আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে আর যেন প্রতিরোধ সৃষ্টি হতে না পারে তা নিশ্চিত করতে বিচারের নামে তাহেরকে হত্যা করা হয়েছে। - ড. এম আনোয়ার হোসেন



স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে আর যেন প্রতিরোধ সৃষ্টি হতে না পারে তা নিশ্চিত করতে বিচারের নামে তাহেরকে হত্যা করা হয়েছে। - ড. এম আনোয়ার হোসেন --------------------------------------------------------------------- প্রফেসর ড. এম আনোয়ার হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োক্যামিস্ট্রি ও মলিক্যুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। পারিবারিক পরিচয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহেরের ছোট ভাই।

কর্নেল তাহেরের ফাঁসির মামলায় তিনিও ছিলেন আসামি এবং তারও ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়। সম্প্রতি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষিত হওয়ায় কর্নেল তাহেরের বিচারের বৈধতা চ্যালেঞ্জের আইনি পথ উন্মুক্ত হয়। এ বিচার চ্যালেঞ্জ করে তাহের পরিবারের রিট আবেদনকারীদের তিনি একজন। ভোরের কাগজের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি প্রহসনের বিচারে কর্নেল তাহেরের ফাঁসির নেপথ্য ষড়যন্ত্র, এ সময়ে সেই ঘটনার সত্যানুসন্ধানের তাৎপর্য Ñ এসব নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অমিতাভ মহালদার।

ভোরের কাগজ : দীর্ঘ ৩৪ বছর পর কর্নেল তাহেরের ফাঁসির বৈধতা বিচারের আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছেÑ এ মামলার রিটকারী এবং তাহের পরিবারের সদস্য হিসেবে আপনার প্রতিক্রিয়া কি? ড. এম আনোয়ার হোসেন : আমাদের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট যে রুল জারি করেছেন এটা আমি বলবো, তাহের পরিবারের কাছে তো বটেই বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনা সকল মানুষের কাছে এক অর্থে ঐতিহাসিক। ঐতিহাসিক এ কারণে যে, আমাদের রিটে যে আর্জি আছে সে কথাগুলো গত ৩৪ বছর ধরে আমরা বলে আসছি। কর্নেল তাহেরের পরিবার, কর্নেল তাহের সংসদ, যে রাজনৈতিক দলটির সঙ্গে তাহের যুক্ত ছিলেন তাদের পক্ষ থেকেও বারবার উচ্চারিত হয়েছে। এ ছাড়া দেশের সচেতন আলোকিত সব মানুষ, পত্রপত্রিকার পক্ষ থেকেও এ দাবিগুলো করা হয়েছে। তারপরও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি।

এ বিচার সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাদিÑ সর্বোপরি সত্যÑ এতোদিন অন্ধকারের নিচে চাপাই পড়ে থেকেছে। এর মুখ্য কারণ হচ্ছে এই যে, এদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার মাত্র সড়ে তিন বছরের মাথায় পরাজিত শক্তি হত্যা করেছিল। জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিল। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর কর্নেল তাহের ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল সাধারণ সৈনিকদের একটি অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে একটি মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন দেশকে পুনরায় মুক্তিযুদ্ধের ধারায় নিয়ে আসতে। সে চেষ্টা ফলপ্রসূ না হওয়ায় আরো প্রতিক্রিয়াশীল মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিল।

শুধু তাই নয় তারা একটা দীর্ঘ সময় বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিল। সেটাই হচ্ছে বাংলাদেশের অন্ধকার সময়। এবং এই অন্ধকারের নিচে চাপা পড়ে গিয়েছিল তাহের হত্যার বিচারের দাবি। এমনকি বঙ্গবন্ধুর নামও চাপা পড়ে গিয়েছিল। এবং তারপর তারা যে আইন প্রণয়ন করেছিল যেমন জিয়াউর রহমানের ৫ম সংশোধনী এর মাধ্যমে অন্ধকারের শক্তি তাদের সকল কৃতকর্মকে বৈধতা দিয়েছিল।

