আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি ও মৃদুলা

আমি শুধু ঐ পথের পথিক ছিলাম

নষ্ট,পুরা নষ্ট। নষ্ট না ক নষ্টা। এই সব মাইয়াগো লিগাই মাইয়া জাতটারে আইজকালকার পোলারা ডরায়। ....... মন্তব্য গুলা আশেপাশের কারো না,আমার নিজের। দোতালার বারান্দা থেকে নিচে আমগাছতলায় ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মৃদুলাকে দেখে মনে মনে মন্তব্য গুলা করলাম।

মৃদুলা দাঁড়িয়ে আছে ক্যান্টিনের দিকে মুখ করে,হাতে বিভিন্ন সাইজের কয়েকটা তুলি। ক্যান্টিনের সামনে সিনিয়র,জুনিয়র মিলায় ছেলেদের বড় একটা ভিড়। সেদিকে তাকিয়ে মুখটা ভার করে,শরীরটাকে বিশেষকায়দায় কয়েকটা বাঁক দিয়ে আমগাছটার সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে রইল মৃদুলা। অবস্থাটা দেখ নটীর! বেশরমের মত এহনও সবার সামনে খাড়ায়া রইছে। এই সব মাইয়া গুলি বুঝি পয়দা হয়ই শরম-লজ্জ্বা ছাড়া! মনে মনে মন্তব্যগুলি ওর দিকে ছুড়ে দিয়ে আমি মেয়েদের কমনরুমে ঢুকলাম।

এখানেও আজকে আলোচনার গরম বিষয় মৃদুলা। নিজের কোন ক্লাসমেটকে না পেয়ে হাত-মুখ ধুয়ে নিচে নেমে এলাম। বাঁশঝাড়ের সামনে একটা ছোট জটলা। আমাকে দেখেই সেখান থেকে ছুটে এল দীপ। -শুনছস,শুনছস,কি হইছে? এইডা তো ঠিক না,আমরা কি ভেড়া নাকি যে আমাগো ক্লাসের মাইয়াগো নিয়া সিনিয়ররা ফাইজলামি করব আর আমরা বইয়া বইয়া আঙ্গুল চুষুম? আমি বললাম- ক্যান, কী হইছে? দীপ বলল- জুয়েল ভাইয়ের বেশী বাড় বাড়ছে।

ক্যাম্পাসে ঘোষনা করছে, মৃদুলার লগে কি কি হইছে তার প্রদর্শণী হইব। চিঠি-পত্র,ভিডিও চিত্র আরও কি কি বলে থাকব। এতখন যা করছে কিছু নাই কিন্তু এহন তো আর চুপ থাকন যায় না। আমি বললাম- কছ কি! এত বড় সাহস? জুয়েল ভাই পাইছে কী? তরা এহনো বইয়া রইছস ক্যান? দীপ বলল- বিকাল ৪'০০টায় প্রদর্শণী,আমরা ৩'০০টা থেইকা স্টেপ নিমু। ভাইয়ের লগে(পলিটিক্যাল ভাই,নেতা) কথা হইছে।

তুই আইজ বাসায় যাইস না,হলে থাক। আমি বললাম- পাগল! আমি আইজ কোথাও যামু না,ক্যাম্পাসেই আছি,তরা ডাক দিলেই আমু। দীপ বিদায় নিলে ক্যান্টিনের দিকে আগালাম। সেখানে জুয়েল ভাইয়ের তরফ থেকে ফ্রি চা-বিস্কুট খাওয়ানো হচ্ছে। আমায় দেখে নিপু দোঁড়ে এল।

-আয়,আয়,চা খা। আজ চা-বিস্কুট ফ্রি। তারপর নিপু গলা খাদে নামিয়ে বলল- মৃদুলা মেয়েটা যে কী! খবর পেলাম জুয়েল ভাই-ই ওর প্রথম শিকার নয়,এর আগেও আরো তিন জনের সাথে ওমন করেছে। আমি মুখটা খানিক উদাসীন করে জানার আগ্রহ নেই এমন ভাব করে বললাম- কেমন? নিপু গলা আরও নামিয়ে বলল- কেমন আবার! কিছু বাকি আছে নাকি? সবই করেছে। শোনা কথা না,প্রমান ও আছে।

একজনের কাছ থেকে জোগার করেছি। তুই চাইলে তোকে দেখাব। আর জানিস তো আজ প্রদর্শণী আছে বিকালে। থাকিস। আমি বললাম- আচ্ছা,থাকব।

ফ্রি হওয়ায় আমি আনন্দে তিন কাপ চা খেলাম। তারপর পিছনের গেট দিয়ে দ্রুত বের হয়ে এলাম। তাড়াতাড়ি রিকশা নিয়ে বাস স্টপেজে এসে বাসের টিকেট কাটলাম। তারপর প্রতিদিনের মত ঝুলে ঝুলে বাসায় ফিরলাম।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।