আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বৃহত্তর যশোরের ঝিনাইদহ জেলায় এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহি বটবৃক্ষ

আপাতত কিছু বলবোনা

এশিয়া মহাদেশের সর্ব্বেবৃহৎ বটগাছ বৃহত্তর যশোরের ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ থানার সুইতলা মল্লিকপুর গ্রামে। ঝিনাইদহ শহর থেকে দক্ষিণে সুইতলা মল্লিকপুর গ্রাম ১৮ মাইল পথ। মল্লিকপুর বাজারের সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছে বুড়ো বট। থানা পরিষদের কাঁচা পাকা সাপের মত সড়ক বটগাছের কোলে এসে থেমেছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় সবুজ পাহাড়।

গাছের শাখা প্রশাখা কোথাও মাটির সাথে মিশেছে। পুরো গাছটি দৃষ্টির মধ্যে আনা সম্ভব নয়। গ্রামবাসীর মতে গাছটি ৩০ বিঘা জমি দখল করে আছে। ১৩শ ঝুরি বটের সাম্রাজ্য প্রশস্খ করেছে। এর দীর্ঘ ৯৬ ফুট।

বয়স আড়াইশো তিনশো বছর। এ গাছ নিয়ে অনেক কিংবদন্তী আছে। এলাকাবাসীর কাছে জানা গেল, এখানে আগে কুমারদের বসতি ছিল। কুমার পরিবারের একটি কুয়ার মধ্যে আজকের বিশাল বটগাছটির জন্ম। এখন গাছের নিচে কোন বসতি নেই।

সাত গ্রামের লোক বট গাছটিকে মানে। ফি বছর এ গাছের নিচে কালীপুজা অনুষ্ঠিত হয়। হিন্দু ধর্মের লোকরা এখানে প্রার্থনা করে। মনের আশা পূরণের জন্যে অনেকে গাছের শাখা জড়িয়ে ধরে কাঁদে। সবাই বুড়ো বটকে সম্মান করে।

কেউ গাছের কোন ক্ষতি করে না। গ্রামবাসী জানলেন ক’বছর আগে কুদরতউল্লা নামে একজন গাছের ডাল কাটলে অসুস্খ হয়ে পড়ে। রক্ত বমি হয়। কুদরতের স্ত্রী বট গাছ আগলে ধরে কান্নাকাটি করে। স্বামীর প্রাণভিক্ষা চায়।

শেষে তার স্বামী সুস্খ হয়ে উঠে। এরকম অনেক গল্প মল্লিকপুর বাসীদের কাছে শোনা যায়। বিখ্যাত বটের মূল গাছটি মারা গেছে। এলাকায় বেলায়েত মিঞা সেখানে একটি বটের চারা রোপন করেছেন। চারাটি এখন তরুণ অন্য ঝুড়িগুলো তাকে জায়গা করে দিয়েছে।

মূল গাছটির অনেক ঝুরি বেড়ে উঠেছে। ঝুরিগুলো শেকড় মেলেছে। তারাও সবুজ হয়েছে বেশ। দেখে মনে হবে শত শত বটবৃক্ষ। তবে কিছু ঝুরি পোকায় নষ্ট করে দিয়েছে।

ঝড়ে উপড়ে গেছে অনেক ঝুরির শেকড়। এরই মধ্যে বেশ ক’টি ঝুরির গাছ পৃথক হয়ে গেছে। ফলে গাছটি এখন আর এক নেই। মল্লিকপুর বাজার কমিটি লোকেরা নিজেদের উদ্যোগে গাছটি দেখাশোনা করে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পিকনিক পার্টির লোকেরা এসে গাছের ওপর নির্যাতন চালায়।

নিষেধ অগ্রাহ্য করে ডাল কাটে। জানা গেছে, তিনমাস আগে এরশাদের সময় পর্যাটকদের জন্যে একটি রেস্টহাউস নির্মাণ করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে রেস্ট হাউজটি আজ অব্দি বাসযোগ্য করা হয়নি। সরকারী কোনো কর্মচারী নেই গাছ তদারকের। মল্লিকপুরে বিখ্যাত এ গাছের কোন তথ্য কোথা নেই।

কর্তৃপক্ষের উচিত প্রাচীন বৃক্ষটিকে সেবা যত্ন করে আরো দীর্ঘজীবী করা। পাশাপাশি প্রতিটি ঝুরির সাথে বন্ধন তৈরী করে গাছটা এক করে দিতে হবে। পুরো গাছতলা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রাখাও জরুরী। মল্লিকপুরবাসী গাছের জন্যে দেন দরবার করে এখন বোকা হয়ে বসে আছে। সবচেয়ে বড় বটগাছটি অযন্ত অবহেলায় মৃত্যুর দিকে এগুচ্ছে।

ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ থানার সুইতলা মল্লিকপুর গ্রামের প্রাচীন এ বৃক্ষের বেশ কিছু ঝুরি ডালপালা ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকগুলো ঝুরির শেকড় উপড়ে যাওয়ার ঝুরিগুলো আর হাতে হাত ধরে নেই। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে গাছটির আয়তন দিন দিন কমে যাচ্ছে। নজর দেবার কেউ নাই।

সরকার গাছের প্রহরীর জন্য ভবন নির্মাণ করেছেন। কিন্তু লোক নাই। ঐতিহাসিক বটগাছের কোনো তথ্য সংশ্লিষ্ট অফিসে নেই। সাধারণ জ্ঞানের বইয়েও বটগাছ সম্পর্কে অজ্ঞাত কারণে কিছুই লেখা হয় নি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.