আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আমি এবং ভ্যাট সমাচার

আমি প্রকৃতির চির অনাসৃষ্টি

টিউশন ফি'র উপর ৪.৫% ভ্যাট নিয়ে বিস্তর কথাবার্তার আড়ম্ভ দেখে আর না লিখে পারলাম না। আমার জানা মতে এই ভ্যাট পরবর্তীতে বসানো হয়েছে(যা হবে চাপানো) বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের উপর। আমার বলবার জায়গাটা হল শিক্ষা যেখানে একটা ব্যবসায়িক পন্যে পরিনত হয়েছে সেখানে ভ্যাট কে অযৌক্তিক আমি মনে করি না। আমার দেখবার জায়গা হল এই সকল প্রতিষ্ঠানের ভোক্তা কারা। এরা নিশ্চয়ই নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত নয়।

যদি তাই হত তবে পাবলিক কিংবা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার নিশ্চয় বন্ধ ছিল না। আর যেখানে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুলভ ডিগ্রীর কল্যানে আমরা প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার উপহার পাচ্ছি। আজকাল এই বিশ্ববিদ্যালয় গুলো প্রকট এক ধরনের শ্রেনী ব্যবস্থা কায়েম করছে। আমাদের স্কুলের ইউনিফর্ম পরিধান আমাদের কি শেখায়। আমরা শিক্ষার ক্ষেত্রে সবাই এক।

আমাদের ভিন্ন কোন জাত নেই, কোন ধর্ম নেই, নেই কোন অর্থনৈতিক ভেদাভেদ। কিন্তু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যানে আমরা আজ নতুন এক ধরনের স্ট্যাটাস ধারন করছি। একটা ছেলে যখন বলছে সে উত্তর দক্ষিন কিংবা পুব পশ্চিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে তখন তার যে সামাজিক অবস্থান তার সাথে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একজনের অবস্থান অতি নগন্য। আবার অভিভাবকগনও তাদের সন্ত্বানকে অমুক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরন করে একভাবে প্রীত অনুভব করছে। আর কাউকে বলবার সময় যখন বলছে আমার সন্ত্বান অমুক বিশ্ববিদ্যালয়ে তমুক বিষয়ে পড়ছে তখন সেখানে সন্ত্বানের মেধার তুলনায় আর্থিক বিষয়টির প্রাধান্য থাকে।

সত্যিই কি বিচিত্র। এই যে সামাজিক অবস্থানের দ্বন্দ্ব এটা শুধু সরকারী-বেসরকারী নয় বরং বেসরকারী-বেসরকারী ক্ষেত্রে ও পরিলক্ষীত হয়। ভাবখানা এমন যে তোমার যে ব্রান্ডের গাড়ি তার থেকে আমার ব্রান্ড অনেক ভাল। কিন্তু শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিযোগীতা হওয়া উচিত ছিল মেধায়। যেটি কিনা আজ অর্থের মাপকাঠিতে পরিমাপ যোগ্য।

অর্থ না থাকাটা নিশ্চয়ই অপরাধ নয়। এমন অনেক অভিযোগ আছে যারা H.S.C. কোন রকম ইংলিশ এ টেনে টুনে পাস করেছে তারা সেখানে ইংরেজী সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনা করছে। আর এ্ক টি লক্ষনীয় বিষয় হল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় যে শিক্ষা প্রদান করে বা তাদের যে সিস্টেম সেটা পুরোপুরি বাজার নির্ভর। বি বি এ,কম্পিউটার শিক্ষা ছারা আর কোন পড়ানোর নেই। আর আমি যেই মাপের ছাত্রই হই না কেনো সেটা নির্ভর করছে আমার টাকা এবং ইচ্ছার উপর।

এরকম এক টা বিষয় পড়বার উপযুক্ত আমি আদৌ কিনা সেটা দেখবার কোন প্রয়োজন নাই। এরপর যদি আসি রেজাল্টের কথায় তয় আর আমারে পায় কেডা!!C.G.P.A. 4 এ পূরাই 4। অন্যান্য যে সকল জ্ঞানকান্ড রয়েছে সেগুলোকে যেভাবে গুরুত্বহীন করা হচ্ছে আর তার সাথে চাকুরির বাজারে ভালো প্রতিষ্ঠানের কম নম্বর প্রাপ্ত(মেধাবীদের)করা হচ্ছে গরীবের ও গরীব। আমার উপরোক্ত বিষয় গুলোর সাপেক্ষে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যাবস্থাকে আমরা নিঃসন্দেহে পন্য হিসেবে গন্য করতে পারি। আর ভ্যাটের বিষয়টি অবশ্যই যৌক্তিক।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.