নাচিয়া সে যে ভোলারে নাচায়। কেমনে বোঝাই গিরি তুমি যে পাষাণ উমারে দেখিতে বুঝি আছে এ পরাণ। চেয়ে দেখ ওগো নাথ ঘরে ঘরে ওই মায়ের বুকেতে শিশু, আমাদেরর উমা কই। আত্মঘাতিনী হয়ে এ জ্বালা জুড়াই স্ত্রী বধের পাপ আমি দেবো গো তোমায়।

উমাঃ হর কর অনুমতি যাই হিমালয়ে জনক জননী বিনে বিদি মরি হৃদয়ে। এ জানা কি জানি ওমনি, আমি মা একা কমনি গিয়ে তিন দিন জন্যে রব পিত্রালয়ে। গণপতি লয়ে সপ্তমী প্রবেশা হয়ে আসিব ওই নাশি গুণে নবমী উদয় জানি মা মেনকা অন্ধ হল কেঁদে কেঁদে মরেছে কি আছে বেঁচে হতেছে সংশয়। । বাবা গিরিরাজঃ গিরি রাণী, রাণী এই নাও তোমার উমারে।

ধর ধর হরের জীবন ধন। কত না মিনতি করি, তুষিয়ে ত্রিশুলধারী প্রাণ উমা আনিলাম নিজ পুরে। রাণী এই নাও তোমার উমারে। দেখ মনে রেখ ভয়, সামান্যা তো নয় আর নয়। যারে সেবে বিধি বিষ্ণু হরে।

রাণী এই নাও তোমার উমারে। ও রাঙা চরণ দুটি হৃদে রাখে মধুর জ্যোতি। কি আদ্র বিচ্ছেদ নাহি করে। রাণী এই নাও তোমার উমারে। তোমার উমার মায়া, নির্গুণের স্বগুণ কায়া, ছায়া মাত্র জীবে নামে ধরে।

রাণী এই নাও তোমার উমারে। অসংখ্য তাপেরই ফলে কপোত তনয়া ছলে মা বলে তোমারে মেনকা রাণী, এই নাও তোমার উমারে। কমলাকান্তের বাণী, ধন্য ধন্য গিরিরাণী। তব পূণ্য কে কহিতে পারে। এই নাও তোমার উমারে।

ধর ধর হরের জীবন ধন। এই নাও তোমার উমারে। । মাঃ বোঝাবো মায়েরই ব্যাথা গনেশ তোর আটকে রেখে। মায়ের প্রাণে বাজে কেমন বুঝবি তখন আপনি ঠেকে।

মা গো...... তবু দেখে আছে আমার, গিরিপুরী ছিল আধাঁর। আমি পাঠাবো না তোরে তো আর লিখতে গেলে কৈলাশ থেকে। জামাই সে তো পেটের ছেলে, দোষ কি হবে হেথায় এলে। বেড়ান তিনি নেচে খেলে, রাজা গিয়ে আনবে ডেকে। বেড়ায় তো সে যেথায় সেথায়, যে ডাকে সে তার কাছে যায়।

মাগো, রাজার জামাই থাকবে হেথায় প্রাণ জুড়াবে জুগল দেখে। উমাঃ মা, কোলে তুলেনে গো মা উমারে তোর বড় ক্লান্ত হয়েছি পথে জেগেছে মা ঘোর। এসেছি মা শিবে ছেরে তাতে যে মন পড়ে তার উপরে তোরি তরে হয়েছি যে কাতর। জগতেরই নাথ মা গো মোর ভোলানাথ দেবাদিদেব সে যে, তবু যে অনাথ। যেন মা শিশুর প্রাণ, আঁচল ছারেনা হায় আমি তার সে আমার বুকেরই পাঁজড়।

মাঃ আয় মা উমা রাখব এবার ছেলের সাজে সাজিয়ে তোরে, মার কাছে তুই থাকবি নিতুই, যাবিনে আর শ্বশুড় ঘরে। মা হওয়ার মা কি যে জ্বালা বুঝবি না তুই গিরিবালা, তোরে না দেখিলে শূন্য এ বুক, কি যে হাহাকার করে। তোর টানে মা শংকর শিব আসবে নেবে গভির রাতে, মাগো আনন্দেরই হাট বসাবো নিরানন্দ পৃথিবীতে। দেখব বলে মা তোর লীলা পরে আছি পাষাণ শিলা, ওমা কৈলাসে তুই নাচবি এবার বৃন্দাবনের নুপুর পড়ে।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।