যেমন সামরিক শাসন জারি এবং সামরিক আইনের সকল কার্যকলাপ যার মধ্যে এই গোপন বিচারটিও পড়ে, তাকেও বৈধতা দেয়া হয়েছিল। কোনো প্রশ্ন যেন তার বিরুদ্ধে উচ্চারিত না হয় সে ব্যবস্থাও তারা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছিল ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে। এর ফলেই বলা যায় যে, ৩৪ বছর ধরে আমাদের যে দাবি, কর্নেল তাহের পরিবারের যে আকুতি তা উপেক্ষিত থেকেছে। কিন্তু আমরা এখন রিটটা করতে পেরেছি হাইকোর্ট ৫ম সংশোধনীকে বাতিল ঘোষণা করেছে বলে। ভোরের কাগজ : রিটের মূল বিষয়গুলো কী ছিল? ড. এম আনোয়ার হোসেন : রিটের মূল বিষয়গুলো ইতিমধ্যে পত্রপত্রিকায় এসেছে।

প্রথমেই যা বলা হয়েছে, তাহলোÑ এটা ছিল একটা গোপন বিচার এবং এ ধরনের বিচার সম্পূর্ণভাবে সংবিধান প্রদত্ত নাগরিকের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। দ্বিতীয়ত, এ গোপন বিচারের রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাবে না। এটাও সংবিধান পরিপন্থী। তৃতীয়ত, আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয় ১২১-ক ধারায়, সেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। কিন্তু দেয়া হলো ফাঁসি।

এটাকে বলা যায় আইনের শাসনের বিরুদ্ধে একটা নির্মম পরিহাস এবং আইন লঙ্ঘন। চতুর্থত, একজনকে ফাঁসি দেয়া হলো রায় ঘোষণার মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। তাতে করে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, এটা কোনো বিচার ছিল না, একটা ষড়যন্ত্র করে গোপন বিচার করে এবং আইনের চরম লঙ্ঘন করে একজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। সে হত্যাকাণ্ডের পেছনে আবার সেই সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান। তারপর, কর্নেল তাহের ছিলেন একজন জাতীয় বীর।

মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডার। তার একটি পা ছিল না। এমন একজন মানুষকে তারা হত্যা করলো। ভোরের কাগজ : এ ঘটনার নেপথ্যে কী ছিল? শুধুই কি ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করা, নাকি আরো সুদূরপ্রসারী কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্য? ড. এম আনোয়ার হোসেন : এর পেছনের মেটিফটা খুব পরিষ্কার। ট্রাইব্যুনালের প্রধান নিযুক্ত করা হয় কর্নেল পরে ব্রিগেডিয়ার হয়েছিলেন ইউসুফ হায়দারকে।

তিনি হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় থেকেও মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন। এই কোর্টটাতে আর দুজন ছিলেন সামরিক ব্যক্তি, আর দুজন বেসামরিক হলেও তারা কিন্তু বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন না, ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অন্যদিকে তাহের এবং তার সহযোগী যে ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয় তাদের সবাই কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা। এবং তারা কোন মুক্তিযোদ্ধা, যারা বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামেÑ স্বাধীনতা যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। এদের মধ্যে দুজন সেক্টর কমান্ডারÑ কর্নেল তাহের এবং মেজর জলিল।

আরেকজন আবু ইউসুফ বীরবিক্রম। তারপর অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যেমন, হাসানুল হক ইনু, আ স ম আব্দুর রবÑ যিনি ৩ মার্চ প্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। অন্যান্য যারা আছেন Ñ ড. আখলাকুর রহমান অত্যন্ত প্রথিতযশা একজন অর্থনীতিবিদ এবং স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ। আছেন এ বি এম মাহমুদ অত্যন্ত আলোকিত একজন সাংবাদিক, তখনকার তুখোড় ছাত্রনেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, তারপর শরীফ নুরুল আম্বিয়া। আর যারা সশস্ত্র বাহিনীর ছিলেন তারাও প্রত্যেকেই মুক্তিযোদ্ধা।

