আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গাজীপুরে বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে তোপের মুখে অভিযোগকারী



গাজীপুর জেলার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল আলম ঝিনুক ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ তারিক এজাজের বিরুদ্ধ এখতিয়ার বহির্ভুত ক্ষমতা প্রয়োগের অভিযোগ দায়ের করে তোপের মুখে পড়েছেন অভিযোগকারী অ্যাডভাকেট মো. শাহজাহান। বুধবার গাজীপুর আদালত পাড়ায় ওই ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এনিয়ে বুধবার (২৯-০৯-১০) দিনভর আদালত পাড়ায় নানামুখি আলোচনা ছিল আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী জনগণ ও আদালত অঙ্গনের অন্যান্য বাসিন্দাদের মধ্যে। জানা গেছে, গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের দায়িত্বরত বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. শাহজাহান সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি বরাবরে গাজীপুর জেলার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল আলম ঝিনুক ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ তারিক এজাজের বিরুদ্ধে এখতিয়ার বহির্ভুত ভাবে ক্ষমতা খাটিয়ে জামিন দেওয়ায় কারণে নারী শিশু মামলা নম্বর ৩৭০/১০ এবং আরো কয়েকটি মামলার সুনির্দিষ্ট নম্বর ও ধারা উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে গাজীপুরের জেলা জজ তানজিনা ইসমাইলের নিকট বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তদ›ন্ত আসে।

অসমর্থিত সুত্রে জানা গেছে, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে দুই বিচারককে কারণ দর্শাও নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার আদালত শুরু হওয়ার সময়ে যথারীতি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল আলম ঝিনুক এজলাসে উঠেন এবং বিচার কাজে অংশ নেওয়া অপেক্ষমান আইনজীবীদের প্রতি আবেগ জড়িত কণ্ঠে তার বিরূদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়টি প্রকাশ করেন। বিচারক শহীদুল আলম ঝিনুক বিচার কাজ না চালিয়ে এজলাস ত্যাগ করেন এবং বুধবারের নির্ধারিত কোন মামলার কার্যক্রম গৃহিত হয়নি। গাজীপুর জেলার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নেজারত সুত্রে জানা গেছে বুধবার বিচারক শহীদুল আলম ঝিনুক কোন রকম ছুটি নেননি। ওই আদালতের জিআর মামলা পরিচালনাকারী কোর্ট পরিদর্শক রবিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে বিচারক শহীদুল আলম ঝিনুক আদালত থেকে নেমে যাওয়ার পর অতিউৎসায়ী কতিপয় প্রভাবশালী আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহানকে নারী শিশু আদালতে বিচার কাজ থেকে বিরত থাকতে চাপ সৃষ্টি করেন। বিচারদের তুষ্টি আদায়ের লক্ষে ওই সময়ে আইনজীবীদের দল ভারী হইতে থাকে, ফলে পিপি অ্যাডভোকেট শাহজাহান তোপের মুখে পড়েন। ওই সময় নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক আতাউর রহমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। বিচারকদের নামে অভিযোগ বিষয়ে নানামুখি আলোচনার মধ্যে অনেকে মনে করেছেন এভাবে অভিযোগ আনা ঠিক হয়নি। তারা কেউ কেন ঠিক হয়নি তা জানাতে পারেননি।

তারা অবশ্য নাম প্রকাশ করে মতামত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বারের মাধ্যমে বিষয়টি নিস্পত্তি করার অজুহাত তোলেন। ওই বিষয়ে গাজীপুর বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুদীপ কুমার চক্রবর্তীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি কালবেলাকে জানিয়েছেন সব ঘটনা শেষ হওয়ার পর তিনি এসব জানতে পেরেছেন এবং তিনি আশ্চর্য হয়েছেন। একই সাথে তিনি বলেন, অবস্থা এমন হলে কিভাবে বারের মাধ্যমে নিস্পত্তি করা যাবে আর এটি শাহজাহান সাহেবের ব্যক্তিগত বিষয়। এবিষয়ে পিপি শাহজাহান কালবেলাকে জানিয়েছেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১৯ ধারা মতে নারী শিশু আইনের অভিযোগের আসামীকে জামিন দেওয়ার ক্ষমতা কেবল নারী শিশু ট্রাইবুনাল ও উর্ধতন আদালতের। এবিষয়ে তিনি মৌখিকভাবে বিচারকদের নজরে আনার পরও কোন কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় পর তিনি প্রধান বিচারপতির নিকট অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ তদন্ত চলছে সত্য মিথ্যা যাচাই হওয়ার পূর্বে গোপনীয় বিষয় নিয়ে বিচারক শহীদুল আলম ঝিনুক আইনজীবীদের সাথে উন্মুক্ত এজলাসে আলোচনা করে ঠিক করেননি বলে মন্তব্য করেছেন। একই সাথে তিনি আবেগ তাড়িত হয়ে আইনজীবীদের উত্তেজিত করার চেষ্টা করেছেন। ফলে সুবিধা আদায়ের চেষ্টায় কতিপয় আইনজীবী তাকে চাপে ফেলার পায়তারা করেছেন। এই বিষয়ে বিচারকদের বিষয় হওয়ায় অনেকে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন আইনজীবী জানিয়েছেন, গোপন তদন্তে বিষয়টি প্রকাশ করে বিচারক কি সুবিধা আদায় করতে চেয়েছেন তা আন্দাজ করা যায়নি।

সবমিলিয়ে আইন আদালতের বিষয়কে অনেকে স্পর্শকাতর মনে করার কারণে প্রকৃত অবস্থা বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ঠ মহলে সকলের মধ্যেই আলোচনার ঝড় বয়ে গেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.