তাদের বিরুদ্ধে জিয়াউর রহমান তথাকথিত যে আদালতটি বানালেন সেখানে প্রধান নিয়োগ করলেন পাকিস্তানিদের একজন সহযোগীকে। সুতরাং এই জায়গাটাকেই লক্ষ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী যে শক্তিটা ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল এবং যাদের বিরুদ্ধে কর্নেল তাহের সাধারণ সৈনিকদের নিয়ে একটা প্রবল প্রতিরোধ রচনা করেছিলেন সেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যাদের প্রতিভূ ছিলেন জিয়াউর রহমান তারা কিন্তু চিহ্নিত করে ফেললো কারা তাদের সবচাইতে কঠিন প্রতিপক্ষ হতে পারে। এবং সেখানে তারা কর্নেল তাহের এবং তার সহযোগীদেরই চিহ্নিত করলো। যেমন খালেদ মোশাররফের সহযোগী যারা জিয়াকে বন্দী করেছিলেন তাদেরও কিছু করেননি জিয়া।

কিন্তু বেছে নিয়েছেন কর্নেল তাহেরকে। এজন্য যে স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ থেকে আর যেন কোনো প্রতিরোধ সৃষ্টি হতে না পারে। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, চার নেতাকে হত্যা করেছে। এরপর তারা নিশ্চিত করতে চেয়েছে আর যেন কোনো প্রতিরোধ সৃষ্টি না হয়। সে কারণে তারা ঠাণ্ডা মাথায় ষড়যন্ত্র করে কর্নেল তাহেরকে বিচারের নামে হত্যা করেছে।

ভোরের কাগজ : ৩৪ বছর পর এই সত্য অনুসন্ধান, এই ফিরে দেখার তাৎপর্য কী? ড. এম আনোয়ার হোসেন : এর তাৎপর্য বিশাল ও সুদূরপ্রসারী। একটা কথা বলতে পারিÑ বাংলাদেশ কিন্তু আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরুদ্ধে রায় কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে। ৫ম সংশোধনীর পর গত বৃহস্পতিবার ৭ম সংশোধনী বাতিল হয়েছে।

এদিকে কর্নেল তাহেরের গোপন বিচারের নথিপত্র চাওয়া হয়েছে আদালতের পক্ষ থেকে। বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে দেশটিকে একেবারে পাকিস্তান বানানোর যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল সে অবস্থা থেকে বাংলাদেশ কিন্তু ধীরে হলেও সুস্পষ্ট পদক্ষেপে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে আসছে। আবার আামি একথাও বলতে পারি যে, আমাদের সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে যাওয়ার একটা পথও কিন্তু তৈরি হয়েছে। এ সবকিছুই হচ্ছে যেটা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন, কোটি কোটি মানুষ যে স্বপ্ন দেখেছেন, যে কারণে তারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, চরম ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে নিয়েছেন সেটা হলো এটা একটা আধুৃনিক, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, একটা প্রগতিশীল মানবিক বাংলাদেশ অর্থাৎ সবকিছু মিলিয়ে যে ছবিটাÑ একটা সোনার বাংলা। সে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় বাংলাদেশ আবার শামিল হয়েছেÑ তেমনটিই আমরা দেখতে পাচ্ছি।

ভোরের কাগজ : সম্প্রতি উচ্চ আদালতের দেয়া বেশ কটি যুগান্তকারী রায় জনমনে আশার সঞ্চার করেছে, সত্য। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কি অনুরূপ ইতিবাচক ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে? ড. এম আনোয়ার হোসেন : একটা দেশের শক্তি আসলে কোথায়? এভাবে বলা যায় যে, সে শক্তির পরিমাপক বা পরিচায়কটা কি? একটা দেশের যে বিচার ব্যবস্থা সেটা স্বাধীনভাবে কাজ করছে কিনা এবং দেশে ন্যায়বিচার হচ্ছে কিনাÑ এটা কিন্তু একটা বড় পরিমাপক। এ থেকে বুঝা যায়, একটা দেশ কতোটুকু সভ্য, কতোটুকু অগ্রবর্তী, কতোটুকু আধুনিক, কতোটুকু মানবিক। সে বিচারে আমাদের যে বিচার ব্যবস্থা তার অতীত কিন্তু খুব আলোকিত নয়। যেমন বলতে পারি, কর্নেল তাহেরের যে গোপন বিচারে ফাঁসি হলো সে সময়তো প্রেসিডেন্ট ছিলেন এক সময়ের প্রধান বিচারপতি মি. সায়েম।

কিন্তু সায়েম তো মূহূর্তের মধ্যে জিয়ার রক্তচক্ষুর কাছে নতি স্বীকার করে সে মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সই করলেন। তিনি কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারতেন, কদিন সময় নিতে পারতেন। এভাবে আমরা দেখেছি সেনানায়করা যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই একজন বিচারপতি পাশে এসে দাঁড়িয়ে গেছেন। সে অবস্থা থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে এসেছে। মনে হচ্ছে বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থা একটা স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করতে শুরু করেছে।

এবং সেটার প্রভাব কিন্তু সর্বক্ষেত্রে পড়বে। রাজনীতিতে পড়বে। সংস্কৃতিতে পড়বে। মানুষের চিন্তা-চেতনায়ও পড়বে। সে কারণেই বলছি যে, একটা অন্ধকার থেকে আলোর পথে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছে।

ভোরের কাগজ : কয়েকদিন আগেই গেলো গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র নিপীড়নের সে কালো দিবস। আপনি ছিলেন সে ঘটনার অন্যতম ভিকটিম। সে ঘটনাও ঘটেছিল সামরিক ছত্রছায়ায়। ড. এম আনোয়ার হোসেন : সে সময় একটা সেনাচালিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল। বেসামরিক সরকারের পেছনে ক্রিয়াশীল কায়াহীন যে সরকার ছিল, সেটা সামরিক।

পুরো সামরিক বাহিনীও নয়, সামরিক বাহিনীর কিছু কিছু ষড়যন্ত্রকারী কালোশক্তি ও গোয়েন্দা সংস্থা। তারাই দেশ পরিচালনা করছিল। আমরা সে সময় দেখেছি জাতির বিবেক হিসেবে পরিচিত যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে পদানত করার জন্য তারা কী চেষ্টাই না করেছিল। ছাত্রদের ওপর অত্যাচার, শিক্ষকদের রিমান্ডে নেয়া, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করাÑ এসব কিছুই কিন্তু অতীতের অন্যান্য সামরিক শাসকরা যেভাবে করেছে সে একই ধারাবাহিকতায় করা হয়েছে। সেজন্যই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই কালো দিবস পালন করেই যাবে।

সে জন্যই, যেন সবাই এটা স্মরণ রাখে, একদিকে যেমন সচেতন মানুষ স্মরণ রাখবে। অন্যদিকে অগণতান্ত্রিক সামরিক স্বৈরশক্তিও যেন হুঁশিয়ার থাকে। ভোরের কাগজ : এ ঘটনায় ছাত্র-শিক্ষকদের সব মামলা ও সাজা কি প্রত্যাহার হয়েছে? ড. এম আনোয়ার হোসেন : বেশিরভাগ মামলাই প্রত্যাহার হয়েছে। ছাত্ররা মুক্ত আছে ঠিক। কিন্তু ছাত্রদের যে সাজা হয়েছিল, সেই সাজা রয়ে গেছে।

এটা ভবিষ্যতে তাদের চাকরি, বাইরে যাওয়া এসব ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারে। এ থেকে মুক্তির জন্য আমাদের শিক্ষদের বেলায় আমরা যা করেছিলাম সে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। আমাদেরও দুবছর সাজা হয়েছিল। আমরা উচ্চতর আদালতে আপিল করে জয়লাভ করেছি। অর্থাৎ পূর্ববর্তী সাজাটা খারিজ হয়ে গেছে।

ছাত্রদের বেলায়ও সেভাবে করতে হবে। তবে ছাত্রদের সমস্যা হলোÑ তারা লেখাপড়া করে, তাদের হাতে সময় কম। অর্থনৈতিক দিক দিয়েও বেশি সচ্ছল নয় তারা। সেজন্য রাষ্ট্রপক্ষ থেকেই যদি তাদের পক্ষে আদালতে উকিল নিয়োগ করে মামলা পরিচালনা করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সাজা থেকে অব্যাহতি পেতে পারে। ভোরের কাগজ : সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

ড. এম আনোয়ার হোসেন : ধন্যবাদ ভোরের কাগজকেও। ভোরের কাগজ / ২৮ আগস্ট ২০১০

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.